ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গেটাফেতে ধাক্কায় আরও পিছিয়ে পড়ল বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪

গেটাফেতে ধাক্কায় আরও পিছিয়ে পড়ল বার্সিলোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এ্যাওয়ে ম্যাচে আবারও ব্যর্থতার স্বাক্ষর রাখলেন লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ, জাভি হার্নান্দেজরা। খেলেননি ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার। ফলাফল ফের ধাক্কা খেয়েছে বার্সিলোনা। শনিবার স্প্যানিশ লা লিগার এ্যাওয়ে ম্যাচে কাতালানরা গোলশূন্য ড্র করে স্বাগতিক গেটাফের সঙ্গে। ফলে শিরোপা লড়াইয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে আরও পিছিয়ে পড়ল বার্সা। কর্ডোবা ও লেভান্তের মধ্যকার গ্রুপের আরেক ম্যাচটিও গোলশূন্য ড্র হয়। অপর দুই ম্যাচে ভ্যালেন্সিয়া সহজেই ৩-০ গোলে রায়ো ভায়োকানোকে ও মালাগা ১-০ গোলে পরাজিত করে সেল্টা ডি ভিগোকে। আরেক দফা ধাক্কা খেয়ে বার্সিলোনার পয়েন্ট এখন ৩৫। লুইস এনরিকের দল ম্যাচ খেলেছে ১৫টি। সমান ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে অপ্রতিরোধ্য রিয়াল মাদ্রিদ। রবিবারের ম্যাচের আগ পর্যন্ত ১৪ ম্যাচে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। গেটাফের ঘরের মাঠ কলিসেউম আলফনসোতে আতিথ্য গ্রহণ করে বার্সিলোনা। বরাবরের মতো ম্যাচে একতরফা আধিপত্য বিস্তার করে খেলে স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। কিন্তু মেসি, সুয়ারেজ, জাভিদের আক্রমণ তেমন সংঘবদ্ধ হয়নি। ম্যাচে মোট ২৩ প্রচেষ্টার একটিও গোলে পরিণত করতে না পারাটা বার্সার জন্য বিরাট ব্যর্থতা। এর মধ্যে মাত্র দুটি প্রচেষ্টা গোলমুখে যায়। দুটোই মেসির ফ্রিকিক। এই দুটি শটের একটি আবার বারপোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ম্যাচের ৫২ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ ফ্রিকিক নিয়েছিলেন মেসি। গেটাফের গোলরক্ষক হার মানলেও ব্রাজিল বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলারকে গোলবঞ্চিত করে বারপোস্ট। ফলে আবারও বারপোস্ট ঘাতক হিসেবে আবির্ভূত হয় আর্জেন্টাইন অধিনায়কের। তবে এ্যাওয়ে ম্যাচে মেসির ব্যর্থতা আরেকবার প্রকট হয়ে দেখা যায়। এই ম্যাচটিসহ সর্বশেষ ১৩ এ্যাওয়ে ম্যাচে মেসি গোল পেয়েছেন মাত্র দুটি। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সর্বশেষ ম্যাচের মতো গেটাফের বিরুদ্ধেও ৪-৩-৩ ফরমেটে দলকে খেলান বার্সা কোচ লুইস এনরিকে। এই ফরমেটে শুরু থেকেই নিজেদের মধ্যে বল আদান-প্রদান করে খেলতে থাকেন মেসি, সুয়ারেজ, পেড্রো, জাভি, রাকিটিচরা। ম্যাচের ২৬ মিনিটে জাভির কাছ থেকে বল পান সুয়ারেজ। কিন্তু ২৫ গজ দূর থেকে উরুগুইয়ান তারকার নেয়া শট গোলবারের ওপর দিয়ে যায়। ৩৩ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিল স্বাগতিক গেটাফে। এ্যালেক্সিজ ও লাফিটার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন বার্সা গোলরক্ষক ব্রাভো। ৪১ মিনিটে ইভান রাকিটিচের প্রচেষ্টাও গোলে পরিণত হয়নি। গোলশূন্যভাবে শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা। বিরতির পর ৫২ মিনিটে মেসির ফ্রিকিক বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে। এর ছয় মিনিট পরে মেসির নিচু করে মারা ফ্রিকিক স্বাগতিক গোলরক্ষক গুয়াইটা রুখে দেন। ৬৯ মিনিটে জর্ডি এ্যালবার ক্রস থেকে হেডে গোল করার সুযোগ নষ্ট করেন বার্সা ডায়মন্ড। বাকি সময়ে তেমন ভাল সুযোগ সৃষ্টি করতে না পারায় ড্র’র হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বার্সিলোনাকে। পুরো ম্যাচে ৭৬ শতাংশ বল নিজেদের পায়ে রেখেও গোলের দেখা পায়নি কাতালানরা। ম্যাচে নেইমারের অভাব অনুভূত হয়েছে বলে দাবি করেন জনৈক এক বার্সা সমর্থক। ম্যাচ শেষে কলিসেউম আলফনসোতের নিম্নমানের মাঠের সমালোচনা করেন বার্সিলোনার ক্রীড়া পরিচালক এ্যান্ডোনি জুবিজারেটা। তিনি বলেন, ম্যাচ শুরুর সময় আর মাঠের বাজে অবস্থা আমাদের ভাল খেলতে অসুবিধার সৃষ্টি করেছে। তবে ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’ না বলে নিজেদের খেলার সমালোচনা করেছেন বার্সা কোচ লুইস এনরিকে। তিনি বলেন, আমরা একটা সময় রিয়ালে চেয়ে পয়েন্ট তালিকায় এগিয়ে ছিলাম। এখন পিছিয়ে পড়েছি। সত্যি বলতে কি, মুদ্রার অন্য পিঠটি দেখব ভাবিনি। এই ম্যাচে প্রতিপক্ষের চেয়ে আমরা অনেক এগিয়ে ছিলাম। কিন্তু এসব বলার আগে ভেবে দেখা দরকার ম্যাচে আমরা কয়টি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছি। হতাশা প্রকাশ করে বার্সা মিডফিল্ডার জাভি হার্নান্দেজ বলেন, এই ড্রতে আমাদের একটি নেতিবাচক ফলাফল এসেছে। তবে আমরা এখানে এসেছিলাম নিজেদের শতভাগ নিয়ে। এখনও এই প্রতিযোগিতার অনেক সময় বাকি। তবে আমরা আরও একধাপ পিছিয়ে গেলাম। তবে ব্যর্থতার জন্য বার্সা যাই বলুক না কেন, গেটাফের পরিকল্পনা সফল হয়েছে শতভাগ। ম্যাচটির আগে দলটির কোচ মেসিসহ বার্সাকে রোখার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন।
×