ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট দিয়ে শুরু কিউই-লঙ্কা দ্বৈরথ

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪

ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট দিয়ে শুরু কিউই-লঙ্কা দ্বৈরথ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সিরিজে অংশ নিতে টি২০’র শিরোপাধারী লঙ্কানরা এখন নিউজিল্যান্ডে। সহ-আয়োজক কিউইদের সঙ্গে দুটি টেস্ট ও সাত ওয়ানডে খেলবে এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের দল। ক্রাইস্টচার্চে শুক্রবার (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ভোর চারটায়) ‘বক্সিং ডে’ প্রথম টেস্ট দিয়ে শুরু হবে ময়দানী লড়াই। অস্ট্রেলিয়ায় টানা দুই হারে কোণঠাসা ক্রিকেট-মোড়ল ভারত, আরও একটি ভরাডুবির অপেক্ষায় মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। সেখানে কিউই-লঙ্কা দ্বৈরথ নিয়ে তৈরি হয়েছে বাড়তি আগ্রহ। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে হয়ত শ্রীলঙ্কাই ফেবারিট, কিন্তু দু’দলের সমপ্রতি পারফর্মেন্স ভিন্ন কিছুরই ইঙ্গিত দেয়! ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডকে সাত ওয়ানডের সিরিজে ৫-২এ বিধ্বস্ত করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে লঙ্কানরা। আর আরব আমিাতে শক্তিধর পাকিস্তানের বিপক্ষে তো স্বপ্নের ক্রিকেট খেলে (১-১ এ টেস্টে ড্র, ৩-২এ ওয়ানডে জয়) নিউজিল্যান্ড! সুতরাং বড়দিনের আমেজ সঙ্গী করে জমজমাট লড়াই দেখার অপেক্ষায় বিশ্বের অগণিত ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ। যেখানে পরিসংখ্যানে এগিয়ে স্বাগতিক কিউইরা। ঘরের মাটিতে উপমহাদেশীয় দলগুলোর বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের পারফর্মেন্স বরাবরাই ভাল। ১৯৮৩ থেকে ২০১২ পর্যন্ত দু’দল মোট ২৮ টেস্টে মুখোমুখি হয়। শ্রীলঙ্কার ৮Ñএর বিপরীতে ১০টিতে জয় পায় কিউইরা। অমীমাংসিত থাকে বাকি ১০ টেস্ট। সর্বশেষ ২০০৬-০৭এ নিউজিল্যান্ডের মাটিতে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ ড্র করেছিল অতিথি লঙ্কানরা। তার আগে ২০০৪-০৫ এ হেরেছিল ১-০ ব্যবধানে। এ বছরের শুরুতেই নিউজিল্যান্ড সফরে তিন টেস্টে সিরিজ ২-০তে ধরাশায়ী হয় পরাক্রমশালী ভারত! ঘরের মাটিতে কিউদের সাফল্যের মূল রহস্যÑ পিচ ও পেস আক্রমণ। দ্রুতগতির পিচে বিশ্বমানের পেসার দিয়ে অতিথি ব্যাটসম্যানদের কাবু করতে যথেষ্ট পারঙ্গম তারা। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে এমনিতে উপমহাদেশীয় ক্রিকেটারদের সাফল্য প্রশ্নবিদ্ধ। এবার সে ধারা বদলে দিতে মরিয়া সফরকারীরা। অধিনায়ক ম্যাথুস যেমন বলেন, ‘জানি ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ড খুবই শক্ত প্রতিপক্ষ, কিন্তু এবার অতীতের সে ধারা পাল্টে দিতে তৈরি আমরা। ভারত সফর বাদ দিলে বছর জুড়ে আমাদের পারফর্মেন্স ঠিকই ছিল। এখানে আসার আগে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজটা আর সাহায্য করবে।’ এটা সত্য যে বছর জুড়ে লঙ্কানদের পারফর্মেন্স মন্দ নয়। কেবল হুট করে ভারতে গিয়ে ওই পাঁচ ওয়ানডের লজ্জা বাদ দিলে! ক্রাইস্টচার্চের বাউন্সি উইকেটে পেসাররাই যে পার্থক্য গড়ে দেবেন, সেটি বোঝা যায় লঙ্কান প্রধান বোলিং কোচ চামিন্দা ভাসের বক্তব্যে। সাবেক তারকা বলেন, ‘এখানকার কন্ডিশনে পেসাররাই যে চালকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সৌভাগ্য সম্প্রতি ব্যর্থতা কাটিয়ে আমরা দারুণ একটা কম্বিনেশন খুঁজে পেয়েছি। বিশেষ করে পেস আক্রমণে। ইনজুরি কাটিয়ে এখন পুরোপুরি ফিট সামিন্দা এরাঙ্গা ও সুরাঙ্গা লাকমল। রয়েছে ধাম্মিকা প্রসাদ ও নুয়ান প্রদীপ। তরুণ দুষমন্ত চামারাও বল হাতে ঝড় তুলতে প্রস্তুত। আমার প্রত্যেক পেসার গড়ে ১৪০ কিলোমিটার বেগে বল করতে সক্ষম।’ তবে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডের ওয়ার্ল্ডক্লাস বোলিংয়ের বিপক্ষে নিজ দলের ব্যাটসম্যানদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলেও মনে করেন ভাস। যেখানে ম্যাথুসের দল খুব বেশি মিস করবে অভিজ্ঞ মাহেলা জয়াবর্ধনেকে। সদ্য সাদা পোশাকের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন তুখোড় এই ব্যাটসম্যান। অবশ্য ফর্মে আছেন আরেক অভিজ্ঞ কুমার সাঙ্গাকারা ও অধিনায়ক ম্যাথুস। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রস্তুতি নিতে ওয়ানডে না খেলেই আমিরাত থেকে দেশে ফেরেন কিউই অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম। এ থেকেই সিরিজটি গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমে পিছিয়ে পড়েও দুরন্ত নৈপুণ্যে ঘুরে দাঁড়ায় তার দল। ব্যাটে-বলে দারুণ সময় পার করা নিউজিল্যান্ড সে ধারা অব্যাহত রাখতে চাইবে। সেনাপতি ম্যাককুলাম ও কোচ মাইক হেসন দুজনেই সেটি বলেছেন। আর বিশ্বকাপের আগে নিজেদের প্রস্তুতিটা ভালমতো সেরে নিতে চান লঙ্কান কোচ মারভান আতাপাত্তু।
×