ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রুনা খানের নিজেরও ইচ্ছা ছিল সিরিয়া যাওয়ার

ফেসবুকে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ব্রিটেনে মায়ের কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ০৩:০৩, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪

ফেসবুকে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেয়ার  অভিযোগে ব্রিটেনে  মায়ের কারাদণ্ড

ফেসবুকে সন্ত্রাসবাদ উৎসাহিত করার অভিযোগে ছয় সন্তানের এক উগ্রপন্থী মাকে ৫ বছর ৩ মাস কারাদণ্ড দিয়েছে লন্ডনের একটি আদালত। লুটনের বাসিন্দা ৩৫ বছর বয়সের এ মহিলা মাত্র হাঁটতে শিখেছে তার এমন এক শিশুছেলের হাতে খেলনা বন্দুক তুলে দিয়ে তার ছবি তুলেছেন এবং তার ৮ বছর বয়সের ভাইটি আরেকটু বেড়ে উঠলে তাকে জিহাদে পাঠাবার দিবাস্বপ্ন দেখছেন। খবর গার্র্ডিয়ান অনলাইনের। রুনা খান নামের এ নারী মুসলিম মহিলাদের উৎসাহিত করেন, যাতে তারা তাদের পুরুষ আত্মীয়দের লড়াই করতে আহ্বান করেন। তিনি তার মতামত তুলে ধরেন ফেসবুকে এবং সেখানে তিনি আত্মঘাতী বোমা লুকিয়ে রাখা পোশাকের একটি চিত্রও প্রকাশ করেন। শিশুদের কীভাবে জিহাদের জন্য প্রস্তুত করা যায় এবং একজন পুলিশ কর্মকর্তার ছদ্মবেশে অজ্ঞাতসারে কীভাবে সিরিয়া যাওয়ার পথ পাড়ি দেয়া যায় সেসব বিষয়ে আভাস দিয়ে একটি নিবন্ধ লেখেছেন রুনা খান। হোয়াটস আপে বেশ কিছু বার্তায় সিরিয়া যাওয়ার জন্য তার মরিয়া মনোভাব বার বার প্রকাশ পায়। খান ব্রিটিশ সৈন্য লি রাগবিকে হত্যা করার ঘটনাটিকে মহিমান্বিত করেছেন বলেও দৃশ্যত প্রতীয়মান হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের সময় তার ফোনে একটি ছবি ও একটি জিহাদী বই পায় পুলিশ। ছবিতে দেখা যায়, তার দু’বছরের শিশুপুত্রের হাতে একটি খেলনা এ্যাসল্ট রাইফেল। তার ও তার অন্য সন্তানদের একটি তরবারি ধরে রাখার ছবিতে দেখা যায়। কিংস্টন ক্রাউন আদালতে এসব কথা জানানো হয়। আদালতে বলা হয়, ২০১৩-এর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সন্ত্রাসী প্রকাশনা প্রচারের জন্য আনীত চারটি অভিযোগই স্বীকার করেন রুনা খান। তার একটি ফেসবুক পোস্টে লেখা রয়েছেÑকী করে এবং কখন তার ৮ বছর বয়সের ছেলেকে বাইরে লড়তে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করেন তিনি। তিনি স্বপ্ন দেখেনÑকী করে ভবিষ্যতে একটি রাইফেল দেবেন ছেলেকে। তিনি সিরিয়ায় লড়াইরত এক পুরুষকে লেখা বার্তায় বলেছেন, তার ছোট্ট ছেলের সঙ্গে সিরিয়ায় চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। বিচারক পিটার বার্টস কিউসি দ- প্রদানকালে রুনা খানকে একজন কট্টর মৌলবাদী ইসলামপন্থী বলে অবহিত করেন। তিনি রুনার উদ্দেশে বলেন, আপনি এমন মতবাদ পোষণ করেন যা ইসলামী কর্তব্যের একটি অত্যাবশ্যক অংশ হিসেবে জিহাদকে সমর্থন করে। আমি আপনাকে দ- দিচ্ছি আপনার বিশ্বাসের জন্য নয়। শাস্তি দিচ্ছি, অন্যকে সুস্পষ্ট অভিসন্ধি নিয়ে সন্ত্রাসবাদ প্রচারে আপনার তৎপরতার জন্য। তার অনলাইন তৎপরতার উল্লেখ করে বিচারক বলেন, আপনার বিশেষ ধরনের সহিংস মৌলবাদ ছড়িয়ে দেয়া এবং অন্যকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করাই ছিল আপনার উদ্দেশ্য। খুব ছোট্ট শিশুসহ অন্যদের সহিংস জিহাদী চরমপন্থীতে পরিণত করতে আপনি বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, আপনার শিশুসন্তানদের উগ্রপন্থী করে তোলার পরিণাম সম্পর্কে আপনার কোন বোধ নেই। আপনি আপনার স্বার্থে তাদের ওপর বিশ্বাস ও ধারণা চাপিয়ে দিচ্ছেন। তাদের কল্যাণ ও শুভ দিকগুলোর উপরে স্থান দিচ্ছেন আপনার পছন্দকে।
×