ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ বেতারের হীরকজয়ন্তী আজ ॥ বর্ণাঢ্য আয়োজন

প্রকাশিত: ০৪:৫৩, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪

বাংলাদেশ বেতারের হীরকজয়ন্তী আজ ॥ বর্ণাঢ্য আয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গৌরবের ৭৫ বছর পূর্ণ করল রাষ্ট্রীয় রেডিও স্টেশন বাংলাদেশ বেতার। আজ সোমবার মহা আয়োজনে উদযাপন করা হবে হীরকজয়ন্তী। চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘বাংলাদেশ বেতার’ সরকার পরিচালিত রাষ্ট্রীয় বেতার সংস্থা। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এটি রেডিও বাংলাদেশ নামে পরিচিত ছিল। ১৯৩৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকাতে এই রেডিওর সম্প্রচার শুরু হয়। প্রথম দিকে কেন্দ্রটি ছিল পুরনো ঢাকায়। বর্তমানে এর প্রধান কার্যালয় শাহবাগে অবস্থিত। সাধারণ মানুষের নির্মল বিনোদন নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই বেতার দেশীয় সংস্কৃতি লালন ও পরিচর্যা করে আসছে। বেসরকারী রেডিওর অশুদ্ধ উচ্চারণ, ভাষা বিকৃতির এই কালেও নিজস্ব কৃষ্টি আকড়ে ধরে লড়াই করে যাচ্ছে বাংলাদেশ বেতার। এই বেতারের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ছিল মুক্তিযুদ্ধের সময়। তখন এই রেডিও অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের সম্প্রচার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার কথা জানানো হয়। বার বার সম্প্রচার করা হয়। তখন এই বেতার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র নামে পরিচিত ছিল। ভারি গোলাবর্ষণের কারণে বেতার কেন্দ্রটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হলে ২৫ মে কলকাতাতে সরিয়ে নেয়া হয়। যুদ্ধের বাকি সময় কলকাতা থেকে সম্প্রচার চলে। ৬ ডিসেম্বর বেতার কেন্দ্রটি বাংলাদেশ বেতার নামে নতুন করে যাত্রা শুরু করে। ঘটনাবহুল বেতারের হীরকজয়ন্তী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা হাতে নেয়া হয়েছে। আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ বেতার ভবন চত্বরে আজ ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে হীরকজয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে সাজ সাজ রব এখন গোটা ভবনে। বেতার সূত্র জানায়, এর আগে সকাল ১০টায় শাহবাগের সদর দফতর থেকে শুভাযাত্রা বের করা হবে। এতে নেতৃত্ব দেবেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এরপর চলবে শুভেচ্ছা বিনিময়। সন্ধ্যায় একই স্থানে প্রামাণ্য ভিডিও প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। অনুষ্ঠানে ‘শোন একটি মজিবরের থেকে’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করবে শিবলী মোহাম্মদ, শামীম আরা নীপা ও তাঁদের দল। ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ গানের সঙ্গে নাচবেন লিখন ও নাদিয়া জুটি। অনুষ্ঠানে নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করবেন ইয়াসমীন মুসতারী। বিশেষ একটি পর্ব থাকবে সাবিনা ইয়াসমিনের জন্য। এ পর্বে খ্যাতিমান শিল্পী নিজের জনপ্রিয় গান গাইবেন। থাকবে সমবেত যন্ত্রসঙ্গীত অর্কেস্ট্রা। আজাদ মিন্টুর পরিচালনায় শিল্পীরা ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কে তুলে ধরবেন। দ্বিতীয় দিন ১৬ ডিসেম্বর বিকেল থেকে শুরু উদযাপন। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হবে অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসঙ্গীত, লালন গীতি থেকে শুরু করে থাকবে পট গান, টমটমের গান, গম্ভীরা, পুঁথি পাঠ, সিলেটের লোককবিদের গান, ভাওয়াইয়া, বিয়ের গীত, ধামের গানসহ বহুবিধ আয়োজন। শাস্ত্রীয় যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশন করবেন গাজী আবদুল হাকিম ও ফিরোজ খান। নৃত্যায়োজনে থাকবে চাকমা জুম নাচ, ত্রিপুরা বোতল নাচ ও লুসাই ব্যাম্বু নাচের মতো আকর্ষণীয় পরিবেশনা। এ ছাড়াও থাকবে কবিতা আবৃত্তি।
×