ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

টেকনাফ উপকূলে চার শ’ যাত্রীসহ মালয়েশিয়াগামী ট্রলার আটকা ॥ পরে জব্দ

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪

টেকনাফ উপকূলে চার শ’ যাত্রীসহ মালয়েশিয়াগামী ট্রলার আটকা ॥ পরে জব্দ

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ মালয়েশিয়াগামী যাত্রীবোঝাই একটি ট্রলার সাগরের বাহারছড়া উপকূলে আটকা পড়েছে। ভাগ্যক্রমে ওই ট্রলারের কোন যাত্রী হতাহত হয়নি বলে জানা গেছে। রাতে আরও লোকজন ওঠাতে মানব বোঝাই ট্রলারটি উপকূলের কাছাকাছি চলে আসায় সাগরের গভীরে যেতে না পেরে আটকে যায় বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। খবর পেয়ে টেকনাফ বিজিবি সদস্যরা শনিবার সকালে সাবরাংয়ের বাহারছড়া বিচঘাটে জব্দ করে ট্রলারটি। স্থানীয়রা জানায়, শনিবার ভোরে চার শতাধিক অচেনা লোক চরাঞ্চল থেকে উঠে দিগি¦দিক সটকে পড়ে। সকাল সাড়ে সাতটায় ৪২ ব্যাটালিয়নের হাবিলদার সামছুর নেতৃত্বে বিজিবি জওয়ানরা এসে ট্রলারটি জব্দ করে এবং মালয়েশিয়াগামী যাত্রী ও দালালদের খবর নেয়। জানা গেছে, সাবরাং শাহপরী দ্বীপের মানব পাচারকারী গডফাদার ও সিন্ডিকেট প্রধান সরহোছনের জমায়েত করা শতাধিক লোক ট্রলারে ওঠানোর জন্য সাবরাংয়ের কাছাকাছি এলে শনিবার ভোরে মানববোঝাই ট্রলারটি আটকা পড়ে। বিজিবি জানায়, উপকূলের কাছাকাছি মালয়েশিয়াগামী একটি ট্রলার ভাসছে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। ঘাটে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেখানে পানি কম থাকায় ট্রলারটি আটকে গেছে। ওই ট্রলারে থাকা মালয়েশিয়াগামীরা কূলে উঠে পালিয়ে যায়। ৪২ বিজিবির লে. কর্নেল আবু জার আল জাহিদ জানান, ট্রলার আটকেপড়ার খবর পেয়ে কয়েকটি বিজিবির টহলদল পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে। ট্রলারে থাকা যাত্রী এবং দালালদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করা হচ্ছে। এদিকে অবৈধভাবে সাগরপথে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশী দুই যুবকের মৃত্যু ঘটেছে মালয়েশিয়ায়। দালালের চাহিদা ও বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে অভিভাবকরা টাকা দিতে না পারায় হতভাগা ওই দুই যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়েছে হিংস্র দালালরা। ১৬ ডিসেম্বর সকালে মালয়েশিয়ায় মারা যাওয়া যুবকরা হচ্ছে টেকনাফের হ্নীলার উলুচামরি এলাকার লিয়াকত আলীর পুত্র মেহেদি হাসান ও উখিয়ার রহমতের বিলের নুর আলমের পুত্র ছৈয়দ আলম। শাহপরী দ্বীপের মানবপাচারকারী গডফাদার শরিফ হোসেন ওরফে সরহোছনের নিয়োজিত দালাল মৌলভী মুহিবুল্লার খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেয় অন্যদের সঙ্গে এ দুই যুবকও। মৌলভী মুহিবুল্লাহ, শাহপরী দ্বীপ ডাঙ্গরপাড়ার আবু তাহেরের পুত্র মো: হাশিম ওরফে পুয়া মাঝি, উখিয়ার জালিয়াপালং চেপটখালীর মুস্তাফিজুর রহমান সিকদারের পুত্র ফয়েজুর রহমান সিকদার, জাফর আলমের পুত্র মোজাম্মেল, সুলতানের পুত্র জিয়াউল হক, মকতুল হোসেনের পুত্র মুসলেম উদ্দিন ও মিয়া হোছন মাস্টারের পুত্র ছৈয়দ হোছন মিলে শক্তিশালী মানবপাচার সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। প্রতিদিন কৌশলে বিভিন্ন প্রলোভনে ফেলে নতুবা অপহরণ করে মালয়েশিয়ায় লোকজনকে পাঠিয়ে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর এ সিন্ডিকেটের মূল হোতা শাহপরী দ্বীপের গডফাদার সরহোছন। টেকনাফ ও উখিয়া থানার কয়েক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে গডফাদার শরিফ হোছন ও ফয়েজুর রহমান সিকদারের মোটা অঙ্কের টাকার চুক্তি থাকায় তারা সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী। এ অবৈধ কাজে ব্যবহৃত নৌকার মালিক কবির আহমদ, নুরুল আলম ও দক্ষিণপাড়ার ইসলামের নামেও মানব পাচারের একাধিক মামলা রয়েছে। তারাও সরহোছন সিন্ডিকেটের লোক বলে পার পেয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
×