ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তদন্ত করছে এনআইএ

আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠীর সঙ্গে জেএমবির নেটওয়ার্ক

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৪ ডিসেম্বর ২০১৪

আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠীর সঙ্গে জেএমবির নেটওয়ার্ক

শংকর কুমার দে ॥ জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সঙ্গে আল-কায়েদা, আইএস, ইন্ডিয়ান মুজাহিদীন, রোহিঙ্গা জঙ্গীদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার যোগসূত্র পাওয়ার তদন্ত করছে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। বর্ধমান খাগড়াগড়ের বোমা বিস্ফোরণের তদন্ত করতে গিয়ে আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠিগুলোর সঙ্গে নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে বলে এনআইএয়ের দাবি। এর মধ্যে জেএমবির জঙ্গীদের সঙ্গে রোহিঙ্গা জঙ্গীদের যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে। কলকাতায় গ্রেফতারকৃত জেএমবির নেতা সাজিদ ওরফে নারায়ণগঞ্জের মাসুমের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ঢাকায় গ্রেফতারকৃত তিন রোহিঙ্গা জঙ্গীকেও এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত সংস্থা এনআইএয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, বর্ধমান খাগড়াগড়ের বোমা বিস্ফোরণের তদন্ত শেষ করতে পাঁচ থেকে ছয় মাস লেগে যেতে পারে। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছেন, বর্ধমানের খাগড়াগড়ের তদন্তের অগ্রগতি দেখার জন্য কলকাতায় পৌঁছেছেন এনআইএয়ের স্পেশাল ডিজি নবনীত ওয়াসন। কলকাতার সল্টলেকের সিআরপি ক্যাম্পের ভেতরে স্থাপিত অস্থায়ী অফিসে এনআইএয়ের আইজি সঞ্জীব সিংহ, ডিআইজি, এসপিসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন তিনি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, বর্ধমান খাগড়াগড়ের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে প্রমাণ দিচ্ছে জঙ্গীদের শিকড় অনেক গভীরে। জঙ্গী তৎপরতা বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তানের ভূখ-ে বিস্তৃত হয়ে শাখা-প্রশাখা আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনগুলোর সঙ্গে গিয়ে মিশেছে। তদন্ত গুটিয়ে আনতে আরও পাঁচ থেকে ছয় মাস লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। গোয়েন্দা সূত্র জানান, দুই দেশের গোয়েন্দা প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ও ভারতে সফর করে তথ্য বিনিময়ের পর নিশ্চিত হয়েছে যে, বর্ধমান খাগড়াগড়ের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জেএমবি, বাংলাদেশের জঙ্গী, কলকাতায় গ্রেফতারকৃত সাজিদ-ই যে নারায়ণগঞ্জের মাসুম। এই মাসুমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এনআইএ যে জঙ্গীর তালিকা পেয়েছে এবং এই তালিকা ঢাকায় হস্তান্তরের পরই ঢাকায় গ্রেফতার করা হয়েছে তিন রোহিঙ্গা জঙ্গীকে। গ্রেফতারকৃত তিন রোহিঙ্গা জঙ্গী মোঃ নূর হোসেন প্রকাশ রফিকুল ইসলাম, ইয়াসির আরাফাত ও ওমর করিমকে রিমান্ডে এনে ঢাকায় গোয়েন্দা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। রোহিঙ্গা জঙ্গীরা গ্রেফতার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তারা আরএসও, জিআরসি ও এআরইউয়ের রোহিঙ্গা জঙ্গী সদস্য। মিয়ানমারের নাগরিক জঙ্গীরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের এমনকি খোদ রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করে জঙ্গী তৎপরতা চালানোর ঘটনাটিতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন গোয়েন্দারা। বর্ধমানের খাগড়াগড়ের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে রোহিঙ্গা জঙ্গীদের নাম আসার কারণেই তারা ধরা পড়েছে। তদন্ত সংস্থা এনআইএয়ের কর্মকর্তারা কলকাতায় গ্রেফতারকৃত সাজিদকে নিয়ে রাজ্যের বিভিন্নস্থানে তদন্ত করছেন, যেখানে সে অবস্থান করে জঙ্গী জিহাদী কার্যকলাপ চালাতো। এর মধ্যে বহরমপুর সিপিএময়ের পঞ্চায়েত প্রধানের ঘনিষ্ট মহবুল শেখ নামে পরিচিত একজনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে সাজিদ থাকতো বলে তদন্তে পেয়েছে এনআইএ। তদন্তকারীরা তাকে নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে তদন্ত করেছেন।
×