ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পুঁজিবাজারে সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৭ নভেম্বর ২০১৪

পুঁজিবাজারে সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ হরতালের শেষ দিন বৃহস্পতিবারে দেশের উভয় পুঁজিবাজারে সূচকের কিছুটা মিশ্রাবস্থা দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে সার্বিক সূচকের কিছুটা চাঙাভাব থাকলেও আগের তুলনায় বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমেছে। বেশিরভাগ কোম্পানির দর বাড়ার কারণে প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচকটি বাড়লেও অন্যান্য সূচক কিছুটা কমেছে। তবে দিনটিতে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোর দর বেড়েছে প্রায় শতভাগ। দিনটিতে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দর বেড়েছে বেশি। যার কারণে সূচকে তা বড় কোন প্রভাব রাখতে পারেনি। ঢাকার মতো অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও সূচকের মিশ্রাবস্থা দেখা গেছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ প্রদানের সুপারিশ এবং আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ আগের তুলনায় কিছুটা কমে যাওয়ার কারণে আগের তুলনায় শেয়ারের ক্রয়াদেশ বেড়েছে। কিন্তু হরতালের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচীর কারণে বিনিয়োগকারীদের মাঝে অস্থিরতা বেড়েছে। ফলে দরবৃদ্ধির পাশাপাশি মূল্য সংশোধনও ঘটছে। তবে বিনিয়োগকারীদের ভাল মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দিনশেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক আগের দিনের চেয়ে ৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ২৫ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩০৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৬০টির, কমেছে ১০৮টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টি কোম্পানির শেয়ার দর। লেনদেন হয়েছে ৬২০ কোটি ১৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এর আগে বুধবার ডিএসইর সার্বিক সূচকের অবস্থান ছিল ৫ হাজার ১৭ পয়েন্টে। ওই দিন লেনদেন হয় ৭৪৩ কোটি ৮০ লাখ ৭৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সে হিসেবে বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১২৩ কোটি ৬২ লাখ ৯২ হাজার টাকা বা ১৬.৬২ শতাংশ। বৃহস্পতিবার ডিএসইর লেনদেনের সেরা ২০ তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলোর মোট ২৯০ কোটি ৭১ লাখ ১৩ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪৬.৮৭ শতাংশ। এ দিন ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের। দিনভর এ কোম্পানির ৫৯ লাখ ২০ হাজার শেয়ার ৪৫ কোটি ৯২ লাখ ৫৩ হাজার ২০০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। এছাড়া ডেসকোর ২৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, গ্রামীণফোনের ১৭ কোটি ৫২ লাখ, খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের ১৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা, কেয়া কসমেটিকসের ১৬ কোটি ৪৮ লাখ, খুলনা পাওয়ার কোম্পানির ১৫ কোটি ৬৪ লাখ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের ১৫ কোটি ৩৬ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ১৪ কোটি ৮১ লাখ, সাইফ পাওয়ারটেকের ১৩ কোটি ৮০ লাখ এবং সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের ১২ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, পিএলএফএসএল, ইসলামিক ফাইন্যান্স, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, আইএলএফএসএল, ফার্স্ট লিজ ফাইন্যান্স ইন্টারন্যাশনাল, বিআইএফসি, শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড ও কাসেম ড্রাইসেল এবং প্রাইম ফাইন্যান্স। দর হারানোয় সেরা কোম্পানিগুলো হলো : দুলামিয়া কটন, আলহাজ টেক্সটাইল, অলটেক্স, ইমাম বাটন, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড, তুং হাই নিটিং, জেমিনি সী ফুড, সমাতা লেদার এবং আইসিবি ১ম এনআরবি। দিনশেষে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৯ হাজার ৪৪২ পয়েন্টে। সেখানে দিনভর লেনদেন হওয়া ২২৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৭টির, কমেছে ৯৩টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টি কোম্পানির। সিএসইতে দিনটিতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের দিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৫৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সেই হিসেবে বৃহস্পতিবার সিএসইতে লেনদেন কমেছে ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা। সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ওয়েস্টার্ন মেরিক শিপইয়ার্ড, খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড, বেক্সিমকো, সামিট পোর্ট এলায়েন্স লিমিটেড, সুহৃদ ইন্ড্রাস্টিজ, সাইফ পাওয়ার, ইউনাইটেড এয়ার, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এবং আরকে সিরামিক।
×