ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা বগুড়ায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর এখন ঘরবন্দী

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪

ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা বগুড়ায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর এখন ঘরবন্দী

সমুদ্র হক ॥ প্রজন্মের কাছে বাঙালীর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চিরন্তন করে ধরে রাখতে বগুড়ায় ব্যক্তি উদোগে যে স্মৃতি জাদুঘর গড়ে তোলা হয়েছিল তা জায়গার অভাবে সর্বস্তরের মানুষের জন্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা যায়নি। এসব স্মৃতির সংগ্রাহক বগুড়ার বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বগুড়া থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না কয়েক বছর ধরে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনা দিয়ে আবেদন নিবেদন করেও কোন সাড়া পাচ্ছেন না। ১৯৯০ সালে তাঁর দুর্লভ সংগ্রহ দিয়েই বগুড়া শহরের এডওয়ার্ড পার্কে অবস্থিত উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরীর পশ্চিম দিকে স্বল্প পরিসরে স্মৃতি চিহ্ন প্রদর্শনের জায়গা করে দেন তৎকালীন চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম মন্টু। এরপর নতুন চেয়ারম্যান এসে লাইব্রেরী সংস্কারের কাজ শুরু করলে তা সরিয়ে রাখা হয়। সংস্কারের পর এই স্মৃতি জাদুঘরের কিছু জিনিস একটি ঘরে বন্ধ করে রাখা হয়। যা প্রদর্শনের ব্যবস্থা হয়নি। সংগ্রাহক ময়না মূল্যবান জিনিসগুলো নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে যতেœর সঙ্গে সংরক্ষণ করছেন। অপেক্ষায় আছেন কবে এসব সংগ্রহ প্রদর্শনের জন্য কর্তৃপক্ষ জায়গা করে দেবে। ১৯৯০ সালের ২৬ মার্চ উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরীর ভিতরে এই স্মৃতি জাদুঘরের উদ্বোধন করেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ানের বাবা শাহাদৎ খন্দকার। স্মৃতি জাদুঘরে স্থান পায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত পোশাক মুজিব কোট ও জিনিসপত্র। মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর যে বিমান ভূপাতিত করেছিল তা চাকা, গেরিলা যুদ্ধে ব্যবহৃত স্থল মাইন (ডিফিউজ করা), অকেজো করে রাখা গ্রেনেড, রাইফেল, মুক্তিযোদ্ধা আজাদের ব্যবহৃত ঘড়ি শার্ট তোয়ালে, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা চান্দুর ব্যবহৃত কোট, টাই, শহীদ মাসুদের ব্যবহৃত সার্ট, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডাঃ কছির উদ্দিনের (কণ্ঠ শিল্পী আঞ্জুমুনারা বেগমের বাবা) ব্যবহৃত চেয়ার, দুর্লভ আলোকচিত্র প্রায় ৩শ’টি, বগুড়ায় প্রথম উড়ানো বাংলাদেশের পতাকা, সংবাদপত্রের ক্লিপিংস, মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত বুট জুতা, হেলমেট, হানাদার পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর লাশ বহনের কফিন মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব গাঁথা অনেক ছবি।
×