ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রুবলের ধসে বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা, যা ঘটছে তা দুঃস্বপ্ন ॥ রুশ কেন্দ্রীয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪

রুবলের ধসে বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা, যা ঘটছে তা দুঃস্বপ্ন ॥ রুশ কেন্দ্রীয়

রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের ক্রমশ মূল্যহ্রাস দেশটির জন্য অর্থনৈতিক দুর্দশা এবং বিশ্ব অর্থনীতির জন্য নতুন অনিশ্চয়তার আভাস দিচ্ছে। রাশিয়া এর অর্থনীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের ওপর সোভিয়েত ধাঁচের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে বাধ্য হতে পারে। এর আগে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেয়া কড়া ব্যবস্থা রুবলের মূলমানের পতন রোধ করতে ব্যর্থ হয়। খবর টেলিগ্রাফ ও ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটরের। রুবলের মূল্যমান তেলের দাম কমার পাশাপাশি হ্রাস পাচ্ছে। তেল রাশিয়ার অর্থনীতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মঙ্গলবার সেন্ট্রাল ব্যাংক অব রাশিয়া রাতারাতি সুদের হারে বড় রকমের বৃদ্ধি ঘটালেও রুবলের পতন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। রুশ মুদ্রার মূল্যমান হ্রাস পেয়ে ১০০ রুবল এক ইউরোর সমান হয়ে দাঁড়ায়। রাশিয়াতে সুদের হার বৃদ্ধি করে শতকরা ১৭ ভাগ করা হলেও দেশটি থেকে পুঁজি পাচার অব্যাহত থাকে। সেন্ট্রাল ব্যাংকের ভাইস-চেয়ারম্যান সার্গেই শভেতসভ বলেন, পরিস্থিতি সঙ্কটময়। যা ঘটছে তা দুঃস্বপ্ন। আমরা এক বছর আগেও এটা অনুমান করতে পারিনি। রাশিয়ার জন্য এর অর্থ পরিষ্কার: সেখানে ২০১৫ সালে মন্দা দেখা দেবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হচ্ছে। তবে সেই মন্দা কত গভীর ও কত দীর্ঘস্থায়ী হবে, সেটিই প্রধান প্রশ্ন। বিশ্ব অর্থনীতির জন্য রুবল পতনের তাৎপর্য আরও অস্পষ্ট। হয়ত রাশিয়ার অর্থনৈতিক দুর্দশা তেমন গুরুত্ব বহন করে না। বিশ্বের অর্থনৈতিক কর্মকা-ের কেবল এক ক্ষুদ্র অংশই রাশিয়াতে সম্পন্ন হয়। কিন্তু রাশিয়ার আলোড়ন পেট্রোলিয়ামের দামের পতন কিভাবে তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জন্য ভবিষ্যতে অস্থিরতা ডেকে আনতে পারে, তা স্মরণ করিয়ে দেয়। আর এটি রাশিয়ার রাজনীতি ও বৈদেশিক নীতি সম্পর্কে নতুন অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করেছে। যখন ভøাদিমির পুতিন ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চাইবেন এবং রুশরা কঠোর মুদ্রানীতি ও পাশ্চাত্যের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে চাপের মধ্যে পড়বে তখন কঠিন আর্থিক পরিস্থিতি নতুন নতুন বিপদের জন্ম দিতে পারে। এখন এটি স্পষ্ট যে, রাশিয়া রুবল নিয়ে যে সঙ্কটে পড়েছে, তা রোধ করা কঠিন। সেন্ট্রাল ব্যাংক অব রাশিয়া এর সুদের হার রাতারাতি ৬ দশমিক ৫০ ভাগ বৃদ্ধি করে। এর এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে সুদের হার শতকরা ১ ভাগ বাড়ানো হয়েছিল। ঐ উদ্যোগ সত্ত্বেও মুদ্রার মূল্যমান মঙ্গলবার আরও হ্রাস পায়। পূর্বাভাসদানকারী প্রতিষ্ঠান আইএইচএস গ্লোবাল ইনসাইটের অর্থনীতিবিদ চার্লস মোভিট এক ই-মেল বিশ্লেষণে বলেন, রুবলের গতিপ্রকৃতি সুদের হার সম্পর্কিত নীতির চেয়ে বরং পতনের দাম ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ওপরই বেশি নির্ভর করবে। বিশ্ব জুড়ে তেল উৎপাদন বৃদ্ধি ও সেই তুলনায় এর চাহিদা কমে যাওয়া এবং তেলের বাজারে নিজের অবস্থান বজায় রাখতে সৌদি আরবের দৃঢ়তার ফলে তেলের দাম এক ঐতিহাসিক মাত্রায় হ্রাস পেয়েছে। রাশিয়া অপেক্ষাকৃত বেশি খরচে তেল উৎপাদন করে থাকে, কিন্তু সরকারী রাজস্বের অন্যতম উৎস হিসেবে তেলের ওপর খুবই নির্ভরশীল।
×