ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার কৃতিত্ব জাতীয় পার্টির ॥ বাবলু

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪

সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার কৃতিত্ব জাতীয় পার্টির ॥ বাবলু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কৌশলগত কারণে সরকারে আছে জাতীয় পার্টি। জাপা সরকারের পার্টনার নয়। তাই সরকারের দুর্নীতি, দুঃশাসন, গুম ও খুনের দায়িত্ব জাতীয় পার্টি নেবে না। তাছাড়া সারাদেশে সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন চায় দলটি। শনিবার রাজধানীর বনানী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। তিনি বলেন, শোনা যাচ্ছে সরকার গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়াবে। আমরা বলতে চাই যেদিন থেকে গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে, সেদিন থেকে জাতীয় পার্টি রাস্তায় নামবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ গণবিপ্লব চালিয়ে যাবে। এর আগে ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকেও সরকারের কোন ব্যর্থতার দায় নেয়া হবে না বলেও জানানো হয়েছিল। এবার বিরোধী দলের পক্ষ থেকে একই কথা বলা হয়েছে। যদিও দু’দলের পক্ষ থেকেই মন্ত্রিপরিষদে সদস্য রয়েছে। ১৯৮৬ সালের এক জানুয়ারি এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির যাত্রা শুরু হয়েছিল। আগামী ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করা হবে। এ উপলক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। বাবলু বলেন, আওয়ামী লীগের অত্যাচার, নির্যাতন আর গুম-খুনের প্রতিবাদে সমাবেশে সারাদেশ থেকে ১০ লাখ মানুষের জমায়েত ঘটানো হবে। বিশাল লোক সমাগম ঘটিয়ে জানান দিতে চাই, সরকারের বিরুদ্ধে মানুষ অবস্থান নিয়েছে। সমাবেশ থকে জাপা চেয়ারম্যান আগামী এক বছরের রাজনৈতিক কর্মসূচী ঘোষণা করবেন। স্মরণকালের সর্ববৃহত এই জনসভা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ধারা সৃষ্টি করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। কোন কৌশলের কারণে জাতীয় পার্টি সরকারে রয়েছে তা জানতে চাইলে বাবলু বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে সারাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকা- চলছিল। মানুষ তখন শান্তি, স্বস্তি ও নিরাপত্তা চাইছিল। জাতিকে তখন ঐক্যবদ্ধ করতে ও শান্তি ফেরাতে আমরা সরকারে যোগ দিয়েছিলাম। তিনি বলেন, সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা ও দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার পেছনে আওয়ামী লীগের নয়, কৃতিত্ব সব জাতীয় পার্টির। জাতীয় পার্টির তিনজন বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় রয়েছেন। তার পরও কীভাবে জাতীয় পার্টি সরকারের পার্টনার নয় এ কথা জানতে চাইলে দলের মহাসচিব বলেন, ‘৫০ জনের মন্ত্রিসভায় তিনজনের থাকা না-থাকায় সরকারের নীতির সঙ্গে কোনো তফাত নেই। আমরা আছি অন্য প্রেক্ষাপটে। জনগণকে মেসেজ দেয়ার জন্য। মন্ত্রীদের পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পদত্যাগের ব্যাপারে হঠকারী ও সুবিধাবাদী রাজনীতির সুযোগ নিতে চাই না। দলের সর্বোচ্চ ফোরামে আলোচনা করে মন্ত্রিসভায় থাকা না থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান তিনি। আমরা নতুন কৌশলে এগিয়ে যাব। রাজপথে সরকার পতনের আন্দোলন আমরা বিশ্বাস করি না একথা উল্লেখ করে বাবলু বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে গণবিপ্লব করতে চাই। তবে তা গাড়ি ভাঙচুর, গাছ কাটা ও রেললাইন উপড়ে ফেলাসহ সহিংসতার মধ্য দিয়ে নয়। গণবিপ্লব সরকার পতনের লক্ষ্যে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজপথের আন্দোলনে সরকার পতন আমরা বিশ্বাস করি না। এটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়। অপরাজনীতি। সরকার পরিবর্তনের পদ্ধতি হলো দুটি। একটি হলো সংসদে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা, অন্যটি হলো নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন। আমরা সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনের জন্য এগিয়ে যেতে চাই। বিরোধী দল হয়ে সরকারে থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদাহরণ সৃষ্টি করতে চায় জাতীয় পার্টি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ হোসেন বাবলা, এস এম ফয়সল চিশতী, এ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, এম এ হান্নান, আবুল কাশেম, সাইদুর রহমান টেপা, মনিরুল ইসলাম মিলনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
×