ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাদাদের কলঙ্ক কালোদের সংগ্রাম

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪

সাদাদের কলঙ্ক কালোদের সংগ্রাম

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মিজৌরী অঙ্গরাজ্যের ফার্গুসন শহরটি মানবাধিকার আন্দোলনের এক পিঠস্থান হিসেবে পৃথিবীব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে। ফার্গুসন শহরটি বেশ ছোট, আয়তন সাড়ে ৬ বর্গমাইল। এটি মিজৌরীর বৃহত্তর সেন্ট লুই নগর এলাকার অন্তর্ভুক্ত। লোকসংখ্যা ২১ হাজারেরও কিছু বেশি। শহরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৫৫ সালে। বর্তমানে ফার্গুসনের জনসংখ্যার প্রায় ২৯ ভাগ শ্বেতাঙ্গ এবং বাকি ৭১ ভাগ কৃষ্ণাঙ্গ। ১৯৯০ সালে এর লোকসংখ্যার প্রায় ৭৪ ভাগ ছিল শ্বেতাঙ্গ, বাকি ২৬ ভাগ কৃষ্ণাঙ্গ। কী কারণে গত দু’দশক ধরে শ্বেতাঙ্গরা এ শহর ছেড়ে যাচ্ছেন এবং কৃষ্ণাঙ্গরা ক্রমাগত বেশি সংখ্যায় বসতি স্থাপন করছেন তা সুষ্পষ্টভাবে জানা যায়নি। সর্বশেষ জানা তথ্যানুযায়ী এ শহরের লোকসংখ্যার ৪৫ ভাগ পুরুষ ও ৫৫ ভাগ নারী। এই শহরের একটি মাত্র উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান সেন্ট লুই কমিউনিটি কলেজে প্রায় ৮ হাজার ছাত্র অধ্যয়ন করে। এই শহরের নামকরা নাগরিকদের মধ্যে সবচাইতে বেশি প্রসিদ্ধি অর্জন করেছিলেন জেনারেল জিমি ডোলিটলি। এই জেনারেল দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে সুনামের সঙ্গে ইউরোপের রণক্ষেত্রে মার্কিন সেনাবাহিনীর একাংশের নেতৃত্ব দেন। সম্প্রতি মাইকেল ম্যাকডোনাল্ড গ্রামী পদক বিজেতা গায়ক হিসেবে ফার্গুসনে নাম ছড়িয়েছেন। মিজৌরী, মিসিসিপি, আলাবামা, জর্জিয়া, আরাকানসাসসহ গভীর দক্ষিণের অঙ্গরাজ্যসমূহে শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য এলাকার মতো সাম্যধর্মী ও সংবেদনশীল নয়। ১৯৬০-এর দশকের প্রথম ভাগে যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রীমকোর্টের বর্ণবাদবিরোধী ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেয়ার পরও এসব এলাকায় শ্বেতাঙ্গরা কৃষ্ণাঙ্গদের সকল গণস্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিনোদন কেন্দ্র ও পরিবহনে প্রবেশাধিকার দিতে চাইতেন না এবং সর্বোপরি ভোটার হিসেবে তাদের সহজে নিবন্ধিত হতে দিতেন না। এসব এলাকায় বিভিন্ন শহরে তখনকার দিন হতেই জাতিগত বিভেদ ও সংঘর্ষ ধিকি ধিকি করে জ্বলছিল। কৃষ্ণাঙ্গ আন্দোলন এবং সুবুদ্ধিসম্পন্ন শ্বেতাঙ্গদের সমর্থনের ভিত্তিতে এসব বিবাদ ও বিভেদ ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে আসছিল। বারাক ওবামাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রে সার্বিকভাবে বর্ণবাদের অবসান ঘটিয়েছে বলে ধরা হয়েছিল। সমাজ বিবর্তনের এই পটভূমিকায় ফার্গুসনে ২০১৪-এর ৯ আগস্ট ১৮ বছর বয়স্ক এক তরুণ মাইকেল ব্রাউনকে পুলিশ কর্মকর্তা ডারেন উইলসন গুলি চালিয়ে হত্যা করেন। বলা হয়েছে যে, মাইকেল ব্রাউন একটি খেলনা পিস্তল নিয়ে যখন অন্য তরুণদের সঙ্গে এক গলিপথে হল্লা করছিলেন, তখন তাকে প্রকৃতই পিস্তলধারী হিসেবে ধরে ফার্গুসনের এক পুলিশ অফিসার ডারেন উইলসন গুলি করেন এবং ফলে সঙ্গে সঙ্গে কৃষ্ণাঙ্গ প্রধান ফার্গুসন ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় তীব্র জনঅসন্তোষের সৃষ্টি হয়। ফলে গাড়িতে আগুন দেয়া ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট করা হয় এবং পুলিশের