ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চলচ্চিত্রের সংখ্যা বেড়েছে, মান বাড়েনি

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪

চলচ্চিত্রের সংখ্যা বেড়েছে, মান বাড়েনি

গৌতম পা-ে ॥ শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা সত্ত্বেও দেশীয় চলচ্চিত্রের মান ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা একে অন্যকে দোষারোপ করেই চলেছেন। কয়েক বছরে হাতেগোনা কয়েকটি চলচ্চিত্র ছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে নকলের অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র। আকাশ সংস্কৃতির যুগে নকল চলচ্চিত্র দেখার জন্য দর্শকের সিনেমা হলে যাওয়ার ইচ্ছা নেই বললেই চলে। বাধ্য হয়ে সিনেমা হল ভেঙ্গে বিপণন কেন্দ্র তৈরি করছেন হল মালিকরা। যার কারণে থমকে গেছে চলচ্চিত্র শিল্পের অগ্রগতি। পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে লেখালেখি হলেও টনক নড়ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও মানসম্পন্ন চলচ্চিত্রের সংখ্যা গণনা করার মতো নয়। বরং ডিজিটালের নামে ভিডিও ছবি নির্মাণের প্রতিযোগিতা চলছে। এগুলো মানের দিক দিয়েই শুধু চলচ্চিত্র শিল্পকে পিছিয়েই দিচ্ছে না, দর্শকদেরও প্রেক্ষাগৃহ বিমুখ করছে। চলচ্চিত্রপ্রেমী দর্শক যাঁরা অধীর আগ্রহের সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহে গেছেন তাঁরাও একরাশ হতাশা নিয়ে ফিরে এসেছেন। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক প্রেক্ষাগৃহ। আগামী বছরেও দেশের অনেক প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হয়ে যাবে বলে চলচ্চিত্র ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন। কারণ, চলতি বছরে এমন কিছু ডিজিটাল চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে যা অনেকটাই নাম-গোত্রহীন জাতীয়। কে পরিচালক, কে প্রযোজক আর কারা নায়ক-নায়িকাÑ এসব প্রশ্নের চেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল এগুলো আসলেই কি সিনেমা! চলচ্চিত্রকে অনেকেই ‘নাসিমা’ (না নাটক না সিনেমা) বলে থাকেন। কেউ বলেন, লম্বা নাটক। চরচ্চিত্রের যে আলাদা একটা ভাষা আছে, দৃষ্টিভঙ্গি আছে এটাও অনেক নির্মাতা জানেন না বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। এই জাতীয় বেশ কিছু চলচ্চিত্র এক-দু‘দিন পর প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। আর যে কটি চলচ্চিত্র ব্যবসা-সফল হয়েছে, আলোচনার জন্ম দিয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে ছিল নকলের অভিযোগ। হুবহু শর্ট টু কাট নকলও নির্মাণ করেছেন অনেকেই। দর্শক দেখেছেন কিন্তু তৃপ্ত হননি পুরোপুরি। তার পরও নকল থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না অনেকেই। এত ঝড়ঝাপটার মাঝেও সুড়সুড় করে ঢুকে পড়ছে বিদেশী কিছু চলচ্চিত্র। মুখে মুখে বড় বড় কথা বললেও বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে বাঁচানোর স্বদিচ্ছা কারোর মধ্যেই দেখা যাচ্ছে না। প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পকলা-কুশলী সবার মধ্যেই একটা গা-ছাড়া ভাব। বিশেষ করে তারকা শিল্পী বলতে এখনও যাদের চিহ্নিত করা হয়, তাঁরা শুধু অর্থকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন, শিল্পকে নয়। দর্শকদের চিন্তা তাদের