ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বদেশ রায়

মিডিয়ার একটি অংশের এই অশ্বত্থামা হত...গজ’র উদ্দেশ্য কী

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ২০ নভেম্বর ২০১৪

মিডিয়ার একটি অংশের এই অশ্বত্থামা হত...গজ’র উদ্দেশ্য কী

শেখ হাসিনা অনেক সময় অনেক কঠিন কিন্তু প্রয়োজনীয় সত্য কথা বলেন। তা নিয়ে তিনি সমালোচিত হন। কিন্তু ভবিষ্যতের বাংলাদেশের ইতিহাস বলবে, তিনিই একমাত্র সত্য কথা বলেছিলেন এবং দেশের স্বার্থে বলেছিলেন। আর এ দেশে একমাত্র শেখ হাসিনাই যে সত্য কথা বলেন, ১/১১’র পর তা প্রমাণিত। এ দেশের তথাকথিত সুশীল সমাজ, অধিকাংশ মিডিয়া সবাই যখন দেশকে উল্টো দিকে টানার চেষ্টা করছিল সে সময়ে এই বাংলাদেশে একমাত্র শেখ হাসিনাই সাহস করে সত্য কথা বলেছিলেন। দ্বিতীয় তথাকথিত বীর ও ভদ্রলোকেরা ছিল না। বাংলাদেশের কালচারে বীর বলতে পুরুষদেরকে চিহ্নিত করা হয়। তাই সেদিন দেশের সাধারণ মানুষ বলতেন, বাংলাদেশে একজনই পুরুষ মানুষ, তিনি শেখ হাসিনা। বাদবাকিদের চুড়ি পরে বেড়ানো উচিত। শুধু ১/১১ নয়, দেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও শেখ হাসিনা সব সময়ই সত্য কথা বলেন। কিন্তু বাংলাদেশে ১৯৭৫-এর পনেরো আগস্টের পর থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে তথাকথিত সুশীল সমাজের একটি অবৈধ সম্পর্ক হওয়াতে এ দেশের তথাকথিত সুশীল সমাজের চরিত্র স্বাধীনতা বিরোধীদের রক্ষিতার মত হয়ে গেছে। সত্য কথা বলার জন্য ওই রক্ষিতাদের দ্বারা শেখ হাসিনা সমালোচিত হন। শেখ হাসিনা কয়েকবার বলেছেন, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে তখনই বাংলাদেশের মিডিয়া অতিরিক্ত স্বাধীনতা ভোগ করে। তাঁর এ কথা স্বাধীনতা বিরোধীদের রক্ষিতা বা তথাকথিত সুশীল সমাজের দ্বারা অনেক সমালোচিত হয়েছেন। তাঁর কথা নিয়ে টিভি পর্দাও কাঁপিয়েছেন তারা। অথচ বঙ্গবন্ধু আমলে এনায়েত্্ুল্লা খানের হলিডে, জাসদের গণকণ্ঠ, মওলানা ভাসানীর হক কথা মিডিয়ার স্বাধীনতার নামে কী অপকর্ম নেই যে করেনি? হলিডে স্বাধীন সিলেটের সপক্ষে প্রতিবেদন ছাপে। গণকণ্ঠ, হক কথা এরা বোমা বানানোর কৌশল, সশস্ত্র বিপ্লরের পথসহ দেশকে নৈরাজ্যের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য সব ধরনের প্রতিবেদন, সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয় তারা সেদিন প্রকাশ করে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যদি কোনদিন ভাল মেথোডিকাল গবেষকরা এ বিষয়ে কাজ করেন তাহলে দেশবাসী অনেক কিছু জানতে পারবে। এই গণকণ্ঠ, হক কথা, হলিডেসহ অধিকাংশ মিডিয়া সেদিন কিভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ধ্বংস করতে ও বঙ্গবন্ধু সরকারকে উৎখাত করে স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করেছিল। বাংলাদেশ সৃষ্টি হয় বাঙালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে। বাংলাদেশ টিকে থাকবেও বাঙালিত্বের ভিত্তিতে। দেশের অস্তিত্বেও স্বাধীনতার পর প্রথম আঘাত