ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জিম্বাবুইয়েকে এবার দ্রুত আউট করার পালা

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৪ নভেম্বর ২০১৪

জিম্বাবুইয়েকে এবার দ্রুত আউট করার পালা

মিথুন আশরাফ, চট্টগ্রাম থেকে ॥ কী হাসিমাখা মুখ পেসার রুবেল হোসেনের। দিন শেষে সংবাদ সম্মেলন কক্ষে প্রবেশ করতেই ‘লাজুক লাজুক’ ভাব। বোলার হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে যে একদিনের জন্য হলেও ব্যাটসম্যান হয়ে গেলেন। ১০ নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে করেছেন অপরাজিত ৪৬ রান। তাই হাসি যেন রুবেলের থামে না। তার এই হাসি যেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের হাসিরও প্রতীক হয়ে ধরা দিচ্ছে। তার এই ইনিংসেই যে শেষপর্যন্ত প্রথম ৫০৩ রানের বড় স্কোরই গড়তে পেরেছে বাংলাদেশ। আর তাই তো দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুইয়ে ১ উইকেটে ১১৩ রান করার পরও বাংলাদেশ ৩৯০ রানে এগিয়ে রয়েছে। এখনও জিম্বাবুইয়ের ফলোঅন এড়াতেই লাগবে ১৯১ রান। বাংলাদেশ কী পারবে জিম্বাবুইয়েকে ফলোঅনে ফেলতে? রুবেল হোসেন যা বললেন তাতে বোঝা গেল জিম্বাবুইয়েকে ফলোঅনে ফেলা কঠিন। উইকেট যে ব্যাটিং নির্ভর। এরপরও জিম্বাবুইয়েকে দ্রুতই আটকে রাখার লক্ষ্য ঠিকই সেট করে ফেলেছে বাংলাদেশ। রুবেল তাই বোঝাতে চাইলেন, ‘আসলে দ্বিতীয় দিন শেষে আমরা খুব ভাল পজিশনেই আছি। আমাদের ভাল একটা স্কোর হয়েছে। এই উইকেটে শুরুতে একটু রান হবেই। তৃতীয় দিন সকাল সকাল যদি আমরা দ্রুত উইকেট নিতে পারি, পেস বোলার আর স্পিন বোলার যারাই হোক, দ্রুত উইকেট নিতে হবে। আসল কথা হলো, আমাদের ধৈর্য ধরে বল করে যেতে হবে। এই উইকেটে আসলে উইকেট পাওয়া খুব কঠিন।’ তা বোঝাই যাচ্ছে। প্রথম দিন তামিম ও ইমরুলের জোড়া শতকে বাংলাদেশ ২ উইকেটে ৩০৩ রান করেছিল। দ্বিতীয় দিন যে চা বিরতি পর্যন্ত খেলার স্বাদ ছিল, তা পূরণ হয়েছে। আরও ২০০ রান যুক্ত হয়েছে স্কোরবোর্ডে। সাকিব আবারও ব্যাটিংয়ে দ্যুতি ছড়িয়েছেন। করেছেন ৭১ রান। কিন্তু এই রানও একটা সময় দলকে ৫০০ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করার নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। শেষে ৪৫২ রানে ৯ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর যে রুবেলের ধুন্ধুমার ব্যাটিং শুরু হলো, টেস্ট ক্যারিয়ারের ২২ ম্যাচে এসে প্রথম ছক্কা হাঁকালেন। দেখতে দেখতে চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে দিলেন। দ্রুতই বাংলাদেশও জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে যে এর আগে সর্বোচ্চ ৪৮৮ রান করেছিল, সেই রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলে। একটা সময় গিয়ে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে গিয়ে সর্বোচ্চ স্কোরের রেকর্ডও গড়ে ফেলে। যদি ব্যাটিং উইকেট নাই থাকত, ব্যাটসম্যানকে আউট করা কঠিনই না হতো; তাহলে রুবেল ৪৪ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় এমন ইনিংস খেলতে পারতেন না, এটাই স্বাভাবিক। ব্যাটসম্যানদের যে আউট করা কঠিন, তা জিম্বাবুইয়ের ইনিংসের দিকে তাকালেও বোঝা যায়। চা বিরতির পর জিম্বাবুইয়ে ২৬ ওভার ব্যাটিং করে। উইকেট হারায় ১টি। সেই উইকেটটিও আবার নেন রুবেল। সিকান্দার রাজা (৫৬*) ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (৫১*) মিলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। দুইজন মিলে ১০৪ রানের জুটি এর মধ্যেই গড়ে ফেলেছেন। আজ ম্যাচের তৃতীয় দিনে এই দুইজন সবার আগে ফলোঅন এড়ানোর চেষ্টা করে যাবেন। এরপর বাংলাদেশের গড়া স্কোরের সঙ্গে টেক্কা দেবেন। পারবে জিম্বাবুইয়ে তা করে দেখাতে? সিকান্দার রাজা বললেন, ‘দেখে-বুঝে ব্যাট চালালে দীর্ঘক্ষণ উইকেট ধরে রাখা যায়। আর এই কাজটা করতে পারলে ব্যাটসম্যানরা রান পাবে। হতাশ হতে হবে না ব্যাটসম্যানদের। আমার সঙ্গে মাসাকাদজার জুটিটা যদি তৃতীয় দিন মধ্যাহ্ন বিরতির আগে দলকে ২৫০ রানের ঘরে নিয়ে যেতে পারি, তাহলে আমরা একটা অবস্থানে যেতে পারব।’ সেই অবস্থান ম্যাচকে কোথায় নিয়ে যায় কে জানে। তবে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ যদি আজ দ্রুত উইকেট তুলে নিতে না পারে ম্যাচ থেকে রেজাল্ট বের করা কঠিন হয়ে যাবে। আশার বিষয় একটাই, রেজাল্ট বের করার জন্য যথেষ্ট রান স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছে। এখন শুধু জিম্বাবুইয়েকে দ্রুতই বোলাররা অলআউট করে দিতে পারলেই হয়। সেই অলআউট আবার ৩৯০ রানে যে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ, তার আগে করতে পারলেই হয়।
×