সঙ্গে প্রতিবাদীদের সহিংস সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খুন হয়ে যাওয়া ব্রাউনের স্মৃতি রক্ষার্থে ৯ আগস্ট সন্ধ্যায় স্থানীয়রা একটি অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেন। বিদিত হয়েছে যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন কুকুরকে দিয়ে এই সৌধের ওপর মূত্র ত্যাগ করান। পরে অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা সমবেত হয়ে সৌধটি ভেঙ্গে ফেলেন। এতে স্থানীয় জনগণ প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। আগস্ট ১০ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত ধিকি ধিকি করে বিক্ষোভ চলতে থাকে। এই বিক্ষোভে অন্যদের মাঝে মিজৌরী অঙ্গরাজ্যের সাংসদ সেরন পেজ এবং সিনেটর মারিয়া চাপেল নাদাল অংশগ্রহণ করেন। আগস্ট ১২ এবং ১৩ তারিখে ৭ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়। ১২ আগস্টে ময়া এটএন হোয়াইট নামে এক মহিলা বিক্ষোভকারী মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। ১৩ আগস্টে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদক ওয়েসলি লাওয়ারি এবং হাফিংটন পোস্টের প্রতিবেদক রায়ান রেইলিকে ফার্গুসনের পুলিশ গ্রেফতার করে। ফার্গুসনের পুলিশ প্রধান টম জ্যাকসন এসব পুলিশী জুলুম অস্বীকার করেন। এই সময়ে লজ্জাজনকভাবে ফার্গুসন ও আশপাশের কতিপয় শহরে শ্বেতাঙ্গরা ডারেন উইলসনের সমর্থনে ‘আমি ডারেন উইলসন’ ব্যানার ও বাহুবন্ধন নিয়ে সড়ক যাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। আর প্রায় একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের মাত্রাতিরিক্ত শক্তি ব্যবহারের নিন্দা করেন। ফলে মিজৌরীর গবর্নর নিকসন ফার্গুসনের পুলিশী দায়িত্ব মিজৌরী অঙ্গরাজ্যের মহাসড়কের টহলদার পুলিশের কাছে অর্পণ করেন। এই টহলদার পুলিশের প্রধান ক্যাপ্টেন রন জনসন একজন কৃষ্ণাঙ্গ। ১৪ আগস্ট সন্ধ্যায় ক্যাপ্টেন জনসন প্রতিবাদকারী মিছিলের অগ্রভাগে শান্তির ব্যানার নিয়ে নিজেই অংশগ্রহণ করেন। একই সময়ে মিজৌরীর গবর্নর নিকসন ফার্গুসনে সান্ধ্য আইন জারি করেন এবং তা বলবতকরণে রাজ্য সরকারের সৈনিকদের নিয়োগ করেন। প্রতিবাদীদিগকে পুলিশ এবং রাজ্য সরকারের সৈনিকরা প্রায় দিনই গ্রেফতার করে চলেন। ১৮ আগস্টে ৭৮ প্রতিবাদীকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯ আগস্ট ফার্গুসন থেকে কয়েক মাইল দূরে কাজিমি পাওয়েল নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে সেন্ট লুইয়ের দুই পুলিশ কর্মকর্তা গুলি করে হত্যা করেন। পুলিশের তরফ থেকে বলা হয় যে, পাওয়েল ছুরি হাতে তাঁদের দিকে এগিয়ে এসেছিলেন বলে এ ঘটনা ঘটে। ২৫ আগস্ট ব্রাউনকে দাফন করা হয়। হাজার হাজার প্রতিবাদী জনগণ ব্রাউনের শেষকৃত্যে অংশগ্রহণ করেন। ৮ অক্টোবর ২০১৪ ভোন্দারিট মায়ারসন বলে আরেক কৃষ্ণাঙ্গকে গুলি করে হত্যা করে সেন্ট লুইয়ের কাউন্টি পুলিশ। পুলিশের তরফ থেকে বলা হয় যে, মায়ারসন তাঁদের এর আগে গুলি করেছিলেন। অক্টোবর ২০, মিজৌরী অঙ্গরাজ্যের সিনেটর জামিলা নাশিদকে (কৃষ্ণাঙ্গ) পুলিশ গ্রেফতার করে হাজতে জামিনবিহীন অন্তরীণ করেন। ১৭ নবেম্বর মিজৌরীর গবর্নর তার রাজ্যে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেন। মাইকেল ব্রাউনের হত্যাকা-ের তদন্তের পর ২৪ নবেম্বর জুরির প্রাথমিক বিবেচনায় হত্যার অপরাধ থেকে পুলিশ অফিসার ডারেন উইলসনকে রেহাই দেয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে এলাকাজুড়ে প্রতিবাদ এবং দাঙ্গা ঘটতে থাকে। পুলিশ কর্মকর্তা উইলসন আত্মগোপনে চলে যান এবং ২৮ নবেম্বর তিনি পুলিশ বাহিনী থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। বোস্টন থেকে লস এ্যাঞ্জেলেস পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ১৭০টি নগরে হাজার হাজার সচেতন নাগরিক জুরির বিচারের প্রাথমিক পর্যায়ের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কানাডার কতিপয় প্রধান নগরে এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনেও জনগণ এই প্রতিবাদে যোগ দেন। কিন্তু তথাপিও ২৭ নবেম্বর মিজৌরীর গবর্নর নিকসন সেই অধঃপতিত জুরির স্থলে নতুন জুরি দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা উইলসনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগটি বিচার করতে অস্বীকার করেন। শত শত প্রতিবাদী, কৃষ্ণাঙ্গ জনগণের জাতীয় সমিতির (ঘঅঈঈচ) নেতৃত্বে সপ্তাহব্যাপী প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে মিজৌরীর রাজধানী জোফারসনে পৌঁছেন। সম্ভবত এর ফলেই ডারেন উইলসনের সমর্থনকারীরা প্রকাশ্যে তাঁর সমর্থনে মোর্চা গঠনে বিরত থাকেন। এই মিছিল ও পদযাত্রা নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৬৫ সালে মার্টিন লুথার কিংয়ের নেতৃত্বে সংঘটিত সেলমা থেকে মন্টগোমারী পদযাত্রার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ২৪ ডিসেম্বর সেন্ট লুইয়ের উপকণ্ঠে ফার্গুসনের নিকটবর্তী বার্কলিতে পুলিশ আবার এন্টোনীয় মার্টিন বলে এক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণকে তেমনি গুলি করে হত্যা করে। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী মার্টিন পুলিশকে গুলি করার জন্য ধেয়ে এসেছিলেন। আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬০-এর দশকের প্রথমার্ধের ছাত্র, তখন দক্ষিণ যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকারবিষয়ক সংগ্রামের বিভিন্ন ঘটনা আমাদের তৎকালীন ছাত্রদের দৃষ্টি ও দর্শন দুই-ই আকর্ষণ করে। গান্ধীজীর আদর্শ অনুযায়ী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র ও তাঁর অনুসারীদের সেই আন্দোলন ছিল অহিংস। সেলমা থেকে মন্টগোমারী পদযাত্রায় নিহত হয়েছিলেন তরুণ সক্রিয় নাগরিক কর্মী জিমিলি জ্যাকসন। তাঁকে হত্যা করেছিলেন আলাবামা রাজ্যের এক সৈনিক। এই যাত্রাকালে বিভিন্ন এলাকায় বাধা, শ্বেতাঙ্গদের বৈরী আচরণ এবং কয়েক কৃষ্ণাঙ্গকে হত্যার ঘটনা সত্ত্বেও আমরা তখনকার তরুণরা মোহিত হয়েছিলাম মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের অবিস্মরণীয় বাণী শুনে এবং বার বার আমাদের বাস ও কর্মস্থানে তা অনুরণিত করে : আমাদের এক স্বপ্ন আছে... আমরা করব জয়। ওয়াশিংটন স্মৃতিসৌধের সামনে দাঁড়িয়ে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র এই বাণী শুনিয়ে উজ্জীবিত করেছিলেন পৃথিবীব্যাপী সমঅধিকারকামী জনগোষ্ঠীকে। পরে এর জন্যই তাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল এক উগ্রবাদী শ্বেতাঙ্গের গুলিতে। সকল মানুষের জন্য সমতা আনয়ন ও রক্ষাকরণের সংগ্রামে অবিনাশী ত্যাগের মহিমা নিয়ে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র যুগের পর যুগ উজ্জীবিত করেছিলেন নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখা তরুণদের। পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সকল ব্যত্যয়, বাধা ও সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে জয়ী হওয়ার সেই অদম্য বিশ্বাস, সকল কাঁটা ধন্য করে মানবতার পতাকা উড়িয়ে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্প। সেই অবিস্মরণীয় ১৯৬০-এর পর ফার্গুসনের ঘটনা তিনটি বিষয়ের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এক, ফার্গুসনের কৃষ্ণাঙ্গ জনগণ অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর উদাহরণ দৃষ্টি করেছেন। যে কোন আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সচেতনতাবোধ জনগণকে স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়। যে অদম্য সাহস এবং চেতনাবোধ ফার্গুসনের জনগণ দেখিয়েছেন তা পৃথিবীব্যাপী সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে মানবতার জয় নিশ্চিতকরণে জয়ের পথে আমাদের স্বপ্নকে লালিত করে আমাদের এগিয়ে যেতে সন্ধিপিত করে। আমরা বলি, বার বার বলি, নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করি : আমরা করব জয়। দুই, ফার্গুসনের এ হৃদয়বিদারক ঘটনা এবং সে এলাকার একমুখী ও একপেশি বিচার ব্যবস্থার আচরণ সে এলাকায় বর্ণবাদ তিরোহিত করণের প্রক্রিয়ায় দ্রুত আরও কিছু করার প্রয়োজনের প্রতি সচেতন সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পিঠস্থান যুক্তরাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্র থেকে যে বর্ণবাদ দূর করা এখনও হয়নি, তা স্মরণে রেখে আইন-কানুন সংশোধন করা, প্রয়োগিক দৃষ্টিকোণ থেকে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ও বিচার বিভাগে কর্মরত ও এদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মী ও নেতার ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়ন করা প্রয়োজন। স্মরণ করা যেতে পারে যে, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেলে যারা অন্তরীণ আছে তার মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষ্ণাঙ্গ। কর্মসংস্থান বিস্তৃতকরণ, আর্থিক-ব্যবস্থা থেকে নতুনদের উদ্যমের সমর্থন দেয়া, শিক্ষার সুযোগ সর্বজনীনকরণ এবং অবকাঠামো ও গণকৃতকধর্মী সহায়তা সকল নাগরিকের জন্য উন্মুক্ত করে সকলকে নিজের মেধা ও পরিশ্রম অনুযায়ী নিজেকে বিকশিত করার সুযোগ ও পরিধি বিস্তৃত করা এখনও অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। তিন, পৃথিবীতে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং রক্ষাকরণে অতন্দ্রপ্রহরী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সমকালে যে ভূমিকা রাখতে চাচ্ছে, তাকে অধিকতর যুক্তিবহ ও ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকার, সেখানকার রাজ্য সরকার ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠান এবং জনগণকে অধিকতর সচেতন হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্যদেশ ও সমাজে অত্যাচার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর নৈতিক অধিকার থাকবে না যদি যুক্তরাষ্ট্রের সকল এলাকায় ও ক্ষেত্রে মানবাধিকার রক্ষাকরণে জয়ের ধ্বজা নিয়ে নিরপেক্ষ ও দৃঢ় আইনের শাসনের সূত্র নিয়ে তাঁরা এগিয়ে না যান। এই প্রেক্ষিতে ১৯৬০-এর দশকে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র ও তাঁর সহযোগীরা যে স্বপ্ন নিয়ে সংগ্রাম করেছিলেন সে স্বপ্নের ডাক আবার নতুন ও অধিকতর সতেজ করে দিতে হবে, এলাকা, বর্ণ ও ধর্ম নির্বিশেষে সকল নাগরিককে নিরবচ্ছিন্নভাবে সমর্থন করতে হবে। লেখক : সাবেক মন্ত্রী
×