ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শ্যালা রুট বন্ধ হওয়ায় মংলা বন্দরে বিরূপ প্রভাব পড়েছে

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪

শ্যালা রুট বন্ধ হওয়ায় মংলা বন্দরে বিরূপ প্রভাব পড়েছে

বাবুল সরদার, বাগেরহাট থেকে ॥ সুন্দরবনে তেলের ট্যাঙ্কারডুবির ঘটনার পর শ্যালা রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে মংলা বন্দরে। গত ছয় দিনে জাহাজ আগমন-নির্গমন যেমন কমে গেছে তেমনি বন্দরে জাহাজ থেকে মালামাল ওঠা-নামার কাজও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আমদানিকারক, শিপিং এজেন্ট, ব্যবসায়ী ও বন্দর ব্যবহারকারীরা পড়েছেন বিপাকে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বন্দরের রাজস্ব আদায়ও। আর সুনাম নষ্ট হচ্ছে দেশের এই দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দরের। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হলে আবারও মুখথুবড়ে পড়ার আশঙ্কা বন্দরসংশ্লিদের। এদিকে ২/১ দিনের মধ্যে নৌরুটটি খুলে না দিলে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে বন্দর ব্যবহারকারীদের সংগঠনগুলো। বিআইডব্লিউিটিএ খুলনার উপ-পরিচালক আশরাফ হোসেন জানান, ২০১০ সালে মংলা বন্দরে আন্তর্জাতিক নৌরুট ঘসিয়াখালী চ্যানেল ভরাট হয়ে বন্ধ হওয়ায় বিঘেœর সৃষ্টি হয় বন্দরে জাহাজ চলাচলে। ওই সময় দ্রুত চ্যানেলটির ড্রেজিং সম্ভব না হওয়ায় ২০১১ সালের এপ্রিলে মংলা বন্দরকে সচল রাখা ও ব্যবসা বাণিজ্যসহ দেশের অর্থনীতির বিবেচনায় বাধ্য হয়েই সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে নৌরুট চালু করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। কোন বিকল্প না থাকায় এ রুট দিয়েই নৌযান চলাচল অব্যাহত রাখা হয়। মংলা বন্দরের আন্তর্জাতিক নৌরুট ঘসিয়াখালী চ্যানেল ইতোমধ্যেই ড্রেজিং শুরু হয়েছে। এগারোটি ড্রেজার দিয়ে খনন কাজ চলছে। এ কাজ শেষ হলেই সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে রুট বন্ধ করে দেয়া হবে। মংলা বন্দর চেয়ারম্যান কমোডর হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া জানান, শ্যালা নদীর নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে এক শ’ নৌযান ও মাদার ভেসেল থেকে মালামাল ওঠা-নামার জন্য লাইটারেজ যাতায়াত করে। গত ৯ ডিসেম্বর শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাঙ্কারডুবির পর ওই নৌরুটে জাহাজসহ সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে লাইটারেজ আসতে না পারায় মংলা বন্দরে থাকা দশটি মাদার ভেসেল থেকে আমদানিকৃত মালামাল খালাস প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ক্ষতির শিকার হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। আর সুনাম নষ্ট হচ্ছে দেশের এই দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দরের। নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানও পরিদর্শনে এসে শ্যালা রুটে জাহাজসহ সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় বিরূপ প্রভাবের কথা স্বীকার করেন। মংলা বন্দর ব্যবহারকারী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সাইফুল ইসলাম জানান, দিনের পর দিন এভাবে চ্যানেল বন্ধের কারণে চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছেন তাঁরা। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দীর্ঘ এক দশক পর লোকসান কাটিয়ে লাভে ফেরা মংলা বন্দর আবারও মুখথুবড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। দ্রুত নৌরুট চালু করা না হলে তারা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন। তবে নৌমন্ত্রী বলেছেন, ঘসিয়াখালীর চ্যানেল আগামী এক বছরের মধ্যে চালু হবে। এ সময়ে বর্তমান শ্যালা নদীর রুটটি বন্ধ করে কচিখালী বা সুপতি হয়ে বিকল্প রুট চালু করার বিষয়টি সরকার খতিয়ে দেখছে। তাঁর মতে, কচিখালী বা সুপতির বড় নদী হয়ে আপাতত নৌযান চলাচল করলে ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম থাকবে।
×