মাথায় নেই। আছে শুধু একটাই, সেটা হলো অর্থ। আর যেসব পেশাদার পরিচালক এখন ব্যস্ত, তাঁদের হাবভাবই অন্য রকম। ভয়াবহ দুঃসময়েও তারা একাধিক চলচ্চিত্র বানানোর সুযোগ পাচ্ছেন বলে তাদের পা রীতিমতো মাটিতেই পড়ছে না। শুক্রবারের ব্যবসা দেখেই তাঁরা ফুলে ফেঁপে অজ্ঞান। বাকি ছয় দিনের দুরবস্থা তাদের জ্ঞান ফিরিয়ে আনে না। এভাবেই বছরটা পার করে দিচ্ছে চলচ্চিত্র শিল্প। চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা কাজী হায়াৎ বলেন, দেশীয় চলচ্চিত্র এখন শেষের পথে। ডিজিটালে যাচ্ছে বলে অনেকে উচ্চকিত হচ্ছেন বটে কিন্তু প্রকৃত অর্থে এই ডিজিটালাইজেশনকে প্রাইভেটভাবে ছেড়ে না দিয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিৎ ছিল। প্রাইভেটভাবে ডিজিটাল চলচ্চিত্র বানানোর ফলে কোয়ালিটিসম্পন্ন চলচ্চিত্র হচ্ছে না। একমাত্র শাকিব খান ছাড়া দেশে কোয়ালিটিসম্পন্ন কোন অভিনেতাই নেই। অভিনেতা-অভিনেত্রীরা পরিচালক নিয়োগ করছে। ভাল পরিচালক বেকার বসে আছে। সমস্ত চলচ্চিত্রকে একই সারভারে আনা উচিৎ ছিল। সবাই মিলে সিনসিয়ারলি কাজ করলে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, গত ঈদে দেশে ৩২২টি হল খোলা ছিল। প্রায় ৫০টি হলে এখন মালিকরা চলচ্চিত্র না চালিয়ে ভ্যারাইটি শো চালায়। এখন ২৮০টির মতো হল আছে এরমধ্যে এবার শীতে ৪০টির মতো বন্ধ হয়ে গেছে। প্রযোজকদের লগ্নিকরা অর্থের অর্ধেকও ঘরে আসছে না। আমি নিজের টাকা দিয়ে চলচ্চিত্র বানাই। আমার আগামী চলচ্চিত্রের নাম ‘ছিন্নমূল’। প্রযোজক ও পরিচালক, গাজী মাহবুব বলেন, চলচ্চিত্রাঙ্গনে মেধাবী পরিচালকদের আবির্ভাব খুব কম। দর্শক কি ধরনের ছবি দেখতে অভ্যস্থ এ আইডিয়ায় নির্মাতাদের দুর্লতা আছে। কোন এক সময়ে ১২শ’ থকে ১৪শ’ হল ছিল এখন তা নেমে দুইশ-আড়াইশতে চলে এসেছে। এ ব্যর্থতার দায় চলচ্চিত্রাঙ্গনে সংশ্লিষ্ট সকলেরই। চলচ্চিত্রের ফরম্যাটের পরিবর্তন হচ্ছে কিন্তু ভাল নির্মাতার অভাব বেড়েছে। খুব স্বল্প টাকায় চলচ্চিত্র নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে, কাজেই ব্যবসাও কম টাকার হচ্ছে। ফলে সিনেমা হলে দর্শকও কমিয়ে আনছে এখনকার বেশিরভাগ সিনেমা। পুরো বছরের প্রাপ্তি একটা, চলচ্চিত্রের সংখ্যা বেড়েছে। গত ছয় বছরে সবচেয়ে বেশি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছিল ২০০৮ সালে। ওই বছর ৬৭টি চলচ্চিত্রমুক্তি পেয়েছিল। তারপর থেকে সংখ্যার স্তর নিম্নগামী। ২০০৯ সালে ৬৩টি, ২০১০ সালে ৫৭টি, ২০১১ সালে ৪৮টি, ২০১২ সালে ৫০টি এবং ২০১৩ সালে ৫২টি। চলতি বছর ২০১৪ সালে এ পর্যন্ত ৭৬টি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে। সে হিসেবে গত ৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চলচ্চিত্র মুক্তির রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে ২০১৪ সাল। এ বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো-দাবাং, দাগ, এই বুকের ভিতর, কি দারুণ দেখতে, মনের মধ্যে লেখা, তোমার কাছে ঋণী, আকাশ কতো দূরে, অগ্নি, লোভে পাপ পাপে মৃত্যু, প্রেম কি অপরাধ, জীবনঢুলি, কুসুমপুরের গল্প, সীমারেখা, রাজত্ব, অনন্তকালের (ফর এভার), অনুক্রোশ, দবির সাহেবের সংসার, জোনাকির আলো, ডেয়ারিং লাভার, তোকে ভালবাসতেই হবে, এক নম্বর আসামি, মায়ের মমতা, জান, লাভ এক্সপ্রেস, আমি শুধু চেয়েছি তোমায়, যুদ্ধ শিশু, তারকাকাঁটা, ফাঁদ, দুটি মনের পাগলামী, মোস্ট ওয়েলকাম টু, আই ডোন্ট কেয়ার, হিরো দ্য সুপারস্টার, হানিমুন, প্রিয়া তুমি সুখী হও, হেডমাস্টার, মুক্তি, অদৃশ্য শত্রু, কখনও ভুলে যেও না, অল্প অল্প প্রেমের গল্প, আগে যদি জানতাম তুই হবি পর, লাভ স্টেশন, তুই শুধু আমার, ভালবাসার তাজমহল, ভালবাসতে লাগে মন, ক্ষোভ, বৃহন্নলা, সেদিন বৃষ্টি ছিল, সর্বনাশা ইয়াবা, মার্ডার টু, হিটম্যান, কঠিন প্রতিশোধ, সেরা নায়ক, কিস্তিমাত, আমরা করবো জয়, টাইম মেশিন, পিঁপড়াবিদ্যা, জানে না এমন, হরিজন, অনেক সাধের ময়না, মাই নেম ইজ সিমি, স্বপ্ন যে তুই, অনেক সাধনার পরে, এক কাপ চা, চার অক্ষরের ভালবাসা, প্রেম করব তোমার সাথে, দেশা দ্য লিডার, ভালবাসা চায় মন, স্বপ্নছোঁয়া, অপমানের জ্বালা, দুই বিয়াইয়ের কীর্তি, ক্ষণিকের ভালবাসা প্রভৃতি। এ বছর সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে ছিল-মাসুদ পথিক পরিচালিত ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’, মির্জা সাখায়াত হোসেন পরিচালিত ‘হরিজন’, জাহিদুর রহিম অঞ্জনের ‘মেঘমলার’ ও মান্নান হীরার ‘একাত্তরের ক্ষুদিরাম’। এর মধ্যে ‘মেঘমলার’ ছাড়া কোনটি তেমন একটা আলোচনায় আসেনি। মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রের মধ্যে আছেÑ মুনসুর আলীর ’৭১-এর সংগ্রাম’, শাহ আলম কিরণের ‘একাত্তরের মা জননী’, সাদেক সিদ্দিকীর ‘হৃদয়ে ৭১’, মান্নান হীরার ‘একাত্তরের ক্ষুদিরাম’, মান্নান হীরা ও জাহিদুর রহিম অঞ্জন পরিচালিত ‘মেঘমলার’। মুক্তিযুদ্ধের ৫টি চলচ্চিত্র মুক্তি পেলেও ব্যবসার দিক থেকে কোনটি সফলতার মুখ দেখেনি। ঢাকা-কলকাতা যৌথ প্রযোজনার মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের মধ্যে ছিল, দেওয়ান নাজমুলের ‘সীমা রেখা’ ও অশোক পাতির ‘আমি শুধু চেয়েছি তোমায়’। ব্যাপক সমালোচনায় পড়ে চলচ্চিত্রগুলো। ‘সীমা রেখা’ চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী ববিতা গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সময় আমাকে বলা হয়নি, এটি দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনার ছবি। অন্যদিকে অনন্য মামুন দাবি করে ‘আমি শুধু চেয়েছি তোমায়’ চলচ্চিত্রটি তিনি পরিচালনা করেছেন। কিন্তু চলচ্চিত্রে দেখা যায় অশোক পাতির নাম। যৌথ প্রযোজনার নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠে তার বিরুদ্ধে। ‘যুদ্ধশিশু’ ও ‘রোর’ নামে দুটি ভারতীয় চলচ্চিত্র মুক্তি পায় এ বছর। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্র সেন্সর ছাড়পত্র পায়। অন্যদিকে ভারতের দুটি হলে বাংলাদেশের দুটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। আরও কিছু চলচ্চিত্র নীরবে নিঃশব্দে মুক্তির সিদ্ধান্ত থেকে সরে গেছে তার জন্য অবাক হওয়ার কিছুই নেই। কারণ, ব্যবসার অবস্থা আর মান নিয়ে প্রশ্নের ভয়ে হয়ত কিছু চলচ্চিত্র আলোর মুখ দেখেনি। আমাদের চলচ্চিত্রশিল্পের বাস্তবতার নিরিখে বছর শেষে বলতে হচ্ছে সকাল সব সময় দিনের পূর্বাভাস দেয় না, তবুও আশায় বুক বেঁধে থাকতে হয় হয়ত একদিন চলচ্চিত্রের সোনালী দিন ফিরে আসবে। বছর জুড়ে মঞ্চে উৎসবের আমেজ স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২০১৪ সালটি ছিল বাংলাদেশের নাট্যপ্রেমী মানুষের উৎসবের একটি বছর। একের পর এক উৎসব আর নাটকে জমজমাট ছিল ঢাকাসহ সারাদেশের মঞ্চের আঙিনা। দেশের নাটকগুলো বিদেশে মঞ্চায়নের পর সুনাম বয়ে এনেছে। এ বছর বাংলাদেশে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছে। ফেডারেশনে এসেছে নতুন নেতৃত্ব। এছাড়া বছর নাটক উৎসব যেমন বেশি, ভিন্নতাও ছিল বেশি। একদিকে রেপার্টরি, ইন্সটলেশন আর্ট । পাশাপাশি সোনাই মাধবের ১৫০তম মঞ্চায়ন, শিখ ী কথার শততম মঞ্চায়ন, কঞ্জুসের ৬০০তম মঞ্চায়ন, সক্রেটিসের জবানবন্দি ২০০তম প্রদর্শনী, কোর্ট মার্শালের ১০০তম মঞ্চায়ন হয়েছে এ বছর। নাটকপাড়া ঝিমিয়ে পড়ার অভিযোগ কাটিয়ে আবারও যেন ফিরে গেছে সেই সুবর্ণ দিনে। কুশীলবদের জীবনেও এসেছে নতুন গতি। হিসেব মতে ২০১৪ সালে ৪০টিরও বেশি নাটক মঞ্চে এসেছে। আয়োজন করা হয়েছে ৩০টির বেশি নাট্যোৎসব। তাছাড়া বিশেষ দিন তো ছিলই। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশের নাটক, কনসার্ট, নাচ, এ্যাক্রোবেটিকে জমে উঠেছিল রাজধানীর সংস্কৃতি অঙ্গন। গ্যালারিগুলোয় নিয়মিতভাবেই ছিল নানা আয়োজন। তবে সব কিছু ছাপিয়ে ভাল কিছু প্রযোজনা এবার মঞ্চে এসেছে। এ বছর নতুন নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সৃষ্টি কালচারাল সেন্টারে নৃত্যনাট্য বাঁদি-বান্দার রূপকথা, সিএটিএর ম্যাকাব্রে, বটতলার দ্য ট্রায়াল অব মাল্লাম ইলিয়া, সাধনার মেইড ইন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজনা প্রতœনাটক সোমপুর বিহার, উয়ারি বটেশ্বর ও বুদ্ধিজীবী দিবস কেন্দ্রীক নাটক যুদ্ধপুরাণ, স্বপ্নদলের স্পার্টাকাস, থিয়েটার বেইলী রোডের কুহকজাল, ঢাকা থিয়েটারে দি আউটসাইডার, ঊষা উৎসব, অমৃত উপাখ্যান, গল্প নিয়ে গল্প, ইতি পত্রমিতা, প্রাঙ্গণে মোরের ঈর্ষা, দেশনাটকের নিত্যপুরাণ, দর্পণে শরৎশশী (পুনর্নিমাণ), আরশিনগ থিয়েটারের সে রাতে পূর্ণিমা ছিল, তারেক মাসুদ সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের আশ্চর্য সুন্দর এই বেঁচে থাকা, থিয়েটার প্রাক্তনীর প্রথম পার্থ, থিয়েটেক্সের দক্ষিণা সুন্দরী, নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের নাম-গোত্রহীন, আরণ্যকের স্বপ্নপথিক, ভঙ্গবঙ্গ, থিয়েটার আর্ট ইউনিটের না মানুষ জামিন, জাবির নাট্য ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের কবি, রথিয়েটার স্টাডিজ, ত্রিশাল এবং সাত্ত্বিক নাট্য সম্প্রদায়ের বিষাদ সিন্ধু, নাট্যবিন্দুর চাক ভাঙ্গা মধু থিয়েটার পুণ্যভূমির মহুয়া, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের দ্য আউটসাইডার, শূন্য আয়তন, প্রাচ্যনাটের ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ি, প্রভৃতি। এ বছরের আয়োজিত উৎসবগুলোর মধ্যে ছিল স্বপ্নদলের সেলিম আল দীন উৎসব, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাহিত্য বিষয়ক নাটক নিয়ে জাতীয় নাট্যোৎসব, মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের শিখ ী কথা জাতীয় উৎসব, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের বেঙ্গল ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক্যাল ফেস্টিভাল, ছায়ানটের শাস্ত্রীয় নৃত্য উৎসব, রাতভর শুদ্ধসঙ্গীত উৎসব, গঙ্গা যমুনা নাট্যোৎসব, পুতুলনাটের দৃষ্টিপাত নাট্যোৎসব, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় যাত্রা উৎসব, বটতলার রাসমেলা, পথনাট্য পরিষদের জাতীয় পথনাট্যোৎসব, ঢাকা থিয়েটারের সেলিম আল দীন নাট্য উৎসব, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের নাট্য পার্বণ, লোক নাট্যদল বনানীর ময়মনসিংহ গীতিকা নাট্যোৎসব, ঢাকা ড্রামা নাট্যোৎসব, মুনীর চৌধুরী নাট্যোৎসব প্রমুখ। বিভিন্ন দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও নাটকের প্রদর্শনী ছাড়াও ঢাকার বাইরে আয়োজিত হয়েছে বিভিন্ন উৎসব। এর মধ্যে চট্টগ্রামের তির্যকের ৪০ বছর পূর্তি উৎসব, সিলেটের রাস উৎসব, কুষ্টিয়ার লালন মেলা এবং সিরাজগঞ্জের নাট্যলোকের ৪০ বছর পূর্তি উৎসব উল্লেখযোগ্য। নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ এবং কিশোরগঞ্জে আয়োজিত বিভিন্ন উৎসবও দর্শকদের বিপুল আনন্দ দিয়েছে। অডিও বাজারে মৌলিক গানের সঙ্কট কাটেনি স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২০১৪ সালে প্রচুর এ্যালবাম প্রকাশ হলেও মনে রাখার মতো সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। পাইরেসি এড়াতে এবার ডিজিটাল এ্যালবাম প্রকাশের হার বাড়লে গানের মানের উন্নতি হয়। মৌলিক গানও পাওয়া যায়নি খুব একটা। তাছাড়া জনপ্রিয় শিল্পীদের বিদেশমুখিতায় নিয়মিত কনসার্ট না হওয়ার হতাশায় ছিলেন সঙ্গীতপিপাসুরা। এ বছর সবচেয়ে বেশি এ্যালবাম বাজারে এনেছে যে কয়টি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তার মধ্যে রয়েছে, সিডি চয়েস, লেজার ভিশন, জি-সিরিজ, অগ্নিবীণা, সঙ্গিতা, কান্ট্রি মিউজিক, গীতাঞ্জলি, সাউন্ডটেকসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। তবে বাণিজ্যিক দিক থেকে ২০১৪ সালে এ সব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত এ্যালবামগুলোর মৌলিকত্ব এবং নতুনত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। সংখ্যার দিক থেকে যে কোন সময়ের তুলনায় বিষয়ভিত্তিক এ্যালবাম বেশি বাজারে আসলেও গানের কোয়ালিটি নিয়ে শঙ্কা কাটেনি। তবে ঘুরে ফিরে আবারও সিনিয়র এবং পুরনো শিল্পীদের গানেই স্বাদ নিতে হয়েছে শ্রোতাদের। এ বছর নতুন যে সব এ্যালবাম বাজারে এসেছে তার মধ্যে তাহসানের ‘উদ্দেশ্য নেই’ ছিল বছরের আলোচিত এ্যালবাম। পাশাপাশি বাপ্পা মজুমদারের ‘জানি না কোন মন্তরে’, আসিফের ‘জান রে’, কাজী শুভর ‘সাদামাটা-৩’, কনকচাঁপার একক ‘আড়ালে’ এবং প্রিন্স মাহমুদের সুরে মিশ্র এ্যালবাম ‘কেয়া পাতার নৌকো’সহ আরও বেশ কিছু এ্যালবাম শ্রোতাদের মাঝে সাড়া জাগাতে পেরেছে। অন্যদিকে আপেল মাহমুদ আলোচনায় এসেছেন সর্বাধিক গানসমৃদ্ধ ৬৪টি এ্যালবাম ‘দ্য লিজেন্ড’ প্রকাশ করে। ফাহমিদা নবী প্রশংসা কুড়িয়েছেন নজরুল সঙ্গীতের এ্যালবাম ‘আমারে ছুঁইয়াছিলে’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে। অবসকিউর ব্যান্ডও সাধুবাদ পেয়েছে ‘অবসকিউর’ ও ‘বাংলাদেশ’ এ্যালবামটি নিয়ে। তবে এ কথা বলার অবকাশ নেই যে এ বছর সঙ্গীত জগতের অনেকেই দর্শক-শ্রোতার সামনে এসেছেন নতুন রূপ নিয়ে। এ বিষয়গুলোও ছিল বছরজুড়ে আলোচিত হয়েছে। এর মধ্যে সঙ্গীতশিল্পী তাহসানের পাশাপাশি জনও একাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন। এটা নতুন বিষয় না হলেও জনের মডেল হওয়া ছিল অনেকের কাছেই চমক। নাটকে অভিনয় মুঠোফোনের বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া এবং ‘আমরা একেকজন একেক রকম’ জিঙ্গেলের শিল্পী হিসেবে জন ছিলেন এ বছরের আলোচিতদের অন্যতম। ফাহমিদা নবী এবার নাম লিখিয়েছেন প্রযোজকের খাতায়। ‘আনমল’ নামের প্রযোজনা সংস্থার মধ্য দিয়ে প্রযোজক রূপে উপস্থিত হয়েছেন তিনি। অন্যদিকে প্রথমবারের মতো শিশু-কিশোরদের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান ‘মার্কস অলরাউন্ডারের’ বিচারক হয়েছেন পার্থ বড়ুয়া। এ ছাড়াও তিনি সারা বছর আলোচনায় ছিলেন একাধিক নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। হৃদয় খানও আলোচনায় এসেছেন মিউজিক ভিডিওর নির্মাতা হিসেবে। একই সঙ্গে মডেল ও জিঙ্গেল শিল্পী হিসেবে মমতাজ উপস্থিত হয়েছেন জিসান ফুডের একটি বিজ্ঞাপনে। কুমার বিশ্বজিৎতনয় নিবিড় শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করছে ‘সুতপার ঠিকানা’ চলচ্চিত্রে। বাবা আইয়ুব বাচ্চুর হাত ধরে গানের মধ্যে উঠে এসেছেন আহনাফ তাজায়ার আইয়ুব। যমুনা বামবা কনসার্টের শেষদিনে গিটার বাদনের মধ্য দিয়ে সহস্র শ্রোতার মন জয় করেন তিনি। ‘লালচর’ চলচ্চিত্রে গান করার মধ্য দিয়ে প্লেব্যাকের বিরতি ভেঙ্গেছেন ডলি সায়নন্তনী। দলছাড়া হয়ে থাকার পর আবার ব্যান্ড রেডিও এ্যাকটিভ নিয়ে দর্শক শ্রোতার সামনে এসেছেন সঙ্গীতশিল্পী পলাশ। ফিডব্যাক নোভা ব্যান্ডও এসেছে নতুন এ্যালবাম আয়োজন নিয়ে। ব্যান্ড ভাইকিংস ফিরেছে ১০ বছর পর। ‘রানআউট’ চলচ্চিত্রে গান করে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ব্যান্ডটি। এ বছর টালিউডে কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে অভিষেক হয়েছে হাবিব ওয়াহিদের। ‘বিন্দাস’ চলচ্চিত্রে ‘তোমাকে ছেড়ে আমি’ গানটির মধ্য দিয়ে দুই বাংলায় আলোচিত হয়ে ওঠেন তিনি। এছাড়া তার সঙ্গীত পরিচালনায় মমতাজ ‘হৃদ পিঞ্জরে’ শিরোনামের জিঙ্গেলে কণ্ঠ দিয়ে আলোচনায় এসেছেন। হৃদয় খান শ্রোতাদের মাঝে সাড়া জাগিয়েছেন ‘আমি শুধু চেয়েছি তোমায়’ চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনার মধ্য দিয়ে। এ চলচ্চিত্রে তার গাওয়া ‘ভাললাগে না’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। জেমসও এ বছর প্রথম একাধিক চলচ্চিত্রে গান করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। ‘সত্তা’ চলচ্চিত্রে ‘আগুন জ্বেলেও ডুবলাম আমি’, ‘দেশা দ্য লিডার’ চলচ্চিত্রে ‘পতাকাটা খামচাতে’ ও ‘জিরো ডিগ্রি’ চলচ্চিত্রের ‘আলোটাই দেখেছ’ শিরোনামের গানগুলোয় কণ্ঠ দেন তিনি। এ ছাড়াও ফাহমিদা নবী ও সামিনা চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে একসঙ্গে কনসার্ট করেন। তবে সঙ্গীতাঙ্গণে সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় হলো ‘যমুনা-বামবা’ কনসার্টের মধ্য দিয়ে লাখো দর্শকের মন জয় করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ও সম্ভাবনাময় ব্যান্ডগুলো। ৩১ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত এই কনসার্টে সোলস, মাইলস, ওয়ারফেইজ, নগর বাউলসহ বামবার প্রতিটি ব্যান্ড অংশ নেয়। ১ ডিসেম্বর চ্যানেল আই চত্বরে অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম ব্যান্ড উৎসব। ‘কোকাকোলা-চ্যানেল আই ব্যান্ড ফেস্ট ২০১৪’ এ অংশ নেয় এলআরবি, আর্ক, ডিফরেন্ট টাচ, দলছুট, চিরকুটসহ ২২ ব্যান্ড। যাঁদের হারালাম সংস্কৃতি ডেস্ক ফিরোজা বেগম : বাংলাদেশের প্রথিতযশা নজরুল সঙ্গীত শিল্পী। সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে তিনি নজরুল