ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্যাথলজিকে বাদ দিয়ে সঠিক ও উন্নত চিকিৎসা সম্ভব নয়

প্রকাশিত: ০৬:১০, ৫ ডিসেম্বর ২০১৪

প্যাথলজিকে বাদ দিয়ে সঠিক ও উন্নত চিকিৎসা সম্ভব নয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যথাযথ চিকিৎসার মান অনেকাংশে প্যাথলজি জ্ঞান ও দক্ষতা এবং সঠিক প্যাথলজি পরীক্ষা রিপোর্টের ওপর নির্ভর করে। প্যাথলজি রিপোর্ট মানসম্মত না হলে পরবর্তী চিকিৎসাও সঠিক হবে না। প্যাথলজি বিভাগকে বাদ দিয়ে সঠিক ও উন্নত চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব নয়। এই বিভাগের মাধ্যমেই সব ধরনের সাধারণ ও জটিল বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং রোগ নির্ণয় করা হয়। তাই দেশের সর্বত্র সঠিক প্যাথলজি রিপোর্ট প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা দরকার। বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডাঃ মিলন মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ একাডেমি অব প্যাথলজির প্রথম জাতীয় সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ একাডেমি অব প্যাথলজির সভাপতি এজেই নাহার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ প্রাণ গোপাল দত্ত প্রধান অতিথি ও বিএমএ মহাসচিব অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউইয়র্ক মেডিক্যাল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক এমবি জামান এবং স্বাগত বক্তব্য দেন অধ্যাপক শাহ মনির হোসেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সম্মেলন আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক অসীম রঞ্জন বড়ুয়া। অবকাঠামো উন্নয়নের চেয়ে চিকিৎসকদের নৈতিকতার উন্নয়ন জরুরী বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রাণ গোপাল দত্ত। তিনি বলেন, আমরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করতে পারলে রোগী ও শিক্ষার্থী উভয়ই উপকৃত হবেন। আমার অধিকাংশ সময় প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়ার তাগিদ অনুভব করি। যা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও রোগীদের জন্য মঙ্গলকর নয়। হাসপাতালে যতটুকু সময় দিতে পারবেন ততটুকুই আপনি ভাল মানের চিকিৎসক হতে পারবেন। প্যাথলজির গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, প্যাথলজি বিভাগকে বাদ দিয়ে সঠিক ও উন্নত চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব নয়। এই বিভাগের মাধ্যমেই সব ধরনের সাধারণ ও জটিল বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং রোগ নির্ণয় করা হয়। সুতরাং এর গুরুত্ব খাটো করে দেখার কোন সুযোগ নেই। বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডাঃ এম ইকবাল আর্সলান বলেন, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও দায়বদ্ধতার কথা বলে আসছি। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা নিজেদের উৎকর্ষ সাধন করলেও, মানসিকভাবে উৎকর্ষ অর্জন করতে পারিনি। আমাদের প্রতি যে দায়িত্ব রয়েছে তা যেন আমরা সঠিকভাবে পালন করতে পারি, সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান বিএমএ মহাসচিব। সম্মেলনে একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মালীহা হোসেন বলেন, গত দু’ বছরে নানা ব্যস্ততার মধ্য দিয়েও আমরা শিক্ষামূলক কর্মশালা, ক্যান্সারবিরোধী কার্যক্রমসহ বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পেরেছি। ডেল্টা হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মোকাররম আলী বলেন, মানসম্মত সেবা ও মেডিকেল অডিটের ব্যবস্থাপনা থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া সব ধরনের মান ঠিক রেখে গবেষণাগারের কার্যক্রম সম্পাদনের দিকে নজর দিতে হবে। অন্য বক্তারা বলেন, প্যাথলজি বিভাগ সমূহকে শক্তিশালী করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টসসহ ল্যাবরেটরিতে কর্মরত অন্য সকলকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা জরুরী। দক্ষ জনবল তৈরিসহ সর্বস্তরের মানুষের সঠিক রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে উন্নত প্যাথলজি সার্ভিস প্রদান করা সম্ভব। যাতে সবার জন্য সঠিকভাবে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা যায়।
×