ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নষ্ট হচ্ছে গুণগত মান

নগরবাড়ী নৌবন্দরে খোলা আকাশের নিচে ১০ হাজার টন সার

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪

নগরবাড়ী নৌবন্দরে খোলা আকাশের নিচে ১০  হাজার টন সার

কৃষ্ণ ভৌমিক, পাবনা ॥ উত্তরাঞ্চলের নৌপ্রবেশদ্বার নগরবাড়ী বন্দরে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত প্রায় ১০ হাজার মেঃটন রাসায়নিক সার দীর্ঘ ৩ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখা হয়েছে। আমদানিকৃত সার রোদ-বৃষ্টিতে দিনের পর দিন পড়ে থাকায় গুণগতমান নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে রাসায়নিক সারের তীব্র গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকার পরিবেশও দূষিত হয়ে পড়েছে। নগরবাড়ী নৌবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিদেশ থেকে বড় জাহাজে আমদানিকৃত এ রাসায়নিক সার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে লাইটার জাহাজে করে নগরবাড়ী নৌবন্দরে আনা হয়। সেখান থেকে সড়কপথে মজুদের জন্য উত্তরাঞ্চলের পাবনার বাঘাবাড়ি, বগুড়া, শান্তাহার, জয়পুরহাট, রাজশাহী, নাটোর, রংপুর, লালমনিরহাটের মহেন্দনগর, দিনাজপুর, পার্বতীপুরের চারকাঠ, ঠাঁকুরগাঁ, বিরামপুর ও গাইবান্ধার ১৪ টি বাফার গুদামে সংরক্ষণ করা হয়। সার পরিবহনে নিয়োজিত ঠিকাদাররা সার পরিবহন না করায় এ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। নগরবাড়ী নৌবন্দর ঘুরে দেখা গেছে, বন্দরের তীরবর্তী বালিচরের মাটিতে যেখানে সেখানে হাজার হাজার বস্তা রাসায়নিক সার গাদাগাদি করে ফেলে রাখা হয়েছে। ত্রিপল-পলিথিন দিয়ে মোড়া হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। রোদ-বৃষ্টিতে সার গলে নষ্ট হচ্ছে। সারের স্তূপ থেকে ঝা্ঝাঁলো গন্ধের তীব্রতায় শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। দেখা গেছে, ঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে সার বোঝাই ৬টি লাইটার জাহাজ সার আনলোডের অপেক্ষায় বন্দরে রয়েছে। নগরবাড়ী বন্দরে নোঙরকৃত এমভি জব্বার কার্গো জাহাজের চালক আলী নুর জানিয়েছেন, ১০ হাজার বস্তা সার নিয়ে আনলোডের অপেক্ষায় ৭/৮ দিন বন্দরে অবস্থান করছে। পরিবহন ঠিকাদাররা বলছে, শ্রমিক ও পরিবহন সঙ্কটে সার খালাস করা যাচ্ছে না। নগরবাড়ী বন্দরে লোড-আনলোড লেবাররা জানিয়েছেন, নগরবাড়ী বাফার গুদাম না থাকার কারণে জাহাজ থেকে সার আনলোড করে খোলা আকাশের নিচে গাদাগাদি করে রাখা হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিকুল্লাহ জানিয়েছেন, মাসের পর মাস খোলা আকাশের নিচে সার ফেলে রাখায় ঝাঁঝালো গন্ধে এখানে ব্যবসা করা যাচ্ছে না। তিনি সার সংরক্ষণে বন্দর এলাকায় সরকারীভাবে বাফার গুদাম নির্মাণের দাবি করেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র দাবি করেছেন গত বছর প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সার আমদানি করায় উত্তরাঞ্চলের বাফার গুদামে পর্যাপ্ত রাসায়নিক সার মজুদ রয়েছে। এসব বাফার গুদামে চীন থেকে আমদানিকৃত নি¤œমানের রাসায়নিক সার জমাট বাধায় কৃষকরা কিনতে আগ্রহী হয় না। তাই বিসিআইসি ডিলাররা বাফার গুদাম থেকে রাসায়নিক সার উত্তোলন না করায় এসব গুদামে সার পাঠানো যাচ্ছে না।
×