ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে স্রোতের আবৃত্তি প্রযোজনা ‘ইতিহীন ইতিকথা’

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২১ ডিসেম্বর ২০১৪

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে স্রোতের আবৃত্তি প্রযোজনা ‘ইতিহীন ইতিকথা’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পথচলার ২৬ বছর পূর্ণ করেছে আবৃত্তি সংগঠন স্রোত আবৃত্তি সংসদ। সেই সাফল্যের উদযাপন হিসেবে ‘মুক্তমনে অযুত প্রাণে চলব পথ সমুখ পানে’ সেøাগানে শনিবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন করা হয়। শীতের সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হয় আবৃত্তি প্রযোজনা ইতিহীন ইতিকথা। মাহফুজ রিজভীর গ্রন্থনায় প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন মাহফুজ মাসুম। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহ্কামউল্লাহ্। স্রোতের সদস্যদের আত্মজরা দর্শকদের ফুল ছিটিয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। আয়োজনটি উৎসর্গ করা হয় সদ্যপ্রয়াত বরেণ্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী এবং শিক্ষাবিদ ও কবি অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীকে। অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে পাকিস্তানের পেশোয়ারে শিশুদের ওপর নির্বিচারে সাম্প্রদায়িক জঙ্গীদের বর্বর গুলিবর্ষণ এবং অস্ট্রেলিয়ায় শিশুদের ওপর নির্মম ছুরিকাঘাতের প্রতিবাদে পালন করা হয় এক মিনিটের নীরবতা। বাংলা নামের এই বিশাল ভূখ-ের ইতিহাস দ্বন্দ্ব-লড়াই-যুদ্ধ-সংগ্রামের ইতিহাস; পরবর্তীতে বৌদ্ধ, হিন্দু, মুসলমান, যবন, পর্তুগিজ, ফরাসী, কিংবা ব্রিটিশদের শাসন-শোষণ, পাকিস্তানী শাসন, সামরিক শাসন, স্বৈরাচারী শোষণ, মৌলবাদ আর সাম্প্রদায়িক শক্তির আস্ফালন, সেই সঙ্গে কূটনৈতিক কূটচাল এবং সভ্যতার ভিন্ন ভিন্ন অধ্যায়ে অসংখ্য মানুষের হাজার বছরের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও বিজয়ের, অর্জন আর ত্যাগের গৌরবময় কিংবদন্তির কথা বলা হয়েছে আবৃত্তি প্রযোজনা ইতিহীন ইতিকথায়। প্রযোজনায় চর্যাপদ কবি লুই, আব্দুল মওদুদ, রাহুল সংকৃত্যায়ন, সব্যসাচী দেব, শওকত আলী, কাজী নজরুল ইসলাম, অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত, মূর্তজা বশির, মনিভূষণ ভট্টাচার্য, শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক ও হুমায়ুন আজাদের কবিতার সম্মেলন ঘটেছে। আর কবিতার দোলায়িত ছন্দের শিল্পিত উচ্চারণে আবৃত্তি পরিবেশন করেন স্রোতের আবৃত্তিশিল্পী শাওন হাসনাত, আমেনা খাতুন, তাপস হাওলাদার, শান্তা শ্রাবণী, আজিম রানা, মাহফুজ মাসুম, মাসুদুজ্জামান, স্নিগ্ধা সরকার, প্রজ্ঞা হক, জিনাত সুলতানা লিভা, মাহফুজ তুহিন, অনিমেষ রাইয়ান, ফাতেমা সেতু, ফেরদৌস শৈলী, রওজাতুল জান্নাত, ফারহানা আক্তার, আলমগীর ইব্রাহিম, নিলুফার ইয়াসমিন, উম্মে হানী শৈলী, মাহফুজ রিজভী, তরুময় পাভেল ও ফকরুল ইসলাম তারা। কবিতা সংকলন মেঘ বালিকার প্রকাশনা ॥ বরেণ্য মঞ্চাভিনেতা ও নির্দেশক খালেদ খান যুবরাজের প্রথম প্রয়াণ দিবসে শনিবার প্রকাশিত হলো তাঁর ও শ্যামা হাইয়ের কণ্ঠে ধারণকৃত কবিতা সংকলন ‘মেঘ বালিকা’। বেঙ্গল ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত এ্যালবামটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে। খালেদ খান বিভিন্ন সময়ে বাংলাভাষার কবিদের কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন, সে সব আবৃত্তির রের্কড থেকেই এ্যালবামটি সংকলিত। এ্যালবামটিতে শ্যামা হাই খালেদ খানের সঙ্গে সাতটি কবিতায় যুগ্ম আবৃত্তি করেছেন। সান্ধ্যকালীন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সংকলনের মোড়ক উন্মোচন করেন নাট্যজন আলী যাকের। এ্যালবামটিতে পূর্ণেন্দু পত্রী, জয় গোস্বামী, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, মনোয়ার সুলতান, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, নির্মলেন্দু গুণ, কবিতা সিংহের কবিতা সংকলিত করা হয়েছে। যন্ত্রসঙ্গীত পরিচালনা করেছেন বাপ্পা মজুমদার। অনুষ্ঠানে আবৃত্তি সংকলন থেকে কয়েকটি কবিতা পাঠ করে শোনান বাচিকশিল্পী হাসান আরিফ। সম্মেলক সঙ্গীত পরিবেশন করেন যুবরাজের প্রিয় শিল্পীরা। এ্যালবামটিতে ঠাঁই পাওয়া কবিতাগুলো হলোÑ আয়নার সামনে একটু অন্ধকার, আমি যখন ছোট ছিলাম, কি চাও আমার কাছে, আমি তোমারে করিব নিবেদন, বাতাসের ভিতরেও, তোমার কাছে চেয়েছিলাম, আজ সব খুলে দিও, এখন একটু চোখে চোখে রাখ, সেই কবে কতদিন আগে, আমার হাতের উপর, আমার এমন কিছু দুঃখ আছে, তুমি বললে রৌদ্রে যাও, কি করে অন্যের হবে তুমি, তুমি চলে যাচ্ছ, সংসার মানে সোনার কাঁকনে, এইমাত্র এক লক্ষ মিথ্যা, সে যদি তোমাকে ও আমরা দুজনে হেঁটেছিলাম। একাত্তরের গণহত্যাবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ॥ ঢাকা আর্ট সেন্টারের সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রামাণ্যচিত্র পর্ষদ প্রতিমাসে নিয়মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করছে। এর অংশ হিসেবে শনিবার বিকেলে ধানমন্ডির আর্ট সেন্টার মিলনায়তনে প্রদর্শিত হয় একাত্তরে সংঘটিত গণহত্যাবিষয়ক দুটি প্রামাণ্যচিত্র। দেখানো হয় ফৌজিয়া খান পরিচালিত ‘রাখবো বহমান’ ও পলাশ রসুল নির্মিত ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’। প্রদর্শনী শেষে প্রামাণ্যচিত্রের নানা দিক নিয়ে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ॥ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শনিবার সৃজন ফাউন্ডেশনের আয়োজনে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। গানের সুরে সুরে পথশিশুরা মাতিয়ে রাখে আয়োজন। বঞ্চিত শিশুদের কচিকণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর একক কণ্ঠে কেউ পরিবেশন করে লালনসঙ্গীত আবার কেউবা গেয়ে শোনায় ‘আমরা সবাই রাজা/আমাদেরই রাজার রাজত্বে’। কুড়িজনের বেশি সুবিধাবঞ্চিত শিল্পী অংশ নেয় পরিবেশনায়। সব শেষে মঞ্চে আসেন এ প্রজন্মের গুণী কণ্ঠশিল্পী বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী। পরিবেশন করেন দেশাত্মবোধক গান। তাঁর পরিবেশিত কয়েকটি গানের শিরোনাম ছিল ‘মাগো ভাবনা কেন’, ‘আমার দেশের মতন এমন দেশ কি কোথাও আছে’, ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’ ও ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার।’
×