ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের লক্ষ্য নিদেনপক্ষে ৪০০

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২৬ অক্টোবর ২০১৪

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের লক্ষ্য নিদেনপক্ষে ৪০০

প্রত্যাশা সাকিব আল হাসানের স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জিম্বাবুইয়ের ইনিংস দেখেই বোঝা যাচ্ছে ম্যাচটি বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। তবে এর জন্য প্রয়োজন এখন ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নিয়ে খেলা। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট তুলে নেয়া সাকিব আল হাসানই বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের ছক কষে দিচ্ছেন। যে ছকে প্রথম ইনিংসে ৩৫০-৪০০ রানের হিসেবই আছে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ এ রানই করতে চায়। তাহলেই যে প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুইয়ের করা ২৪০ রানের চেয়ে অনেক এগিয়ে যাওয়া যাবে। প্রথম টেস্টে জেতার সম্ভাবনাও খুব ভালভাবেই থাকবে বাংলাদেশের। ক্যারিয়ারে ১২ বার ৫ উইকেট বা তারবেশি উইকেট নিয়েছেন সাকিব। শনিবার প্রথম দিনেই ৫৯ রানে ৬ উইকেট তুলে নিয়েছেন। দিন শেষে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে এখন ব্যাটসম্যানদেরই যা করার করতে হবে এমন ইঙ্গিতই দিলেন। জানালেন, ‘যদি ৪০০ রান করতে পারি তাহলে তো খুবই ভাল। পিচটা যে ব্যাটিং উইকেট তা না। আমার কাছে মনে হয় ৩৫০-৪০০ করার মতো সামর্থ্য আমাদের আছে। ৬০০ রান করারও সামর্থ্য আছে। তবে আমার মনে হয় ৩৫০-৪০০ করতে পারলে আমাদের দ্বিতীয় ইনিংসের জন্য ভাল হবে।’ সেই ভালটা জয়ের দিকেই ইঙ্গিত। জিম্বাবুইয়ে তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে যেমন যবুথবু অবস্থায় ছিল। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেও সেই একই রূপ তাদের। প্রথম ইনিংসে ২৪০ রানের বেশি করতে পারেনি। শুধু সিকান্দার রাজা অর্ধশতক করতে পেরেছেন। সিকান্দারের ৫১ রানই জিম্বাবুইয়ের ইনিংসের সবচেয়ে বড় স্কোর। যে ভুসিমুজি সিবান্দা, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, ব্রেন্ডন টেইলর, এলটন চিগুম্বুরা, ক্রেইগ এরভিনদের নিয়ে ভাবনার উদয় হয়েছে, কেউই সারা জাগানোর মতো খেলা উপস্থাপন করতে পারেননি। স্পিন ভীতি যে আগে থেকেই ছিল। সেই স্পিনেই প্রথম ইনিংসে মাত খেয়েছে জিম্বাবুইয়ে। তবে বাংলাদেশও যে মাত খাবে না তা বলা মুশকিল। বল হঠাৎ হঠাৎ এতটা বাউন্স হচ্ছে যা অবাক করার মতোই। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এমনটি কখনই হয়নি। তামিম ইকবালই যে আউট হলেন এমন হঠাৎ আসা বাউন্সারেই। পেসার তিনাশে পানিয়াঙ্গারা বারবারই চেষ্টা করেছেন বাউন্সার দিতে। কিন্তু দলীয় ১০ রানে গিয়ে হঠাৎ করে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি বাউন্স হয়ে গেল। আর তাতেই মারবেন না ছাড়বেন-এ দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে তামিম (৫) আউট হয়ে গেলেন। আর স্পিন ঘূর্ণি তো শুরু থেকেই আছে। আজ দ্বিতীয় দিনে কী হয় কে জানে। তবে এমন উইকেটেও যে শামসুর রহমান শুভ ও মুমিনুল হক মিলে জিম্বাবুইয়ে বোলারদের শাসন করেছেন, তাতেই আশাবাদী হয়ে উঠেছেন সাকিব। তাই বলেছেনও, ‘দেশের মাটিতে কখনই এত বাউন্স করে নাই। কিছু বল যেভাবে লাফ দিচ্ছে তা কখনই হয় নাই। ওদের পেস বোলাররা কিন্তু ভাল বল করছে। ৮-১০ ওভার যতটুকু বল করেছে ভাল করেছে। আমাদের ব্যাটসম্যানরাও ভাল করেছে। তামিমেরটা খুবই ভাল বল ছিল। যে দুইজন আছে তারা ভাল এ্যাপ্লাই করেছে। যেহেতু এ কন্ডিশনে খেলে আমরা অভ্যস্ত। আমাদের অভিজ্ঞতাও বেশি। আমরা স্পিন ভাল খেলি। স্পিন একটা ফ্যাক্টর হতে পারে। আমরা যদি ওদের চেয়ে ভাল এ্যাপ্লাই করতে পারি আমার মনে হয় ভাল একটা অবস্থানে যেতে পারব।’ দিন শেষে বাংলাদেশ কতটা ভাল করল, এর চাইতেও বেশি সাকিবকে নিয়েই মাতামাতি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরিম-লে দেশের হয়ে সাকিবের দাপটই বেশি। এমন অলরাউন্ডার নিষিদ্ধ থাকার পর আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেই নিজের জাত চিনিয়ে দিলেন। মাতামাতি হওয়ারই কথা। তবে সাকিব এগুলো আমলে নিচ্ছেন না। তার লক্ষ্যের কথা জানতে চাইতেই বলেছেন, ‘তেমন কিছু না। টিমের জন্য কন্ট্রিবিউট করা। যেটা করতে পেরেছি তাতে খুশি।’ নিজেকে ভাগ্যবানও ভাবছেন সাকিব, ‘আমি লাকি মনে হয়। দিন শেষে পারফর্মেন্সটাই বড়। তাই করছি। যদি সাপোর্টারদের জন্য খেলতে পারি আমার কাছে মনে হয় এটাই হবে সবচেয়ে বড় পাওয়া।’ তবে বাংলাদেশ যে গেমপ্ল্যান করে খেলতে নেমেছে প্রথম দিনে সফল হয়েছে। এতে সন্তুষ্ট সবাই। সাকিব বললেন, ‘গেমপ্ল্যান ছিল বেসিক যেটা করে সেটা। যেহেতু অলআউট হয়ে গেছে ঠিক আছে। তবে আমাদের দ্রুত উইকেট নেয়ার একটা পরিকল্পনা ছিল। সবাই এ নিয়ে আলোচনাও করেছি। সেটা আমরা করতে পারছি। দ্রুতই ২টা উইকেট নিয়ে নিয়েছি।’ এখন টার্গেট উইকেট আঁকড়ে থাকা, যতক্ষণ সম্ভব ব্যাটিং করা। সাকিব তাই বুঝিয়ে দিলেন, ‘টিমে তিন-চারজন আক্রমণাত্মক বোলার থাকলে, উইকেট টেকার বোলার থাকলে সবার জন্য উপকার হয়। পুরো টিমের জন্যই ভাল। এখন টার্গেট ব্যাটিং করা যতক্ষণ সম্ভব।’ এখন যতক্ষণ বলতে কম করে হলেও ৩৫০ রান চাই। ৪০০ রান হলে তো ভালই।
×