বিশেষ প্রতিনিধি ॥ হেফাজতে নাকি আত্মগোপনে- দেশে ফিরে আসা আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে দিনভর সৃষ্ট ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে এমন কথা বলা হলেও তাঁর সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানাতে পারেনি কোন পক্ষই। তবে আজ মঙ্গলবার অজ্ঞাত স্থান থেকে প্রকাশ্য আসতে পারেন মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারানো প্রবীণ এই রাজনীতিক। ঘনিষ্টজন ও পরিবার সূত্রগুলো আভাস দিয়েছেন, আজ যে কোন সময় হাইকোর্টে উপস্থিত হয়ে আগাম জামিন চাইতে পারেন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে সব কুল হারানো আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।
নানাসূত্র থেকে জানা গেছে, উচ্চ আদালত থেকে শেষ পর্যন্ত আগাম জামিন পেলেও কারাগারে যেতেই হচ্ছে ৭৭ বছর বয়সী বঙ্গবন্ধুর স্নেহভাজন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। আগাম জামিন পেলেও নির্দেশনা অনুযায়ী নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতেই হবে তাঁকে। আর নিম্ন আদালতে দায়েরকৃত মামলার জামিন দেয়ার কোন এখতিয়ার নেই। তাই গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে দেশে ফিরে প্রথম দফায় গ্রেফতার এড়াতে পারলেও কারাগারে যে লতিফ সিদ্দিকীকে যেতেই হচ্ছে তা নিশ্চিত করেছেন আইনজ্ঞরা।
পরিবার ও আইনজীবীদের সূত্রে জানা গেছে, আগামী জামিনের বিষয়ে আইনগত সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলেছেন অজ্ঞাত স্থানে থাকা লতিফ সিদ্দিকী। তাঁর আগাম জামিন শুনানির জন্য দেশের শীর্ষস্থানীয় তিন আইনজীবীকে দায়িত্ব হয়েছে। দুপুরের আগেই কঠোর গোপনীয়তায় সুপ্রীমকোর্টে হাজির হবেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। পরে সিনিয়র আইনজীবীরা তাঁকে নিয়ে যাবেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে। আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে কিছুদিন অন্তত মুক্ত থাকতে পারবেন আওয়ামী লীগের এক সময়ের প্রভাবশালী এ নেতা। আর আবেদন মঞ্জুর না হলে গ্রেফতারের হাত থেকে রেহাই পাবেন না তিনি।
অনেকটা আকস্মিকভাবেই রবিবার রাতে কলকাতা থেকে দেশে ফেরেন সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এ ঘটনায় সরকারকেও পড়তে হয় বিব্রতকর অবস্থায়। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও সেই পরোয়ানা আদালত থেকে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে না আসায় তাঁকে সেখানে আটক করা যায়নি। প্রায় দেড় ঘণ্টা বিমানবন্দরে অবস্থানের পর একটি গাড়িতে করে অজ্ঞাতস্থানে চলে যান লতিফ সিদ্দিকী। তবে তিনি যে গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতেই রয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে বিভিন্ন সূত্র থেকেই। এও আভাস পাওয়া গেছে, আগাম জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে যাবার পথেও গ্রেফতার হতে পারেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। তবে যা হবে সম্পূর্ণ আইন প্রক্রিয়া মেনেই করা হবেÑ এমনটাই বলছেন সরকারের উচ্চ মহলও। ফলে আজই লতিফ সিদ্দিকীর ভাগ্য কি হবে তা নির্ধারিত হচ্ছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: