ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফ্লাইট সিডিউল বিপর্যয়

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১১ ডিসেম্বর ২০১৪

ফ্লাইট সিডিউল বিপর্যয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঘন কুয়াশা, ঠা-া বাতাস ও কনকনে শীতে বিপর্যস্ত সারাদেশ। আবহাওয়ার এমন অবস্থা আরও পাঁচদিন চলতে পারে। ঘন কুয়াশায় জল, স্থল ও আকাশপথে যান চলাচল মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। কুয়াশার কারণে বুধবারও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ওঠা-নামায় বিলম্ব হয়েছে। শীতজনিত কারণে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তীব্র শীত ও কুয়াশায় বোরো বীজতলায় ‘কোল্ড ইনজুরি’ দেখা দিয়েছে। অনেক এলাকায় সাময়িকভাবে বন্ধ থাকছে ধানের চাতালগুলো। শীতবস্ত্রের অভাবে চরম কষ্টে পড়েছে ছিন্নমূল ও দরিদ্র মানুষ। আবহাওয়াবিদরা জানান, হঠাৎ তীব্র শীত অনুভূত হওয়ার পেছনে তাপমাত্রার তেমন কোন ভূমিকা নেই। ঘন কুয়াশা, মেঘলা আকাশ ও ঠা-া বাতাসের কারণেই তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। বর্তমানে ঘন কুয়াশার কারণে বাতাসের জলীয়বাষ্প উপরে উঠতে পারছে না। শুকানোর সুযোগ পাচ্ছে না ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ। এমন অবস্থার সঙ্গে ঠা-া বাতাস যুক্ত হয়ে বাড়িয়ে দিয়েছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশার কারণে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ওঠা-নামায় বিলম্ব হয়েছে। বিমানবন্দরের পরিচালক জাকির হাসান সাংবাদিকদের জানান, বুধবার ভোর থেকে ঘন কুয়াশার কারণে বিদেশ থেকে আসা ফ্লাইটগুলো সময়মতো অবতরণ করতে পারেনি। একই কারণে বিভিন্ন ফ্লাইট সময়মতো ছেড়ে যেতেও পারেনি। অনেক আগ থেকেই ঢাকার বাইরে শীত শুরু হয়। শীতের সঙ্গে পড়তে থাকে ঘন কুয়াশা। কিন্তু ঢাকায় শীতের তেমন আমেজ ছিল না। গত রবিবার হঠাৎই রাজধানীতে তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। একদিনেই তাপমাত্রা প্রায় ৬ ডিগ্রী নেমে যায়। রবিবার ভোর থেকেই ঘন কুয়াশা পড়া শুরু হয়। বিমানবন্দরের পরিচালক আরও জানান, প্রতিবছরই শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশার কারণে সকালের ফ্লাইটগুলোর উড্ডয়নে বিলম্ব হয়। এ বছরও একই ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে খুবই সাবধানতার সঙ্গে উড়োজাহাজের উড্ডয়ন ও অবতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বুধবারও রাজধানীতে দিনের অধিকাংশ সময় শীত অনুভূত হয়। বেলা এগারোটার আগে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। দুপুরে কিছুক্ষণের জন্য সূর্য উঠলেও তেমন তেজ ছিল না। হাল্কা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা বিরাজ করে দিনভর। বিকেল সাড়ে তিনটার পর রাজধানীর আকাশ যেন কুয়াশার পুরো দখলে চলে যায়। পাশাপাশি বইতে থাকে ঠা-া বাতাস। অধিকাংশ লোকজনকে দিনভর গরম কাপড় ব্যবহার করতে দেখা গেছে। নগরীর শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। শীতবস্ত্রের দামও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে মানুষের ঢল নামে। এ সুযোগে বেড়ে যায় গরম কাপড়ের দাম। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে শীতের তীব্রতা যেন বাড়তে থাকে। কমতে থাকে পথচারীর সংখ্যাও। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, আজ বৃহস্পতিবার আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সূত্রটি আরও জানায়, ডিসেম্বর মাসে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম। এ মাসে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকবে। সংবাদদাতা, নাটোর থেকে জানান, তীব্র শীত না পড়তেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে নাটোরসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো। দুর্ভোগে পড়েছে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। ঘন কুয়াশার কারণে তারা কাজে বের হতে পারছে না। আয় না থাকায় তাদের সংসারেও অভাব-অনটনের মাত্রা বেড়েছে। সন্ধ্যা থেকে পরদিন বেলা ১২টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে আচ্ছাদিত থাকায় যানবাহনের চালকরাও পড়েছে সমস্যায়। স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে জানান, গত দু’দিন ধরে হাঁড় কাপানো শীত পড়েছে রংপুরে। বইছে হিমেল হাওয়া। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে এলাকা। তীব্র শীতে বেলা ১১টার আগে নজর থাকছে নগরীর ফুটপাথের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে; জমছে ভিড়। স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে জানান, হিমালয়ের পাদদেশীয় কুড়িগ্রাম ও তার আশপাশের এলাকায় ঘন কুয়াশা ও প্রচ- ঠা-ায় মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে চর-দ্বীপচরের কয়েক লাখ মানুষ। অবিরাম ঘন কুয়শায় হিমবায়ুতে কাহিল হয়ে পড়েছে মানুষ। বুধবারও সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। নিজস্ব সংবাদদাতা গাইবান্ধা থেকে জানান, গত তিনদিন ধরে গাইবান্ধা জেলার সর্বত্রই অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত। বুধবার হঠাৎ করেই কনকনে ঠা-া বাতাস ও ঘন কুয়াশায় মানুষ জবুথবু হয়ে পড়েছে। দিনভর সূর্যের আলো দেখা যায়নি।
×