নিজস্ব সংবাদদাতা, গাজীপুর, ২০ ডিসেম্বর ॥ গাজীপুরে গ্রাম্য সালিশীতে অপমানের জ্বালা সইতে না পেরে কিশোরী প্রেমিকা এক স্কুলছাত্রী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালীরা নিহতের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতের নাম মৌসুমী আক্তার (১৪)। সে শ্রীপুর উপজেলার প্রহ্লাদপুর ইউনিয়নের কদমা গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেনের মেয়ে। স্থানীয় পোতাবাড়ি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। কয়েকদিন আগে সে বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেয়।
শ্রীপুর মডেল থানার এসআই হাফিজুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসী জানান, কদমা গ্রামের প্রবাসী মোজাফ্ফর হোসেনের মেয়ে মৌসুমী আক্তারের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ভিটিপাড়া গ্রামের আশ্রব আলীর ছেলে সুজনের (২২) প্রায় তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। এরই মাঝে সুজন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মৌসুমীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কও গড়ে তোলে। এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য সামসুল হকের নেতৃত্বে গ্রাম্য মাতবররা দুপুরে গ্রাম্য সালিশী বৈঠকে বসেন। বৈঠকে সালিশদাররা মৌসুমীকে তিরস্কার করেন। প্রেম করার অপরাধে শাস্তি হিসেবে কান ধরে উঠবসে বাধ্য করেন। প্রকাশ্যে অপমানের এ জ্বালা সইতে না পেরে বৈঠক চলাকালেই মৌসুমী নিজ ঘরে আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করে। বাড়ির লোকজন টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে বিকেলে গাজীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাজীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রহ্লাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাইদ এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ঘটনার পর থেকেই সুজন পলাতক রয়েছে। সে নিহত মৌসুমীর বাড়ির পার্শ্ববর্তী নানার বাড়িতে থাকত।