ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুই দিন পর পুঁজিবাজারে সামান্য সূচক বাড়ল

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ৯ ডিসেম্বর ২০১৪

দুই দিন পর পুঁজিবাজারে সামান্য সূচক বাড়ল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ টানা দুই দিনের পতনের পর সোমবার দেশের উভয় পুঁজিবাজারে কিছুটা উর্ধমুখী প্রবণতা দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। বেশিরভাগ কোম্পানির দর বাড়লেও বড় মূলধনী কোম্পানির বেশি দর কমার কারণে সূচকের আহামরি কোন পরিবর্তন আসেনি। বস্ত্র, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দর বৃদ্ধির দিনে উভয় বাজারেই লেনদেন আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তবে ছোট মূলধনী কোম্পানি বা জাঙ্ক শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহী করে তুলেছে। অধিক মুনাফার আশায় একশ্রেণীর বিনিয়োগকারী ঝুঁকিতে হলেও এসব শেয়ারের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন আগের তুলনায় ৩৯ কোটি টাকা বেশি হয়েছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সকালে লেনদেনের শুরুতে আগের দিনের তুলনায় সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়েছিল। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ওঠানামা চলতে থাকে। সোমবার দিনশেষে ডিএসইর আগের দিনের চেয়ে ০.৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৯৩০ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩০৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৬০টির, কমেছে ১০৭টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টি কোম্পানির শেয়ার দর। সেখানে লেনদেন হয়েছে ৪২৬ কোটি ৪৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এর আগে রবিবার ডিএসইর অবস্থান করে ৪ হাজার ৯৩০ পয়েন্টে। ওইদিন লেনদেন হয় ৩৮৩ কোটি ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সে হিসেবে সোমবার ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৩৯ কোটি ৯ লাখ ১৯ হাজার টাকা বা ১১.২৩ শতাংশ। সোমবার ডিএসইর টপ-২০ তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলোর মোট ১৭৩ কোটি ৮৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪০.৭৬ শতাংশ। এদিন ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো ফার্মার। দিনভর এ কোম্পানির ২৭ লাখ ৮৮ হাজার ২০০টি শেয়ার ১৮ কোটি ৫২ লাখ ১০ হাজার ৩০০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪.৩৪ শতাংশ। এ ছাড়া সামিট এলায়েন্স পোর্টের ১৪ কোটি ২৪ লাখ, হামিদ ফেব্রিক্সের ১৩ কোটি ১৯ লাখ, কেয়া কসমেটিকসের ১২ কোটি ৮৯ লাখ, কাশেম ড্রাইসেলসের ১২ কোটি ২৮ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ১১ কোটি ৩২ লাখ, আরএন স্পিনিংয়ের ১০ কোটি ৮ লাখ, বেক্সিমকো লিমিটেডের ৮ কোটি ৭৩ লাখ, গ্রামীণফোনের ৭ কোটি ৯৩ লাখ এবং বিডি থাইয়ের ৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে দর বৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : কাসেম ড্রাইসেল, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, সামিট এলায়েন্স পোর্ট লিমিটেড, বিআইএফসি, হাক্কানী পাল্প, মেট্রো স্পিনিং, স্টাইল ক্রাফট, সাইফ পাওয়ার, বিডি থাই ও মিরাকল ইন্ড্রাস্টিজ। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : অলটেক্স, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ব্যাংক, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, আইএসএন, হামিদ ফেব্রিক্স, সাভার রিফ্যাক্টরিজ, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ও আর্গন ডেনিমস। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দুইদিনের পতন শেষে পুঁজিবাজারে আগের তুলনায় ক্রেতা বেশি ছিল। এছাড়া গত কয়েকদিনে ধারাবাহিক পতনের কারণে অনেক কোম্পানিরই দর লোভনীয় পর্যায়ে চলে আসে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাজারে ইতিবাচক প্রবণতা ফিরেছে। বিশেষ করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক বছর শেষ হতে চলায় প্রতিষ্ঠানগুলোর আগের চেয়ে সক্রিয় হয়েছে। যার সম্মিলিত প্রভাব পড়েছে বাজারে। অন্যদিকে দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৯ হাজার ২৭৩ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২২০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩২টির, কমেছে ২৫টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টি কোম্পানির। সেখানে লেনদেন হয়েছে ৩২ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের দিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৪৪ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সে হিসেবে সোমবার সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সিএসইতে লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : হামিদ ফেব্রিক্স, সামিট এলায়েন্স পোর্ট, আর এন স্পিনিং, বেক্সিমকো, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, আরএসআরএম স্টিল, যমুনা অয়েল, বেক্সিমকো ফার্মা, ডেল্টা স্পিনিং ও ফ্যামিলি টেক্স।
×