ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সুপ্রীমকোর্টের দিকে তাকিয়ে আছে সরকার ॥ আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:১০, ১২ নভেম্বর ২০১৪

সুপ্রীমকোর্টের দিকে তাকিয়ে আছে সরকার ॥ আইনমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের রায় কার্যকরের বিষয়ে সরকার সুপ্রীমকোর্টের দিকে তাকিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রী। এর আগে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও স্বরাষ্ট্র সচিব মোজাম্মেল হকের সঙ্গে অনির্ধারিত এক বৈঠক করেন আনিসুল হক। বৈঠকে অতিরিক্ত আইজিপি একেএম শহিদুল হকও উপস্থিত ছিলেন। তবে অনির্ধারিত ওই বৈঠকে কামারুজ্জামানের দ-াদেশের বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি বলে দাবি করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, তাঁদের বৈঠকটি ছিল দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে। এছাড়া বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলে থাকা গুরুত্বপূর্ণ মামলা নিষ্পত্তি নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানান মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের হয়ত কৌতূহল কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের বিষয়ে। তবে কামারুজ্জামানের বিষয়ে বৈঠকে কোন আলোচনা হয়নি।’ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ আপডেট আসেনি। এ বিষয়ে সুপ্রীমকোর্টের দিকে তাকিয়ে আছি।’ একাত্তরে ময়মনসিংহ অঞ্চলের আলবদর প্রধান কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধে গত বছরের ৯ মে মৃত্যুদ- দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। জামায়াতে ইসলামীর এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করলে গত ৩ নবেম্বর আপীল বিভাগের চূড়ান্ত রায়েও তার মৃত্যুদ- বহাল থাকে। আপীল বিভাগের রায় পেলেই ট্রাইব্যুনাল ফাঁসির আসামি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবে বলে রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে। এরপর তা কার্যকর করবে সরকার। এক্ষেত্রে সরকার চাইলে কারাবিধিও (জেল কোড) অনুসরণ করতে পারে। কারাবিধি অনুযায়ী, প্রত্যেক মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগ পাবেন। কারাধ্যক্ষ আসামিকে জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়ে তার মত চাইবেন। সাত দিনের মধ্যে তাকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে ওই বৈঠক হয়। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল, কিছু মামলা-মোকদ্দমা তড়িৎ শেষ করা যায় কিনা, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, যে মামলাগুলো মনিটরিং সেলে রয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ প্রসঙ্গত, গত ২ নবেম্বর সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ কামারুজ্জামানকে অভিযুক্ত করে ফাঁসির দ-াদেশ প্রদান করে। এর আগে গত বছরের ৯ মে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদ-ের রায় দেয় মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। ট্রাইব্যুনালের এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৬ জুন আপীল করেন কামারুজ্জামান। কামারুজ্জামানের রায় কার্যকর নিয়ে সরকার ও আসামিপক্ষের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। আইনমন্ত্রী ও এ্যাটর্নি জেনারেল প্রথমে যে কোন সময় কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর হবে বলে জানালেও পরে তাঁরা জানান, আপীল বিভাগের রায়ের কপি ট্রাইব্যুনালে গেলে তাঁরা মৃত্যু পরোয়ানা পাঠাবেন কারা কর্তৃপক্ষের কাছে।
×