ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নাটোরে ভুয়া সনদধারী অধ্যক্ষ চাকরি করছেন ১০ বছর

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪

নাটোরে ভুয়া সনদধারী অধ্যক্ষ চাকরি করছেন ১০ বছর

সংবাদদাতা, নাটোর, ২৫ ডিসেম্বর ॥ নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার সোনাবাজুতে অবস্থিত সরদার কাজিমুদ্দিন টেকনিক্যাল এ্যান্ড বিএম ইন্সটিটিউটে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে সাড়ে ১০ বছর ধরে মাস্টার্স ডিগ্রীর ভুয়া সনদ দাখিল করে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের নথি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২০০৪ সাল থেকে আবুল কালাম আজাদ অধ্যক্ষ পদে থেকে সরকারী-বেসরকারী বেতন ভাতাদি উত্তোলন করে আসছেন। ২০০৯ সালে আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতি, নিয়োগ বাণিজ্য ও কলেজের টাকা আত্মসাতসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে মারপিটের অভিযোগে গুরুদাসপুর থানায় মামলা হয়। অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মাস্টার্স ডিগ্রীর ভুয়া সনদে চাকরি করার অভিযোগ এনে আব্দুল আজিজ মাস্টার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ গোলাম রব্বানীর নিকট লিখিত অভিযোগ করলে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে অধ্যক্ষের শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটটি জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্ট বলে নিশ্চিত হন। অথচ আবুল কালাম আজাদ সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে প্রথম শ্রেণীর সার্টিফিকেট দাখিল করে অধ্যক্ষ পদে বহাল রয়েছেন। যার রোল নম্বর লেখা রয়েছে ২৬৩৯, রেজিঃ নং-৪২৫০৪ এবং সেশন-১৯৯৬-১৯৯৭। তিনি তখন থেকেই এমপিওভুক্তি হয়ে ৩০০৬২৭ ইনডেস্ক নাম্বারের মাধ্যমে অবৈধভাবে বেতন উত্তোলন করলে ২০০৯ সালের ২৭ মার্চ তৎকালীন ইউএনও’র অফিস সহকারী আব্দুল হাসিব বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে গুরুদাসপুর থানায় একটি মামলাও দায়ের করে তার সরকারী বেতনভাতা বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হলেও এ পর্যন্ত তিনি চাকরি করছেন বহাল তবিয়তে। চলতি বছরের ২ নভেম্বর এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে শামীম আনোয়ার ওই ভুয়া সনদধারী অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে নাটোর জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করলে ১৭ নবেম্বর জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে সহকারী কমিশনার মুরাদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ১৩১১ স্মারকের অভিযোগটি তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিলের জন্য গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট পাঠান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসমিন আক্তার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদুর রহমানকে তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিলের জন্য নির্দেশ দিলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গত ১৭ ডিসেম্বর তার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। তদন্তে রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন ২০০৫ সালের ২০ মার্চ উপপরীক্ষক (সনদ) এ এম জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত (সূত্রঃ জাতী বি/পরী/সনদ/৪৪৯/২০০৫/২৫৩৪) স্বারকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখেছেন অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের মাষ্টার্স পাশের সনদটি সঠিক নয়, জালিয়াতি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, তদন্ত রিপোর্টটি গ্রহনযোগ্য নয়, তিনি উপজেলা সহকারী কমিশনারকে দিয়ে বিষয়টি পুনঃতদন্ত করাবেন। অপরদিকে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ জানান।
×