ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাঁচ মাসে ২০৭ কোটি ডলার রফতানি আয়

প্রকাশিত: ০৫:১২, ১০ ডিসেম্বর ২০১৪

পাঁচ মাসে ২০৭ কোটি ডলার  রফতানি আয়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নবেম্বর) গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে এক শতাংশ বেশি রফতানি আয় হয়েছে। এই সময়ে এক হাজার ২০৭ কোটি ডলারের রফতানি আয় দেশে এসেছে। যার ৮১ শতাংশ এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। একক মাস হিসেবে নবেম্বরে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে অক্টোবরের চেয়ে প্রায় ২৪ শতাংশ বেশি আয় করেছে। আর রফতানি আয়ের এই পরিমাণ গত বছরের নবেম্বর মাসের চেয়ে সাড়ে ৯ শতাংশ বেশি। দেশের রফতানি আয় আবার বাড়তে শুরু করায় অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ সূচক ইতিবাচক ধারায় ফিরছে বলে মনে করছেন রফতানিকারক ও অর্থনীতিবিদরা। দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরের বাকি মাসগুলোতেও রফতানি আয়ের এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন রফতানিকারকরা। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য মতে, ২০১৪Ñ১৫ অর্থবছরের জুলাই-নবেম্বর সময়ে এক হাজার ২০৭ কোটি (১২ দশমিক ০৭ বিলিয়ন) ডলারের রফতানি আয় দেশে এসেছে। অর্থবছরের একই সময়ের চেয় এক শতাংশ বেশি রফতানি আয় হয়েছে। যার ৮১ শতাংশ এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। গত অর্থবছরের জুলাই-নবেম্বর সময়ে রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল এক হাজার ১৯৬ কোটি (১১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন) ডলার। একক মাস হিসেবে নবেম্বরে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ ২৪১ কোটি ১৭ লাখ ডলার আয় করেছে, যা অক্টোবরের চেয়ে প্রায় ২৪ শতাংশ বেশি। আর রফতানি আয়ের এই পরিমাণ গত বছরের নবেম্বর মাসের চেয়ে সাড়ে ৯ শতাংশ বেশি। অক্টোবরে রফতানি আয় এসেছে ১৯৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। আর গত বছরের নবেম্বরে ২২১ কোটি ২০ লাখ ডলার আয় হয়েছে। ইপিবির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ৫ মাসে রফতানি আয়ের শীর্ষে রয়েছে নিট পোশাক খাত। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওভেন পোশাক খাত। নিট পোশাক খাতে আয় হয়েছে ৪৯৯ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০৬ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। কম রফতানি হয়েছে ১ দশমিক ০৪ শতাংশ বা ৩৯ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ শতাংশ। সে সময় রফতানি আয় ছিল প্রায় ৪৮৯ কোটি ৯৮ লাখ ডলার। ওভেন পোশাকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম রফতানি হয়েছে। ৫২৪ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৪৬৯ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। রফতানি প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময় ওভেনে আয় ছিল ৪৭৫ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। এ বিষয়ে রফতানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ঈদ ও পূজার ছুটির কারণে অক্টোবর মাসে কয়েক দিন কারখানা বন্ধ ছিল। সে কারণে রফতানি আয়ও কম এসেছিল। নবেম্বর মাসে সেটা পূরণ হয়েছে। অ্যাপারেল সামিটের পর অর্থবছরের বাকি মাসগুলোতে রফতানি আয় বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ‘স্থিতিশীল’ থাকলে অর্থবছরের বাকি সময়েও রফতানি আয় বাড়বে বলে মনে করেন। এদিকে অক্টোবরে রফতানি আয়ের অন্যতম খাত পাট ও পাটজাত পণ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও নবেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এ খাতের ৩২ কোটি ৪ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৪ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি। এ সময় কাঁচা পাট রফতানি হয়েছে ৪ কোটি ৩২ লাখ ডলার এবং সুতা সাড়ে ২১ কোটি ডলারের। ৫ মাসে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হওয়া পণ্যের তালিকায় রয়েছে চিংড়ি, তামাক, ওষুধ, ফল, কমমেটিকস, প্লাস্টিক, মেলামাইন, কার্পেট, সিরামিক, ইলেকট্রিক পণ্য, বাইসাইকেল, পিভিসি ব্যাগ-পাদুকা, প্রকৌশল পণ্য, জাহাজ, হস্তশিল্প পণ্য ইত্যাদি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়া পণ্যের তালিকায় রয়েছে চা, চামড়া, আসবাবপত্র হিমায়িত, মাছ, শুকনো খাবার, পেট্রোলিয়াম উপজাত, রাসায়নিক পণ্য, হোম টেক্সটাইল, কম্পিউটার সেবা ইত্যাদি। চলতি অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন হাজার ৩২০ কোটি (৩৩ দশমিক ২০ বিলিয়ন) ডলার। এর মধ্যে জুলাই-নবেম্বর সময়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ২৭৩ কোটি ৫৫ লাখ (১২ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন) ডলার।
×