ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুর্নীতি মামলায় খালেদার ন্যায়বিচার বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কা ফখরুলের

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪

দুর্নীতি মামলায় খালেদার ন্যায়বিচার বঞ্চিত  হওয়ার শঙ্কা ফখরুলের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা দুটি মামলার ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচার বিভাগকে সরকার অন্যায়ভাবে প্রভাবিত করায় ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একই সঙ্গে তিনি মামলায় আইনগত লড়াই চালিয়ে যাওয়া এবং রাজপথে আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দেন। মঙ্গলবার পল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বলেন, আইনগতভাবে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলা চলতে পারে না। হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা চলানো হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখা। যদি এ মামলায় ন্যায়বিচার পাওয়া আশা থাকত তাহলে বেগম খালেদা জিয়া এ দুটি মমলায় আইনী প্রক্রিয়ায় অব্যাহতি পেতেন। এখন যে পদ্ধতিতে মামলা চালানো হচ্ছে তাতে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে। মামলার দুটি বিষয়ে সরকারের বোধদয় না হলে বিএনপি কঠোর আন্দোলনে যাবে। এছাড়া যে আদালতে এ মামলা চলছে সে আদালতে বিচারক বাসুদেব রায় বদলি করাও উদ্দেশ্যমূলক অভিযোগ করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, যেসব মামলার কোন ভিত্তি নেই সেই মামলা দেয়া হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেও অন্যায়ভাবে মামলা দেয়া হয়েছে। এসব মামলায় এমনভাবে বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে যার মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপির সিনিয়র নেতাদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই সরকার এ ধরনের মিথ্যা মামলায় হয়রানি করছে। তিনি বলেন, ভিন্নমত হলেই সরকার রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে দমন করছে। আদালতের মাধ্যমেই শেখ হাসিনা বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৫টি মামলা তুলে নিয়েছেন। এমনকি বিচারাধীন মামলাও তুলে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। মামলার বাদী আজম জে চৌধুরী শেখ হাসিনাকে ঘুষ দিয়েছিলেন তা পত্রিকায় ফাঁস হয়েছিল। সেই মামলার ট্রায়ালও শুরু হয়েছিল। কিন্তু থেমে গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করেন বিগত ওয়ান ইলেভেনের জরুরী সরকারের আমলে দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট অর্থ আত্মসাতের মিথ্যা মামলার বিচারের যখনই সময় হয় তখনই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নির্বাহী পদে বসে শেখ হাসিনা এ মামলা নিয়ে নানান বক্তব্য দিয়ে থাকেন। তিনি বলে থাকেন খালেদা জিয়া নাকি এতিমদের টাকা মেরে খেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অধস্তন আদালতের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তার এ বক্তব্যের উদ্দেশ্য আদালতের বিচারের ওপর সরকারের প্রভাব সৃষ্টি করা। এটা অনৈতিক ও অন্যায়। এভাবে বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপির সব সিনিয়র নেতারেদর এবং সারাদেশের হাজার হাজার ভিন্নমত পোষণকারীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। মির্জা ফখরুল আরও উল্লেখ করেন এসব মামলায় উচ্চ আদালতের আচরণেও আমরা হতাশ। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বিচারক (বাসুদেব রায়ের) পরিবর্তনের জন্য আমরা উচ্চ আদালতে রিট করেছি। সেই আবেদনটি এখন আদালতে বিচারাধীন। বিচারাধীন অবস্থায় সরকার হঠাৎ তাকে সরিয়ে দিয়েছে। বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান প্রমুখ।
×