ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধ আসা বন্ধ হচ্ছে না

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ২২ ডিসেম্বর ২০১৪

আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধ আসা বন্ধ  হচ্ছে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে একের পর এক ধরা পড়ছে আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধ। বৃহস্পতিবারও রাজধানীর পুরানা পল্টনের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধ উদ্ধার করেছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। ঘটনার তিনদিন পর তা প্রকাশ করল অধিদফতর। জব্দ করা ওষুধের মধ্যে আছে ক্যান্সার প্রতিরোধী ওষুধ ও ফুড সাপ্লিমেন্ট। উদ্ধার অভিযানের তিনদিন পরও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। এ বছর ৪১টি মামলা দায়ের করেছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। নিষ্পত্তি হয়নি এর একটিরও। রবিবার ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার আমরা একটা বড় মিটিংয়ে বসেছিলাম। হঠাৎ একটা ইনফরমেশন পেয়ে আমি আমার দল পাঠাই। অভিযানে এস কে এন্টারপ্রাইজের একটি গুদাম থেকে বিপুল পরিমাণ আমদানিনিষিদ্ধ ওষুধ জব্দ করা হয়। তাড়াহুড়োয় অভিযান পরিচালনা করায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা ম্যাজিস্ট্রেট ডাকতে পারিনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযানে থাকলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যেত। জব্দ করা ওষুধের মধ্যে আছে ক্যান্সার প্রতিরোধী ওষুধ ও ফুড সাপ্লিমেন্ট। এগুলো হলো স্পেনের ক্যাপসুল এমিক্যাপ ও কোলাইসিন ইনজেকশন, আর্জেন্টিনার ভেরিজেস্ট্রল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যালাইন রিলিভ এনেমা এবং চার ধরনের ফুড সাপ্লিমেন্ট। প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস ডিএইচএলের মাধ্যমে ওষুধগুলো দেশে এনেছে বলে দাবি করেছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ডিজি বলেন, আইনে অধিদফতরকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের ক্ষমতা দেয়া হয়নি। তবে ড্রাগ কোর্টে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলেছেন, তাঁরা কারণ দর্শানোর চিঠি দেবেন এস কে এন্টারপ্রাইজকে। এর আগে কখনও অভিযুক্ত কেউ পালিয়ে যায়নি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১০ বছরের জেল ও দুই লাখ টাকা জরিমানা হবে। এদিকে, এ বছর ৪১টি মামলা দায়ের করেছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। এর একটিরও নিষ্পত্তি হয়নি। প্যারাসিটামল সিরাপে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় ১৯৯১ সালে যে মামলা দায়ের হয় তার নিষ্পত্তি হতে সময় লেগেছে ২৩ বছর। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে মাত্র ৩ শতাংশ ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। যেসব ওষুধ বাংলাদেশে তৈরি হয়, সেগুলো আমদানিনিষিদ্ধ। অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক চিকিৎসকদের প্রতি পরামর্শপত্রে ফুড সাপ্লিমেন্টের নাম না লেখার অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ফুড সাপ্লিমেন্টের কোন অনুমোদন নেই। তারপরও চিকিৎসকরা ফুড সাপ্লিমেন্ট কেনাচ্ছেন। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর, বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিয়েছে অধিদফতর। কিন্তু এসব অবৈধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে বলে জানান মহাপরিচালক।
×