ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১৪ দল জানুয়ারিতে সমাবেশ করবে সারাদেশে

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১২ ডিসেম্বর ২০১৪

১৪ দল জানুয়ারিতে সমাবেশ করবে সারাদেশে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের প্রথম বছরপূর্তি, বিএনপি-জামায়ত জোটের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা এবং বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- জনগণের সামনে তুলে ধরতে আগামী ১৫ থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশব্যাপী উপজেলা পর্যায়ের সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত বিভিন্ন টিম এ সমাবেশে নেতৃত্ব দেবেন। এ ছাড়া ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের পক্ষ থেকে রাজধানীতে একটি সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আগামী ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে এবং ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে ১৪ দল। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতচক্র উস্কানিমূলক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে জঙ্গীবাদকে উৎসাহিত করছে। অতীতেও বিএনপি জঙ্গীবাদ ও জামায়াতকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। তাদের কারণেই জঙ্গীচক্র বিদেশে বসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করার সাহস পাচ্ছে। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি-জামায়াত হত্যা চক্রান্তের রাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছে। তারা নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেও ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের সঙ্গে সমস্ত রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে তারা হত্যা ও চক্রান্তের রাজনীতির পথে চলে গেছে। বিএনপি-জামায়াত সম্প্রতি যে কথা বলছে, তাতে মনে হয় বর্ধমান বিস্ফোরণের চক্রান্তকারীদের সঙ্গে তাদের যোগসূত্র রয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত এখন হত্যা ও চক্রান্তের পথেই হাঁটছে। রাজনৈতিকভাবেই তাদের এসব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে। দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের পাশাপাশি বিদেশেও প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করে তারা দেশে একটি অপশক্তিকে ক্ষমতায় আনতে চায়। চৌদ্দ দলের এই মুখপাত্র বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন হয়েছি যখন ভারতের বর্ধমান চক্রান্তের কথা শুনেছি। পার্শ্ববর্তী দেশে কিছু জঙ্গী ও হত্যাকারী প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার চক্রান্ত করেছিল। তাদের বিষয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার যে ষড়যন্ত্র চলছে তাদের সমূলে উৎখাত করার জন্য ১৪ দলের নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। জনগণকেও এ জন্য সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি সরকারের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ১৪ দলের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী নির্বাচন সংবিধান মোতাবেক প্রধানমন্ত্রীর অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। এ ক্ষেত্রে কোন বিদেশী রাষ্ট্রের মতামত গ্রহণ করা হবে না। সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি এমপি, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কামরুল হাসান, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বাশার মাইজ ভা-ারী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, বৈঠকে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমামের বক্তব্যের সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন ১৪ দলের কয়েক নেতা। তাঁরা বলেন, দায়িত্বশীল পদে থেকে এ ধরনের বক্তব্য হিতে বিপরীত হয়। তাই সরকারে কিংবা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা নেতা-মন্ত্রীদের উচিত বাক সংযম করা, অতিকথন বন্ধ করা। আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে চৌদ্দ দলের শরিক জোটের নেতারা এ থেকে শিক্ষা নিয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন।
×