ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আইএসএলের চ্যাম্পিয়ন গাঙ্গুলীর এ্যাটলেটিকো ডি কলকাতা

ফুটবলকে সমর্থন দেয়ার আহ্বান শচীন-সৌরভের

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ২২ ডিসেম্বর ২০১৪

ফুটবলকে সমর্থন দেয়ার আহ্বান শচীন-সৌরভের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষ হয়ে গেল ভারতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক ফুটবল আসর ইন্ডিয়ান সুপার লীগ (আইএসএল)। এ আসরটির মাধ্যমে ভারতে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা ক্রিকেট মিলে গিয়েছিল ফুটবলের সঙ্গে। কারণ ক্রিকেট বিশ্বের উজ্জ্বল দুই নক্ষত্র শচীন টেন্ডুলকর আর সৌরভ গাঙ্গুলীর দল এবার ফাইনাল খেলেছে। শেষ পর্যন্ত শচীন পরাজিত হয়েছেন। তবে শিরোপা কিন্তু চলে গেছে একজন ক্রিকেটারের শিবিরেই। গাঙ্গুলীর এ্যাটলেটিকো ডি কলকাতা প্রথম আসরের গর্বিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শেষ মুহূর্তে পাওয়া গোলে (৯০ মিনিটে মোহাম্মদ রফিক) শচীনের কেরালা ব্লাস্টারকে হারিয়ে। অর্থের বিপুল ছড়াছড়ি, বিদেশী তারকাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে দারুণ একটি ফুটবল আসর আয়োজন হয়েছে। ক্রিকেট রাজ্যে ফুটবলের জন্যও ব্যাপক উদ্দীপনা দেখা গেছে। কিন্তু আইএসএল শেষ হয়ে গেলেও ফুটবলের প্রতি দেশের মানুষের এ উদ্দীপনা ও আকর্ষণ, সমর্থন সবই ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ক্রিকেটের এ দুই মহাতারকা। যদিও ফাইনালে পরস্পরের প্রতিপক্ষ হিসেবে থেকে একজন হেরেছেন আরেকজনের কাছে কিন্তু ফুটবলের স্বার্থে তাদের এই একক আহ্বান। দারুণ এক আসর আর দর্শকদের উপস্থিতি নতুন করে জাগরণ সৃষ্টি করেছে ভারতীয় ফুটবলে। আর এটাই মূল লক্ষ্য ছিল আইএসএলের। আকর্ষণীয় একটি টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে দেশে ফুটবলের নব-জাগরণ সৃষ্টি এবং তরুণদের ফুটবলের প্রতি আগ্রহী করে তোলা। যেভাবে আইএসএলের প্রতিটি ম্যাচে দর্শকদের উপস্থিতি দেখা গেছে এবং প্রতিটি ম্যাচ উত্তেজনাকর হয়েছে আয়োজকরা দাবি করছেন সফল হয়েছে আইএসএল উদ্দেশ্যে। উদ্বোধনী আসরে শিরোপা জয়ে তো বটেই ফুটবলের জন্য ভারতীয়দের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দেখেও মুগ্ধ গাঙ্গুলী। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ এ টুর্নামেন্টকে যেভাবে স্বাগত জানিয়েছে সেটা সত্যিই অসাধারণ। সবাই আইএসএলের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন এবং এ জন্য নিজেরাও কাজ করেছেন। ম্যাচগুলো দেখতে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছে এবং অধিকাংশ ম্যাচেই সব টিকেট বিক্রি হয়েছে। আমি একটি ফুটবলের শহর থেকেই এসেছি সুতরাং আমি জানি একটি ফুটবল মাঠ যখন কানায়-কানায় পূর্ণ থাকে তখন কতটা ভাল লাগে। আর যে দেশে ফুটবল খুব বেশি জনপ্রিয় নয় সেখানে এমন দৃশ্য দেখা সত্যিই অভিভূত হওয়ার মতো বিষয়। এটা দেশের ফুটবলের জন্য খুব ভাল একটি লক্ষণ।’ ফাইনালের ভেন্যু ৪০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ। সাবেক সতীর্থ গাঙ্গুলীর দলের কাছে হেরেছেন কেরালার মালিকানার অংশীদার শচীন। তবে পুরো ম্যাচের সময়ই দু’জন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থেকেছেন। একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে থাকাটা রোমাঞ্চকর এক অভিজ্ঞতা বলে জানিয়েছেন গাঙ্গুলী। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক সময়ই ক্রিকেট মাঠে পরস্পরের প্রতিপক্ষ ছিলাম। কিন্তু এ ধরনের টুর্নামেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে থাকাটা অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা। যদিও আমরা ভিন্ন দুই দলের। কিন্তু ফুটবলের জন্য আমরা দু’জন অভিন্ন। আইএসএল অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে। আশা করি দেশের মানুষ ভবিষ্যতেও ফুটবলের জন্য তাঁদের অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে এটিকে আরও উন্নতির পথ দেখাবেন।’ যদিও খেলাটা ফুটবল এবং ক্রিকেটের দুই তারকা গাঙ্গুলী ও শচীনকে এখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে কিন্তু এ বিষয়টিই ভারতের ফুটবলের জন্য অনেক ভাল হয়েছে। এমনটাই অভিমত শচীনের। তিনি বলেন, ‘দাদার (গাঙ্গুলী) সঙ্গে একই দলে দীর্ঘদিন খেলাটা ছিল অতীব আনন্দের মুহূর্ত। আমরা আসলে পেশাদার জগতে একসঙ্গেই বেড়ে উঠেছি। এটা ভিন্ন মঞ্চ। এটা ফুটবলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। অনেক ধন্যবাদ সবাইকে ফুটবলের জন্য সমর্থন দেয়ায়। আশা করছি আইএসএল দেশের ফুটবল উন্নতির জন্য সহায়ক হবে। আমি মনে করি বিদ্যালয়গুলোকে এখন থেকে ফুটবলকেও অধিক গুরুত্ব দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের খেলানো উচিত। তাহলেই ফুটবল আরও এগিয়ে যাবে আমাদের।’
×