করে মিডিয়া। একটি পত্রিকায় আবুল মুনসুর আহম্মদই বার বার উপসম্পাদকীয় লিখে আমাদের আত্মপরিচয়কে বদলে দেয়ার কাজটি শুরু করেন। তিনি খুব সুচতুরভাবে প্রথমে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ না বলে, আমরা বাঙালী হিন্দু ও বাঙালী মুসলিম এই তত্ত্ব প্রচার করে একক বাঙালী জাতি-সত্তার বিরুদ্ধে ধর্মের নামে বিভেদ আনেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী কাজটি অপরাধের ভেতর পড়ে। বিচারপতি খায়রুল হক, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক প্রমুখ বিচারপতির কয়েকটি রায়ের মর্মও কিন্তু এমনটিই বলে। এমনিভাবে বঙ্গবন্ধু আমলে বাংলাদেশের একশ্রেণীর মিডিয়া গণতন্ত্রের নামে দেশকে ধ্বংস করার জন্যে ও স্বাধীনতার মূল শক্তি আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য হেন কাজ নেই করেনি। এর পরে বাংলাদেশের প্রথম সামরিক শাসক জিয়ার আমলে, পরবর্তী এরশাদ আমলে মিডিয়ার ওই সব অংশ কিভাবে সামরিক শাসকদের পা চাটে সে ইতিহাস কারও অজানা নয়। জিয়ার আমলে মিডিয়ায় সামরিক শাসকের ইচ্ছে ছাড়া কোন কিছুই প্রকাশ করা যেত না। এরশাদের আমলও তার খুব একটা বাইরে ছিল না। সেদিন হরতাল শব্দটি পর্যন্ত সংবাদপত্রে লেখা যেত না। শ্রদ্ধেয় সম্পাদক মরহুম আহমেদুল কবির প্রেসক্লাবে দাঁড়িয়ে যখন শুনলেন, হরতাল লেখা যাবে না, তিনি তাৎক্ষণিক বলে দিলেন, হরতালের জায়গায় ইনভার্টেড কমার ভেতর ‘কর্মসূচী’ লেখ, তাই জনগণ বুঝতে পারবে। এ কারণে এরশাদ আমলে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের বদলে লেখা হত, ১৫ দল ও ৭ দল সকাল-সন্ধ্যা ‘কর্মসূচী’ ঘোষণা করেছে। আর খালেদা জিয়ার আমলে সংখ্যালঘু নির্যাতনের খবরও ক’টা পত্রিকা ছাপতে পেরেছে? আবার অনেকে ইচ্ছে করে ছাপেনি, কারণ ওই সব পত্রিকার সম্পাদকরা বিএনপি জামায়াতের দ্বিতীয় বউ। আর যে দেশে মাহমুদুর রহমানের মতো একজন জঙ্গী নেতার মুক্তির দাবিতে ১৫ জন সম্পাদক বিবৃতি দেন সে দেশে বিএনপির মতো স্বাধীনতাবিরোধীদের আশ্রয়স্থলের দ্বিতীয় বউ কত সম্পাদক সেটা বোঝাই যায়। পাঠককে একটু স্মরণ করিয়ে দেয়া দরকার, এই ১৫ জন কেউ কিন্তু জনকণ্ঠ সম্পাদকের মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দেননি। অন্যদিকে মাহমুদুর রহমানের মত জঙ্গী নেতার মুক্তি চেয়ে জঙ্গীবাদের সপক্ষে কাজ করতে সাহস তাঁরা পেয়েছেন কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে। বিএনপি আমলে অনেক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, তাঁদের মৃত্যুতেও কিন্তু এই রকম বড় মাপের ১৫ সম্পাদকের কোন ভূমিকা দেখা যায়নি। কারণ, ওই যে শেখ হাসিনার কথা, আওয়ামী লীগ আমলে মিডিয়া বা মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা অতিরিক্ত স্বাধীনতা ভোগ করে। কিন্তু এই অতিরিক্ত স্বাধীনতা ভোগ করেও তারা কিন্তু কখনও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, যুদ্ধাপরাধী Ñএদের বিরুদ্ধে খুব কঠোর অবস্থান নেয় না। ইউরোপের কোন মিডিয়া যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে কোন কিছুই প্রচার করতে পারে না। তারা নৈতিকভাবে করেও না। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে মিডিয়ার একাংশ প্রতি মুহূর্তে প্রচার করে যাচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশের প্রগতিশীল সাংবাদিক নেতারাও দাবি জানাচ্ছে না, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে প্রচার করা যাবে না বলে আইন পাস করতে হবে, বা নৈতিকভাবে এটা বন্ধ করতে হবে। এগুলো বাংলাদেশের শুধু দুর্ভাগ্য নয়, বাঙালী চরিত্রের এক অদ্ভুত বৈপরীত্য। বাঙালী চরিত্রের এই অদ্ভুত বৈপরীত্য নিয়ে বাস্তবে অনেক কিছু ভাবার আছে। এ কলাম যদিও তার জন্য উপযুক্ত স্থান নয়। তবে কেন যেন মনে হয়, বাঙালীর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম দুই বাঙালী রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধুও বাঙালী চরিত্রের এই বৈপরীত্য শতভাগ বুঝতে পারেননি। রবীন্দ্রনাথকে যতটুকু উপলব্ধি করতে পারি তাতে মনে হয়, সারা জীবনই তাঁর বাঙালী চরিত্র নিয়ে একটি দ্বন্দ্ব ছিল। তিনি ইউরোপীয়দের চরিত্র, চীনাদের চরিত্র, জাপানীদের চরিত্র নিয়ে যত সরল রেখায় প্রকাশ করতে পেরেছেন বাঙালী চরিত্র নিয়ে তা পারেননি। আর বঙ্গবন্ধু তো বিশ্বাসই করতে পারেননি, বাঙালী তাঁকে হত্যা করবে। কিন্তু সেটাই ঘটেছিল। বাঙালী চরিত্রের এই অদ্ভুত দিক গত দুদিন আগে ছোট্ট একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিল ২৫ বছরের এক তরুণ। ওই তরুণ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে, জেল হত্যা উপলক্ষে এইচ টি ইমামের বক্তব্য নিয়ে যে দুটি পত্রিকা প্রথম দিন খ-িত প্রচার করে এই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, এই দুটি পত্রিকায় কেউ কি কখনও শিবিরের হাতে অস্ত্র এমন ছবি প্রকাশ করতে দেখেছেন? কিন্তু ছাত্রলীগের অস্ত্র শুধু নয়, ছাত্রলীগ সংক্রান্ত যে কোন নিউজ হলে তারা তিলকে তাল করে প্রকাশ করে। তার বক্তব্য, এইচ টি ইমাম যদি শিবিরের ওখানে গিয়ে এই বক্তব্য দিতেন তাহলে তারা এভাবে তার পিছে লাগত না। তার এই স্ট্যাটাস পড়ার পরে ভেবেছি আসলে বিষয়টি তো খুব ভুল নয়। কারণ, সন্ধ্যায় নিউজ টেবিলে বসে প্রায় দেখতে পাই, দেশের অমুক জায়গায় শিবির ও ছাত্র লীগের ভেতর সংঘর্ষ হয়েছে। ছাত্রলীগের একজন মারা গেছে। কিন্তু মেলে ছবি পৌঁছে গেছে ছাত্র লীগের হাতে অস্ত্র। যে দলটির গুলিতে মারা গেল তাদের হাতের অস্ত্রের কোন ছবি নেই। পরদিন অনেক পত্রিকায় ছাত্রলীগের ওই ছবিটি দেখতে পাই। কারা পাঠায় এ ছবি এবং কোন যাচাই না করে কেন ছাপা হয় বুঝতে পারি না। এভাবে উৎস ছাড়া একটি ছবি পত্রিকা অফিসে চলে আসে আর ছাপা হয়ে যায়, এটা কোন সাংবাদিকতার নৈতিকতার ভেতর পড়ে তাও বুঝতে পারি না। যাহোক, ওই তরুণ তার স্ট্যাটাসে আরো লিখেছে, ‘আমার এক বড় ভাই আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে কাজ করেছে, ছাত্রলীগ করে; এইচ টি ইমাম হয়ত তার মুখ দেখলে চিনবেন। তিনিও দুটো বিসিএসে টিকতে পারেননি। অথচ এসব কথা কোথাও কেউ বলে না। কেউ বলে না, ‘বিএনপি আমলে আমান উল্লাহ আমান লিস্ট পাঠিয়ে দিত, সেই লিস্ট অনুযায়ী বিসিএস পরীক্ষার রেজাল্ট দেয়া হতো।’ তরুণের ওই স্ট্যাটাসটি পড়ে মনে হলো বর্তমান সময়ের অদম্য পরিশ্রমী সাংবাদিক মুন্নী সাহার একটি কথা। এই দুটি পত্রিকার একটিকে নিয়ে তিনি তাঁর অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ছাত্রলীগ এই পত্রিকাটির খুব ইন্টারেস্টিং সাবজেক্ট। যে কোন কিছুতেই তারা ছাত্রলীগের একটি দোষ বের করে ফেলতে পারে। আসলে এখানে ঘটনাটিও তাই। কারণ, এইচ টি ইমামের বক্তব্যের ওই রিপোর্টটি নিউজের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে এমন পর্যায়ে রিপোর্টিং থেকে সেদিন হাতে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতার করা ছোট নিউজ। নিউজ টেবিল থেকে নিউজ এডিটর, জয়েন্ট নিউজ এডিটর ততক্ষণে প্রোডাকশন রুমে চলে গেছেন। তাই নিজেই নিউজটি দেখে দেই। দেখি, এইচ টি ইমাম ছাত্রলীগের উদ্দেশে বলেছেন, নেত্রী চান তোমরা চাকরি করো, ব্যবসা করে প্রতিষ্ঠিত হও। এর পরে তিনি বিসিএস প্রসঙ্গে বলেছেন, তোমাদের লিখিত পরীক্ষায় পাস করতে হবে। আর ভাইভার বিষয়ে আমি তোমাদের দেখব, সেজন্য আমি তোমাদের কোচিং নেব, তোমরা প্রয়োজনে ছোট ছোট স্টাডি গ্রুপ করে পড়াশোনা করো। যাতে তোমরা ভাইভায় পাস করতে পারো। নিউজের মেরিটের দিকে চিন্তা করে মনে করি, এইচ টি ইমাম একজন পুরনো সিএসপি, তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা। তিনি সিএসপি হিসেবে তার দলের ছেলেদের কোচিং করাবেন এটা এমন কি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সিঙ্গেল কলাম একটা নিউজ করে পেজ থ্রি মার্ক করে পাঠিয়ে দেই। পরদিন দেখি, একটি পত্রিকায় ‘আমি তোমাদের দেখব’, ওখানেই শেষ হয়ে গেছে। আর বিশাল নিউজ। ঠাকুমাকে দেখিনি। খুব ছোটবেলায় মার কাছেই মহাভারত পড়েছিলাম। তাই বুঝতে কষ্ট হলো না এই সব ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির সম্পাদকদের। যুধিষ্ঠির শুধু অশ্বত্থামা হত বলেছিলেন জোরে, আর ‘গজ’ বলেছিলেন আস্তে। যার ফলে দ্রোণাচার্য ধরে নিলেন, তার পুত্র অশ্বত্থামা মারা গেছে। কিন্তু বাস্তবে মারা গেছে অশ্বত্থামা নামে একটি গজ (হাতি)। আর আজকের যুধিষ্ঠিরা আর ‘গজ’টুকুও বলেননি। ঠিক একই অবস্থা দেখতে পেলাম নিউজের বাকি অংশে সেখানে বলা হচ্ছে, কিভাবে ছাত্রলীগ অফিসারদের দিয়ে নির্বাচন করানো হয়েছিল। অথচ নিউজটায় ছিল, তিনি বলেছেন, জামায়াত-শিবিরের তা-ব ঠেকাতে কিভাবে আমাদের ছেলেরা প্রাণ দিয়েছে। যতটুকু বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতার ওই রিপোর্টে ছিল, তাতেই বোঝা যায়, তিনি আমাদের ছেলেরা বলতে একজন প্রবীণ ব্যক্তি হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বুঝিয়েছেন। আর এটা তো সত্য, দেশকে রক্ষার জন্যে ১৯৭১-এর পরে ২০১৩তেই আমাদের পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা যে আত্মত্যাগ করেছে তা আর কখনও করার প্রয়োজন পড়েনি। কারণ, ২০১৩ তে ২০ দলীয় জোট মূলত দেশটিকে ধ্বংস করার জন্যে নির্বাচন প্রতিহতের নামে সশস্ত্র যুদ্ধই ঘোষণা করেছিল দেশের বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনার মতো সাহসী বীর নেত্রী ছিলেন বলেই দেশ রক্ষা পেয়েছে। যাহোক, এর পরে যা ঘটনা ঘটে তাই ঘটছে, ওই পত্রিকা পরের দিনই এইচ টি ইমাম ও ছাত্রলীগকে নিয়ে একটি মতামত কলাম প্রকাশ করে। এখানেও বিষয় ওই ছাত্রলীগ। যিনি লিখেছেন তিনি কিছুদিন আগে লিখেছিলেন, ‘জয়বাংলা ও জিন্দাবাদে কোন পার্থক্য নেই’। যার কাছে জয় বাংলা ও জিন্দাবাদে কোন পার্থক্য নেই তার কাছে ছাত্রলীগের একজনও যদি প্রশাসনে যায় তাহলে তো খারাপ লাগবেই। পরের দিন যিনি লিখলেন, তার পরিবারের সকলে জামায়াত করেন, তিনি তথাকথিত নিরপেক্ষদের দলে। তারও ছাত্রলীগের একজনও যদি কোচিং করে পাস করে প্রশাসনে যায় তাহলে খারাপ লাগবেই। কারণ, অনেকেই জানেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের একটি সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত প্রশাসন দখল করা। মরহুম সাংবাদিক আতাউস সামাদকে একটি পর্যায়ে মতিউর রহমান নিজামীর মন্ত্রণালয়ে বেশ ঘন ঘন যেতে হতো একটি কাজের জন্যে। এক পর্যায়ে তিনি অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েন। বুঝতে পারেন, তাঁকে ওই কাজে সহযোগিতা করা হবে না। আবার তিনি বেগম জিয়ার কাছে একটি টেলিভিশনের লাইসেন্স চেয়েছিলেন, সেটাও পাননি। তিনি জানতে পারেন, তিনি টেলিভিশন পেলে, তাতে মুক্তিযুদ্ধের কথাও দেখানো হবে বলে বেগম জিয়ার ঘনিষ্ঠ লোকেরা বেগম জিয়াকে বলেছেন তাকে টেলিভিশনের লাইসেন্স না দিতে। তাঁর আত্মীয় হয়েও কামাল সিদ্দিকী বেগম জিয়ার কাছ থেকে তার জন্যে টেলিভিশনের লাইসেন্স অনুমোদন করাতে পারেননি। এ সব ঘটনার ভেতর দিয়ে তিনি তাঁর উপলব্ধি থেকে একদিন বলেন, তাঁর এখন বিশ্বাস বাংলাদেশের প্রশাসনে যতদিন না শতভাগ স্বাধীনতার সপক্ষরা স্থান পাবে ততদিন বাংলাদেশ তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে না। তাই যদি কোন প্রবীণ স্বাধীনতা সংগ্রামী সিএসপি বিনা মাহিনায় কোচিং করিয়েও স্বাধীনতার সপক্ষ ছেলেদের প্রশাসনে পাঠানোর চেষ্টা করেন, মিডিয়ার ওই নষ্ট অংশের দ্বারা তিনি নিন্দিত হবেনই। কিন্তু বাস্তবতা হলো একমাত্র শেখ হাসিনা ছাড়া এই সব মিডিয়াকে শতভাগ কেউ চেনেন না। তিনি এদের কারও কারও তার প্রেস কনফারেন্সে ঢোকার অনুমতি দেন না। আর কোন কোন পত্রিকার সংবাদ মাথায় না নিয়েই তিনি দেশ চালান। বাস্তবে মিডিয়ার এই অংশের মূল টার্গেট শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগ, এইচ টি ইমাম এসব উপলক্ষ মাত্র। কারণ, শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের অস্তিত্ব অনেকটা অভিন্ন হয়ে উঠেছে। এ কারণে এরা শেখ হাসিনার ওপর আঘাত করে মূলত বাংলাদেশের অস্তিত্বকে আঘাত করতে চায়। যে কাজ তাদের সহযোগী হিসেবে জামায়াত, বিএনপি ও জঙ্গীরা করছে।
×