ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া হাসপাতাল ॥ সমস্যা জর্জরিত

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ৯ নভেম্বর ২০১৪

সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া হাসপাতাল ॥ সমস্যা জর্জরিত

স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে রয়েছে বিশ্বের একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতাল। হাসপাতালে গলগ- (ঘ্যাগ) এবং ফাইলেরিয়া (গোদ) রোগের চিকিৎসা সেবা পেতে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে প্রতিদিন রোগীরা এসে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন। ফলে হাসপাতালটি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে এসব রোগের চিকিৎসায় সাফল্য পেলেও বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। ২০০২ সালে এই হাসপাতালটি গড়ে ওঠে সৈয়দপুর উপজেলা শহরের উপকণ্ঠে ধলাগাছ এলাকায়। স্থানীয় সমাজসেবক কবির উদ্দিন সর্দারের দান করা জমিতে সরকারী ও বেসরকারী সহায়তায় হাসপাতালটি গড়ে ওঠে। রোগীদের সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে রয়েছে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি। জটিল রোগীদের জন্য রয়েছে ছয়টি বেড। আছে চারটি ভিআইপি কেবিনও। জরুরী রোগীদের পরিবহনের জন্য হাসপাতালের নিজস্ব একটি এ্যাম্বুলেন্সও আছে। আধুনিক অবকাঠামো, পরিবেশ ও যন্ত্রপাতিও রয়েছে। তবে এত সাফল্যের পরও বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, ওষুধ ও অর্থ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গোদ রোগী মনু মিয়া (১৮) এসেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বড়ভেউলা গ্রাম থেকে। তিনি গত ২২ অক্টোবর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মনু মিয়া বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে গোদ রোগে ভুগছেন। এতে তার দুই পা ফোলা ছিল। হাঁটাচলা করতে পারতেন না। বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়ে ব্যর্থ হয়ে তিনি লোকমুখে খবর পেয়ে সৈয়দপুরের ফাইলেরিয়া হাসপাতালে এসেছেন। সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে গত কয়েক দিনে নিজেকে অনেকটা সুস্থ মনে করছেন। দুই পায়ের ফোলাও অনেকটা কমে গেছে। এখন তিনি হাঁটাচলা করতে পারছেন। হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে বলেছেন দুই মাসে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি। গত ১ নবেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন রাজশাহী সাধুর মোড় এলাকার ইসরাত জাহান। তিনিও এসেছেন ফাইলেরিয়া রোগের চিকিৎসা নিতে। এ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। রোগ সারাতে তিনি বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়ে ব্যর্থ হয়ে এখানে চিকিৎসা নিতে এসে সুফল পাচ্ছেন। তিনি আশা করেন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে স্বামী তাকে পুনরায় গ্রহণ করবে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সুরত আলী বাবু জানান, আর্থিক সংকট, জনবল ও ওষুধ সংকটের কারণে রোগীদের চিকিৎসা মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে। আর্থিক সংকটে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স, আয়া ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ঠিকভাবে পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য তিনি সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন।
×