ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ক্রিকেটে সাফল্য

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ৪ ডিসেম্বর ২০১৪

ক্রিকেটে সাফল্য

বাংলাদেশের ক্রিকেট যেন হাসছে- হাসছে ক্রিকেটের অগণিত ভক্ত। জিম্বাবুইয়ের সঙ্গে শেষ ওয়ানডেতে বিজয়ের পর ক্রিকেটারদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে গিয়ে আনন্দে হাসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। দুই পাশের দুই ক্রিকেটার মুশফিক ও মাশরাফি- তাঁরাও হাসছেন। এই হাস্যোজ্জ্বল ছবি প্রায় সব দৈনিকের প্রথম পাতায় স্থান পেয়েছে মঙ্গলবার। বিজয়ের এই মাসেই ক্রিকেটের এই হাস্যোজ্জ্বল সাফল্যের ছবি যতটা সুখের, ততটাই আনন্দের। সোমবার বাংলাদেশ ক্রিকেট দল শেষ ওয়ানডেতে জিম্বাবুইয়েকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এক নবদিগন্তের সূচনা করল। এবার প্রতিপক্ষকে টেস্ট ও ওয়ানডে দুই ফর্মেটেই সব খেলায় হারিয়ে হোয়াইটওয়াশের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করল তারা। এ আনন্দের ক্ষণটির কথা আমাদের ক্রিকেট ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এইদিন অভিষেকেই তাইজুল হ্যাটট্রিকসহ ৪ উইকেট লাভের মাধ্যমে নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি করে। এ সিরিজ থেকে বাংলাদেশের সাফল্য অনেক। দলগত সাফল্যে তিন টেস্টের তিনটিতেই জিতেছে। জিতেছে পাঁচটি ওয়ানডে ম্যাচ। টেস্ট ক্রিকেটে আবার সাকিব আল হাসান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হিসেবে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে চলে এসেছেন। শুধু তাই নয়, একটি টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০-এর বেশি উইকেট লাভ করে অলরাউন্ডার হিসেবে ইংল্যান্ডের ইয়াম বোথাম ও পাকিস্তানের ইমরানের পাশে নিজের নাম লিখিয়েছেন তিনি। আরেক তরুণ খেলোয়াড় মুমিনুল হক টেস্ট ক্রিকেটে রানের গড় এমন অবস্থানে নিয়ে গেছেন, যাতে বিশ্বসেরা ক্রিকেটারদের নামের পাশে চলে এসেছে তাঁর নাম। আর সেই সঙ্গে ওয়ানডেতে অভিষেকে হ্যাটট্রিকসহ ম্যাচসেরা হওয়ার কীর্তি তো ক্রিকেট ইতিহাসের নতুন রেকর্ড শুধু নয়, এক অনন্য দৃষ্টান্তও। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বপ্রথম আত্মপ্রকাশ করে ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি ট্রফিতে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে। বাংলাদেশ ১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ এশিয়া কাপে ক্রিকেটে সর্বপ্রথম একদিনের ম্যাচটি খেলে পাকিস্তানের বিপক্ষে। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফি জেতে এবং এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। প্রথম বিশ্বকাপেই তারা পাকিস্তান এবং স্কটল্যান্ডকে পরাজিত করে। বাংলাদেশের ক্রিকেট এই অবস্থানে পৌঁছাতে ও নিজস্ব ক্ষেত্র তৈরি করতে কিছু ক্রিকেটারের অবদান অবশ্যই স্মরণযোগ্য। এই হাস্যোজ্জ্বল দিনে মনে রাখতে হবে ক্রিকেটার ও সংগঠকদের কথাও। এই সাফল্য প্রমাণ করে দলের কোচ, নির্বাচক ও খেলোয়াড়রা নিজস্ব দক্ষতার পরিচয় দিতে সমর্থ হয়েছেন। তাই খেলোয়াড়দের মধ্যে সমন্বয় ধরে রাখতে হবে। ক্রিকেটের নেতৃত্ব থাকতে হবে যোগ্য লোকদের হাতে। নিজস্ব স্বার্থ নয়, দেশের জন্য সব সময় খেলতে হবে। বর্তমান টিম স্পিরিট ধরে রাখতে পারলে পরবর্তী বছর বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্য আসতে পারে। আজকের হাস্যোজ্জ্বল অতীত ধরে রাখতে নিষ্ঠা, সাধনা, সততা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে খেলতে হবে প্রতিটি খেলোয়াড়কে। ক্রিকেটারদের এই সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে দেশের পরিচিতিও আন্তর্জাতিক মহলে পৌঁছে যাবেÑসেটাই সবার প্রত্যাশা।
×