ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জুনের মধ্যেই ডিসিসি নির্বাচন

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ৯ ডিসেম্বর ২০১৪

জুনের মধ্যেই ডিসিসি নির্বাচন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী বছরের প্রথমার্থেই ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর ও দক্ষিণ) নির্বাচন। মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০১৪-এর খসড়া প্রস্তাবটি ফেরত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। এছাড়া হজে যেতে আগ্রহীদের জন্য এবারও দুই ধরনের প্যাকেজ অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকের মেয়াদ ছয় মাস থেকে বাড়িয়ে এক বছর করার প্রস্তাব পাঠায় স্থানীয় সরকার বিভাগ। বৈঠকে কয়েক মন্ত্রী এর বিরোধিতা করেন। তাদের বিরোধিতার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী ডিসিসি নির্বাচনের নির্দেশ দেন। ১৯৭৮ সালে ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে পরিবর্তিত হয়। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্নমুখী কার্য পরিচালনার জন্য আটটি স্ট্যান্ডিং কমিটিসহ একাধিক কমিটি কাজ করেছে। একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ১০টি আঞ্চলিক দফতরের মাধ্যমে প্রশাসনিক ও অন্যান্য কাজ পরিচালনা করা হয়। প্রতি ৫ বছর অন্তর সরাসরি ভোটের মাধ্যমে একজন মেয়র এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে কমিশনার নির্বাচন করা হয়। মেয়র সিটি কর্পোরেশনের কার্যনির্বাহী প্রধান হিসেবে কাজ করেন। মেয়রের অনুপস্থিতিতে সিটি কর্পোরেশনের কার্যপরিচালনার জন্য একজন প্রশাসক থাকেন। প্রতি ১৮০ দিনের জন্য সরকার কতৃক এই প্রশাসক নিযুক্ত হন। এছাড়াও মহিলাদের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে সংরক্ষিত কমিশনার পদ রয়েছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০২ সালের এপ্রিলে। এর পর টানা প্রায় ১০ বছর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা। ২০১১ সালের ২৯ নবেম্বর ডিসিসি দুই ভাগে বিভক্ত করার আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়। এ আইন পাসের আগ পর্যন্ত সাদেক হোসেন খোকা অবিভক্ত ডিসিসির মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে ২০১২ সালের ২৯ এপ্রিল বিভক্ত ডিসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের দিন ধার্য করা হয় ২৪ মে। কিন্তু ভোটার তালিকা আর সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত আইনী জটিলতায় আটকে যায় নির্বাচন। এর পর ২০১৩ সালের ১৩ মে উচ্চ আদালত ডিসিসি নির্বাচনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। উচ্চ আদালত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে সরকার আবারও নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু করে। নির্বাচন কমিশনও ডিসিসি নির্বাচনের জন্য উদ্যোগ নেয়। তারা (ইসি) নীতিগত সিদ্ধান্তে উপনীত হয় ১৩ সালের অক্টোবর-নবেম্বর নাগাদ ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের দুই অংশের নির্বাচন সম্পন্ন করার। কিন্তু ঢাকার সুলতানগঞ্জ ইউনিয়ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় ডিসিসি উত্তর ও দক্ষিণের নির্বাচন অনুষ্ঠানে আবারও হোঁচট খায় নির্বাচন কমিশন। তবে পরবর্তীতে সুলতানগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্তির কাজটি সম্পন্ন করা হয়। এর মধ্যে শুরু হয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ডামাডোল। সংসদ নির্বাচনের ডামাডোলের কারণে সব ধরনের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও থমকে যায় ডিসিসি নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম। আওয়ামী লীগ সরকার টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে নতুন করে আলোচনায় আসে ডিসিসি। শুরুতে নির্বাচন না দিয়ে প্রশাসক পদে নিয়োগের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম চালানো হয়। এখন সরকার আবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের উদ্যোগ নিচ্ছে। হজ প্যাকেজ ॥ হজে যেতে আগ্রহীদের জন্য এবারও দুই ধরনের প্যাকেজ অনুমোদন করেছে সরকার, যাতে খরচ হবে গতবারের তুলনায় মাত্র কয়েক শ’ টাকা বেশি। প্রথম প্যাকেজের আওতায় হজে যেতে খরচ হবে তিন লাখ ৫৪ হাজার ৭৪৫ টাকা। আর দ্বিতীয় প্যাকেজে খরচ পড়বে দুই লাখ ৯৬ হাজার ২০৬ টাকা। এর বাইরে কোরবানির খরচ আলাদা যুক্ত হবে। গত বছর প্রথম প্যাকেজের জন্য হজযাত্রীদের দিতে হয় তিন লাখ ৫৪ হাজার ৩১৬ টাকা। আর দ্বিতীয় প্যাকেজে খরচ ছিল দুই লাখ ৯৫ হাজার ৭৭৬ টাকা। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আগামী মৌসুমের জন্য এই ‘হজ প্যাকেজ’ অনুমোদন করা হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের জানান, সরকারী ও বেসরকারী ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে এবার মোট এক লাখ এক হাজার ৭৫ বাংলাদেশী হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে ১০ হাজার যাবেন দুই প্যাকেজের আওতায় সরকারী ব্যবস্থাপনায়। কোরবানির খরচ হিসেবে প্রত্যেকে বাড়তি ৫০০ সৌদি রিয়াল এবং ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ এক হাজার ডলার সঙ্গে নিতে পারবেন। হজে যেতে টাকা জমা দিয়ে অনলাইনে নিবন্ধন করা যাবে ২১ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। নিবন্ধনের সময় অন্তত ১ লাখ ৫১ হাজার ৬৯০ টাকা জমা দিতে হবে। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য সময় পাওয়া যাবে ১০ জুন পর্যন্ত। আর বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় কোন হজযাত্রীর কাছ থেকে দুই লাখ ৯৬ হাজার ২০৬ টাকার কম নেয়া যাবে না।
×