ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কে-এইট ডব্লিউ প্রশিক্ষণ বিমান অন্তর্ভুক্তি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

সরকার বিমানবাহিনীর আধুনিকায়নে সব ধরনের সহায়তা দেবে

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ১১ ডিসেম্বর ২০১৪

সরকার বিমানবাহিনীর আধুনিকায়নে সব  ধরনের সহায়তা দেবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে অধিকতর আধুনিকায়নের মাধ্যমে সুসজ্জিত, শক্তিশালী ও দক্ষ বাহিনীতে পরিণত করতে তাঁর দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর বছর ২০২১ সালের মধ্যে বিমান বাহিনীকে আধুনিকায়নে তাঁর সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেবে। তিনি বুধবর কুর্মিটোলায় বঙ্গবন্ধু বিমানবাহিনী ঘাঁটিতে সদ্য ক্রয়কৃত কে-এইট ডব্লিউ প্রশিক্ষণ বিমান অন্তর্ভুক্তকরণ অনুষ্ঠানে ভাষণকালে এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা তাঁর দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই নতুন এয়ারক্রাফটের অন্তর্ভুক্তি বিমানবাহিনী সক্ষমতা বিশ্বমানে উন্নীত করবে এবং একই সঙ্গে এই বাহিনীকে নিরাপদ ও গতিশীল করবে। নতুন প্রজন্মে কারিগরি যন্ত্রপাতি ও উন্নত ব্যবস্থাপনা বিমানবাহিনীর দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। তিনি বলেন, অতি শীঘ্রই বিমানবাহিনী অত্যাধুনিক এমআই-১৭১ হেলিকপ্টার, পিটি-৬ এয়ারক্রাফট, এলইটি-৪১০ এয়ারক্রাফট, এডব্লিউ-১৩৯ হেলিকপ্টার এবং ওয়াইএকে-১৩০ এয়ারক্রাফট পাবে। প্রধানমন্ত্রী এই অন্তর্ভুক্তিকরণ আদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারেড কমান্ডার উইং কমান্ডার শরীফ মোস্তফার কাছে হস্তান্তর করেন। এ উপলক্ষে এক চৌকস কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন গ্রহণ করেন। কুচকাওয়াজের পর তিনি নতুন অভিষিক্ত কে-এইট ডব্লিউ এয়ারক্রাফটের বর্ণাঢ্য উড্ডয়ন প্রত্যক্ষ করেন। প্রধানমন্ত্রী বিমানবাহিনীর ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুতে পৌঁছলে বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল মোঃ ইনামুল বারী ও এ ঘাঁটির এয়ার অফিসার কমান্ডিং এয়ার কমোডর এম ওবায়দুর রহমান তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবর্গ, রাষ্ট্রদূতগণ, নৌবাহিনীর প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। কে-এইট ডব্লিউ হচ্ছে বুনিয়াদি ও অগ্রসরমান জেড প্রশিক্ষণের জন্য চীনের তৈরি একটি প্রশিক্ষণ বিমান। বিমানটি পূর্ববর্তী সংস্করণের চেয়ে আরও দক্ষ ও উন্নত। এতে রয়েছে অত্যাধুনিক উড্ডয়ন সরঞ্জাম। প্রধানমন্ত্রী দেশের আকাশসীমা রক্ষায় বাংলাশে বিমানবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, দেশের সাম্প্রতিক সমুদ্র বিজয় এবং সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় বিমানবাহিনীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান এবং কৌশলগত সামরিক প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করে দেশে একটি আধুনিক, শক্তিশালী ও পেশাদার বিমানবাহিনীর স্বপ্ন দেখেছিলেন। শেখ হাসিনা তাঁর পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তে বিএএফ-এ মিগ-২১ এবং আধুনিক কার্গো বিমান, হেলিকপ্টার ও বিমান প্রতিরক্ষা রাডার সংযোজন করা হয়। তিনি বলেন, পরে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০০ সালে বিমান বাহিনীর জন্য চতুর্থ প্রজন্মের মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমান, বিশাল আকৃতির সি-১৩০ কার্গো বিমান ও অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার ক্রয় করে। শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র এসএএম এফএম ৯০ সংগ্রহ করাসহ একটি আধুনিক ও শক্তিশালী বিমানবাহিনী গড়তে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যশোরে বঙ্গবন্ধু বিএএফ একাডেমি কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সমুদ্র এলাকায় এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক জোনের আকাশসীমায় সর্বক্ষণিক নজরদারির জন্য কক্সবাজারে একটি নতুন বিমান প্রতিরক্ষা রাডার স্থাপন করা হয়েছে। শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে তাঁর সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, একটি আধুনিক ও শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ইতোমধ্যেই উড্ডয়ন ভাতা বৃদ্ধি এবং জীবন বীমা নীতি সময়োপযোগী করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা জঙ্গী বিমানগুলো পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে আরও যতœবান হতে বিমান বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রতিটি পেশার লোকের জন্য দক্ষতা ও সততার কোন বিকল্প নেই। প্রত্যেককেই সুশৃঙ্খল ও দেশপ্রেমিক হতে হবে।
×