ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মামলাজট ও দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে সংসদীয় কমিটির উদ্বেগ

আগামী বছরের মধ্যেই একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার নিষ্পত্তি

প্রকাশিত: ০৫:০২, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪

আগামী বছরের মধ্যেই একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার নিষ্পত্তি

সংসদ রিপোর্টার ॥ আদালতে মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা ও মামলা জট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। কমিটির বৈঠকে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। বিশেষ করে চাঞ্চল্যকর মামলার বিচার কাজের অগ্রগতি সংসদীয় কমিটিকে নিয়মিত অবহিত করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৫ সালের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার নিষ্পত্তি হবে। রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। বৈঠকে কমিটির সদস্য মন্ত্রী আনিসুল হক, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মোঃ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, আবদুল মতিন খসরু, সাহারা খাতুন, মোঃ আবদুল মজিদ খান, তালুকদার মোঃ ইউনুস ও সফুরা বেগম উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ আমন্ত্রণে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। বৈঠক শেষে জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, চাঞ্চল্যকর একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য প্রসিকিউশনকে ইস্কাটনে একটি দ্বিতল বাড়ি দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ১০৩ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এজন্য সপ্তাহে একদিনের পরিবর্তে আদালতের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে তিন দিন । কমিটি ৫ দিন আদালতের কার্যক্রম চালানোর সুপারিশ করেছে। তিনি আরও বলেন, এই মামলার অগ্রগতি নিয়ে কমিটির প্রতিটি বৈঠকে অবহিত করার জন্য বলা হয়েছে। শুধু এই মামলা নয়, চাঞ্চল্যকর অন্যান্য মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। নিম্ন আদালতসহ হাইকোর্ট ও সুপ্রীমকোর্ট বিভাগের মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করতে দেরি হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে কমিটির সভাপতি বলেন, একটা মামলার রায় দেয়ার পরেই বিচারকের স্বাক্ষর করতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। কমিটিকে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাইকোর্ট বিভাগের একটি মামলার মৌখিক রায় হওয়ার ৪ বছর পর পূর্ণাঙ্গ রায়ে স্বাক্ষর করা হয়েছে। এভাবে দীর্ঘ সময় পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশে জনমনে হতাশা দেখা দেয়। যেমনটি ঘটেছে যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার ১১ মাস পর জানতে পারল রিভিউ গ্রহণ করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের মামলার রায়ও দ্রুত প্রকাশ করা উচিত। কমিটি সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে দেশের জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং উচ্চ আদালতের অনিষ্পন্ন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সারা দেশে নিম্ন আদালতে প্রায় ২৮ লাখ মামলা এবং হাইকোর্টে সোয়া তিন লাখ মামলা বিচারাধীন। প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় প্রশাসনিক, অবকাঠামোগত ও আর্থিক সংশ্লেষ না ঘটিয়ে শুধু অভ্যন্তরীণ সংস্কারের মাধ্যমে দেশের বিরাজমান মামলার জট নিরসন ও মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব বলে মনে করেন কমিটির সদস্যরা। এ ব্যাপারে আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রস্তাবিত সুপারিশ এবং স্থায়ী কমিটির পূর্বের আলোচিত ২৩টি প্রস্তাব কার্যকর করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। বৈঠকের সুপারিশে বলা হয়েছে, আর্থিক মূল্যমানের কারণে বর্তমানে যুগ্মজেলা জজ আদালতে অধিকহারে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। অথচ সহকারী ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে কম সংখ্যক মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
×