সঙ্গীতের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। ভারতীয় উপমহাদেশে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তাকে বাংলা সঙ্গীতের প্রতীকীস্বরূপ বিবেচনা করা হয়। এ বছর ৯ সেপ্টেম্বর ৮৪ বছর বয়সে মারা যান নন্দিত নজরুল সঙ্গীতশিল্পী ফিরোজা বেগম। নজরুল সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। এর মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, নজরুল একাডেমি পদক। ওস্তাদ রামকানাই দাস : প-িত রামকানাই দাস বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত লোকসঙ্গীত শিল্পী ও সংগ্রাহক। তিনি ১৯৩৫ সালে সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৪ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। ১৯৬৭ সাল থেকে সিলেট বেতারে নিয়মিত সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে গান পরিবেশন করেন। অভিনেতা খলিল : ষাটের দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক খলিল উল্লাহ খান ৭ ডিসেম্বর ৮০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে জহির রায়হান ও কলিম শরাফীর পরিচালনায় ‘সোনার কাজল’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে অভিনয় শুরু করেন। চলচ্চিত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন। ২০১৪ সালের মে মাসে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১২’ এ আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি। বশির আহমেদ : একুশে পদকপ্রাপ্ত সঙ্গীতশিল্পী বশির আহমেদ ১৯৩৯ সালের ১৯ নবেম্বর কলকাতার খিদিরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯ এপ্রিল, ২০১৪ মোহাম্মদপুরের নিজ বাসায় ৭৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ চলচ্চিত্রের গানের জন্য ২০০৩ সালে শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। বাউল আবদুল করিম শাহ : একুশে পদকপ্রাপ্ত আবদুল করিম শাহ ১০ জুন, ২০১৪ মৃত্যুবরণ করেন। গুণী ও প্রবীণ এই বাউলশিল্পীর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। বাংলা একাডেমি থেকে ২০১১ সালে বাউল শিল্পী হিসেবে শিল্পকলায় একুশে পদক পান বাউল আবদুল করিম শাহ। এছাড়া ১৯৯৯ সালে কলকাতায় মধুসূধন মঞ্চের পুরস্কারসহ মোট ১৫টি পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। চিত্রপরিচালক মুহাম্মদ হান্নান : ২১ জানুয়ারি চলচ্চিত্র নির্মাতা, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ হান্নান মৃত্যুবরণ করে। ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে লঞ্চে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। ১৯৮৩ সালে ‘রাই বিনোদিনী’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন মুহাম্মদ হান্নান। খোদাবক্স সানু : শিক্ষক-সঙ্গীত, পরিচালক খোদাবক্স সানু মৃত্যুবরণ করেন এ বছর ১৭ অক্টোবর। সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের সঙ্গীত পরিচালনার কাজও করেন। তিনি স্বাগতা, সন্ধি ও সভ্যতার বাবা। ড্রামবাদক মিল্টন আকবর : ড্রামবাদক ও মিউজিশিয়ান মিল্টন আকবর ৩০ নবেম্বর লন্ডনে মারা যান। পরিচালক এনায়েত করিম : চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সেন্সর বোর্ডের সাবেক সদস্য, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সাবেক সহকারী সাধারণ সম্পাদক, চলচ্চিত্র নির্মাতা এনায়েত করিম ৩ ডিসেম্বর মারা