ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিশুটির কি দোষ

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ২৬ অক্টোবর ২০১৪

শিশুটির কি দোষ

সমাজে ধর্ষণের মতো ঘটনা এখনও ঘটছে। অনেক ঘটনা প্রকাশ পায় আবার অনেক ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়। গ্রামাঞ্চলে যে সব ধর্ষণের ঘটনা ঘটে তা অনেক ক্ষেত্রে গ্রাম্য সালিশীর মাধ্যমে সুরাহা করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা গেছে, গ্রাম্য সালিশী হলে সেখানে ধর্ষণের শিকার নারী চরমভাবে নিগৃহীত হয়। অতীতে নারীকে বিচারের নামে একঘরে করা হয়েছে। যখন এই ধরনের ঘটনা চলছিল তারই এক পর্যায়ে আইন করে ফতোয়া নিষিদ্ধ করা হয়। এখনও গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে নারীদের বঞ্চিত করার ঘটনা ঘটছে। ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ। আর শিশু ধর্ষণ আরও জঘণ্যতম অপরাধ। অতি সম্প্রতি এই ধরনের অপরাধের কথাই শোনা গেছে। প্রকাশিত এক সংবাদে জানা গেছে, ৪র্থ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে এক দূর্বৃত্ত। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর এক গ্রামে। ঘটনাটির ব্যাপারে একটি সালিশ বসে। সালিশে ধর্ষিতা শিশুটিকে ৫০টি বেত্রাঘাত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেটা কার্যকর করাও হয়। যেখানে উচিত অপরাধীকে থানায় সোপর্দ করা সেখানে কেন, কিভাবে এ নিষ্ঠুরতার শিকার হতে হল শিশুটিকে সেটা বোধগম্য নয়। নারীদের ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। অতীতে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে, এখনও ঘটছে। দেশে আইন আছে। যে কোন অপরাধের বিচারের ব্যবস্থাও রয়েছে। কিন্তু দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে নারীদের লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে করা হয়। তাতে অনেক নারীকে নিগৃহীত হতে হয়েছে। দেশের প্রচলিত আইনকে এড়িয়ে এ ধরনের সালিশ কাম্য হতে পারে না। নারী নির্যাতনের যেসব খবর মিডিয়ায় প্রচারিত বা প্রকাশিত হয় সেটাই যে প্রকৃত সংখ্যা তা মনে করা ঠিক নয়। কারণ অনেক ঘটনাই ঘটে যার খবর মিডিয়ায় আসে না। অনেক নারী নির্যাতনের কথা লোকলজ্জার কারণে প্রকাশ করেন না। যে সব ঘটনার বিষয়ে থানায় অভিযোগ আসে বা মিডিয়ার প্রতিনিধির গোচরে আসে সেগুলোর কথাই শুধু জানা যায়। দেশে সর্বক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে আসছে। শিক্ষা, ব্যবসা, চাকরি সব কিছুতেই তারা এগিয়ে আসছেন। তাদের এই এগিয়ে আসার অর্থ দেশের উন্নয়ন। কিন্তু তাদের এই এগিয়ে আসার পথে কোন কোন দুর্বৃত্ত বাধা সৃষ্টি করে আসছে। এ বাঁধাগুলোকে দূর করা, নারীদের এগিয়ে যাওয়ার পথকে নিষ্কন্টক করা দেশের স্বার্থেই প্রয়োজন। নারীদের প্রতি যে কোন নির্যাতনের ঘটনা তা ধর্ষণ হোক বা অন্য যা কিছুই হোক প্রতিটি ঘটনার আইনানুগ বিচার করা প্রয়োজন। পটুয়াখালীর ঘটনার বিষয়েও একই কথা প্রযোজ্য । আইন-শৃংখলা কর্তৃপক্ষকে সর্বক্ষেত্রে দাঁড়াতে হবে নির্যাতিত নারীর পাশে।
×