নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ১ ডিসেম্বর ॥ লালমনিরহাটে তামাক চাষে ঋণের মাধ্যমে সিগারেট কোম্পানির কাছে সার নিতে কৃষককে তিন শ’ টাকার সিগারেট কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগ উৎকৃষ্টমানের তামাক চাষের জন্য প্রসিদ্ধ। এ অঞ্চলে এক সময় প্রধান অর্থকরী ফসল ছিল তামাক। সরকারীভাবেও তামাক চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে। সেই সময় তামাক বিদেশে রফতানি করে কৃষক যাতে লাভবান হয়, সরকার সেই দিকটা বিবেচনা করে তামাক চাষে কৃষককে উৎসাহিত করে। এ অঞ্চলে তামাক চাষ ব্রিটিশ শাসনামল হতে শুরু হয়। এখন অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। সরকার তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করছে। উত্তরাঞ্চলে কৃষকের কাছে তামাক ছাড়াও অর্থকরী ফসল চাষের নানাপথ খোলা আছে। এ অঞ্চলে এখন সবধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদন হয়ে আসছে। দেশী ও বিদেশী নানা ট্যোবাকো কোম্পানি তাদের ব্যবসার কাঁচামাল নিশ্চিত করতে চাষীদের তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ করছে।
তামাক চাষের মৌসুমের শুরুতে বীজ ও সার ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হয়। জেলার আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি গ্রামে ঢাকা ট্যোবাকো কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে শতশত হেক্টর জমিতে চাষীদের মধ্যে তামাক চাষ করিয়ে আসছে। তামাক চাষে ট্যোবাকো কোম্পানিগুলো চাষীদের সঙ্গে চুক্তি করেছে। চুক্তিতে কি লেখা আছে চাষীরা জানে না। তামাক উৎপাদনের আগেই মূল্য নির্ধারণ না করে, একপেশে চুক্তি করা হয়েছে।
এবার চাষীদের সঙ্গে ঢাকা ট্যোবাকো কোম্পানি ঋণ হিসেবে সার কেনার সময় নতুন করে শর্ত জুড়ে দিয়েছে ঢাকা ট্যোবাকো কোম্পানির উৎপাদিত তিন শ’ টাকার সিগারেট কিনতে হবে। তবে যাঁরা দুই একর পরিমাণে তামাক আবাদ করবে তাঁদের ব্রিটন নামের ২০ প্যাকেট সিগারেট যার মূল্য তিন শ’ টাকা কিনতে কৃষককে বাধ্য করা হচ্ছে। ঢাকা ট্যোবাকো কোম্পানির আদিতমারীর ট্যাপাহাট তামাক কেন্দ্রে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। সেখানে সার নিতে আসা কৃষক জব্বার জানান, বীজ নেয়ার সময় সিগারেট কেনার কথা ছিল না। তিন শ’ টকার সিগারেট কিনে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।
তবে এই অনিয়ম সম্পর্কে সিগারেট কোম্পানির কোন কর্মকর্তা সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে অপারগতা জানান।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: