ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জামায়াতী ব্যবসায়ীরা হুজিকে মাঠে নামিয়েছে

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ৪ নভেম্বর ২০১৪

জামায়াতী ব্যবসায়ীরা হুজিকে মাঠে নামিয়েছে

আটক জঙ্গীদের জিজ্ঞাসাবাদ শংকর কুমার দে ॥ জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীর যেসব ব্যবসায়ীর অর্থায়নে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করা হয়েছে তারাই নতুন করে মাঠে নামিয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাত-উল-জিহাদ (হুজি) কে। এ ধরনের এক ডজন ব্যবসায়ী ও অর্থায়নকারীকে চিহ্নিত করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের প্রধান টার্গেট হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো একদিকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করা যাবে অন্যদিকে জামায়াত মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে। হুজির গ্রেফতারকৃত ৭ সদস্যকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই ধরনের তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রিমান্ডে আনা হুজির সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তালিকা অনুযায়ী খুব শীঘ্রই আরও বেশ কয়েক হুজির জঙ্গী সদস্য গ্রেফতার হতে পারে। ডিবি সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বড় ধরনের ভয়াবহ নাশকতার নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থ ঢালা হচ্ছে। জামায়াত মতাদর্শী ব্যবসায়ীরা যুদ্ধাপরাধীর বিচারকে বাধাগ্রস্ত করতে না পেরে এখন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনগুলোর জঙ্গী সদস্যদের মাঠে নামিয়েছে। হত্যা, নাশকতা, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশে তারা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক হরতাল দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপের কারণে একদিকে তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে অন্যদিকে জঙ্গীরা ধরা পড়ছে। গত শনিবার রাজধানীর পোস্তগোলা ব্রিজ এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোঃ আব্দুল্লাহ, মোঃ রিদওয়ান ও সফিকুল ইসলাম ওরফে রিপনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তারা উন্নত প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য পাকিস্তান যাওয়ার ভিসা সংগ্রহ করেছিল। শুধু সফিকুল ইসলাম ওরফে রিপনের ভিসা হতে দেরি হচ্ছিল। ৩ জনকে ২ দিনের রিমান্ডে : সোমবার ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে হাজির করে হুজির ৩ জঙ্গী সদস্য মোঃ আব্দুল্লাহ, মোঃ রিদওয়ান ও সফিকুল ইসলাম ওরফে রিপনকে ২ দিনের করে রিমান্ডে আনা হয়েছে। তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের জন্য রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। আদালত তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করার পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মানি ইজ নো প্রবলেম : তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার একজন উর্ধতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃত হুজির সদস্যরা জানিয়েছেন, তাদের (হুজির জঙ্গীদের) অর্থায়নকারী জামায়াতের মতাদর্শী ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ‘মানি ইজ নো প্রবলেম’ অর্থাৎ টাকার কোন অভাব হবে না। সময় বয়ে যাচ্ছে। দ্রুত নীল নকশা বাস্তবায়ন করার পথে অগ্রসর হও। পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হতেই গোপন সূত্রের মাধ্যমে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে গ্রেফতার হয়ে যায় হুজির অপর চার জঙ্গী। যা বলেছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা : ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ডিসি জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেছেন, গ্রেফতারকৃত হুজির প্রথমে চার সদস্য ও পরে গ্রেফতারকৃত তিন সদস্যকে পৃথক ও মুখোমুখি দু’ভাবেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনসহ জঙ্গীদের নিয়ে বাংলাদেশ জিহাদী দল গঠনের প্রক্রিয়া করা হয়েছিল বলে জানানো তথ্যের ভিত্তিতে তাদের সহযোগীদের নাম পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের হুজি ও জেএমবির জঙ্গীদের সঙ্গে ভারতের জেএমবির জঙ্গীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
×