যান। বেলাল আহমেদ : ১৮ আগস্ট ৬৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন চলচ্চিত্র পরিচালক বেলাল আহমেদ। ১৯৬৭ সালে নজরুল ইসলামের সহকারী পরিচালক হিসেবে ‘স্বরলিপি’ চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন বেলাল আহমেদ। এর আগে ’৬০-এর দশকে কাজী জহিরের পরিচালিত ‘বন্ধন’ চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ হয়েছিল তার। মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী : আধুনিক বাংলা গানের খ্যাতিমান শিল্পী মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী ৪ নবেম্বর ৭০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ষাট, সত্তর ও আশির দশকে চলচ্চিত্র, রেডিও এবং টেলিভিশনে মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী দাপটের সঙ্গে গান গেয়েছেন। বর্ণিল সঙ্গীত জীবনে তিনি ২০৬টি চলচ্চিত্রে গান করেছেন। তাঁর গাওয়া গানের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। বাংলা গানের পাশাপাশি উর্দু গানও করেছেন তিনি। বলিউডের আলোচিত চলচ্চিত্র সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ বলিউডে ২০১৪ সালের শুরুতে ছিল নতুন প্রজন্মের দাপট। এরপর ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত শিল্পীরা পর্দার দখল নিতে শুরু করে। বড় বাজেটের বহুল প্রতীক্ষিত বেশকিছু চলচ্চিত্র মুক্তি পেলেও বলিউডের জন্য বছরটি ছিল হতাশার। তবে ২০১৪ সালে মুক্তি পেয়েছে প্রায় ১৮০টি হিন্দি চলচ্চিত্র। এর মধ্যে মাত্র সাতটি ছাড়াতে পেরেছে একশ’ কোটির মাত্রা। আর একে মোটেও ভালভাবে দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা। এই সাতটি চলচ্চিত্র এ বছর বলিউডকে দিয়েছে প্রায় ২ হাজার ৩৫০ কোটি রুপী। বছর শেষে চমক দেখিয়েছে আমির খানের ‘পিকে’। এছাড়া টাইগার শ্রফ-ক্রিতি শ্যাননের ‘হিরোপান্তি’, সিদ্ধার্থ মালহোত্রা-শ্রদ্ধা কাপুর-রিতেশ দেশমুখের ‘এক ভিলেইন’, বারুন ধাওয়ান-ইলিয়ানা ডি ক্রুজের ‘ম্যায় তেরা হিরো’, আলিয়া ভাট-রানদিপ হুডার ‘হাইওয়ে’ এবং অর্জুন কাপুর-আলিয়া ভাটের ‘টু স্টেটস’ বছরের প্রথম ছয় মাস বক্স-অফিসে ছিল এই চলচ্চিত্রগুলোর রাজত্ব। এই সিনেমাগুলো কেবলমাত্র লগ্নিকৃত অর্থ উঠিয়েই নেয়নি, ভাল ব্যবসাও করেছে। কিন্তু বছরের বাকিটা সময় পরিবেশকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারেনি কেউ। ২০১৪ সালে সবচেয়ে খারাপ ছিল নবেম্বর মাস, ‘হ্যাপি এন্ডিং’, ‘দ্য শওখিনস’ এবং ‘কিল দিল’-এর মতো চলচ্চিত্রগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। মনমরা বক্স-অফিসের এই বছরে খানিকটা উষ্ণতা ছড়িয়েছে যেই চলচ্চিত্রগুলো, সেগুলো হলো সালমান খানের ‘জয় হো’ (প্রায় ১১০ কোটি), অক্ষয় কুমারের ‘হলিডে’ (১১০ কোটি), অর্জুন-আলিয়ার ‘টু স্টেটস’ (১০৫ কোটি), সালমানের ‘কিক’ (২০০ কোটির বেশি), হৃত্বিক রোশান-ক্যাটরিনা কাইফের ‘ব্যাং ব্যাং’ (১৪৫ কোটি), শাহরুখ খান-দিপিকা পাড়ুকোনের ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ (১৮৮ কোটি) এবং অজয় দেবগন-কারিনা কাপুর খানের ‘সিংহাম রিটার্নস’ (১৪০ কোটি রুপী)। একশ’ কোটির কাছাকাছি যেতে পেরেছে ‘এক ভিলেইন’ (৯৬ কোটি) এবং ‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহানিয়া’ (৮৬ কোটি)। ২০১৩ সালে একশ’ কোটির মাত্রা ছাড়াতে পেরেছিল মাত্র পাঁচটি সিনেমা।
×