স্টাফ রিপোর্টার ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদ-ের রায়ের প্রতিবাদে জামায়াত-শিবিরের ডাকা দুই দিনের হরতালের প্রথম দিন জীবনযাত্রা ছিল প্রায় স্বাভাবিক। যুদ্ধাপরাধীর জন্য জামায়াতীদের হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছে জনতা। রাজধানীসহ দেশজুড়েই দেখা গছে নামকাওয়াস্তে হরতালের চেহারা। কয়েকটি বাসে চোরাগোপ্তা হামলা, আগুন দেয়া আর ঝটিকা মিছিলেই সীমাবন্ধ ছিল হরতাল। কয়েকটি স্থানে নাশকতার চেষ্টা করলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারিতে সফল হয়নি উগ্রবাদী এ গোষ্ঠীর নেতাকর্মীরা। নাশকতায় জড়িত থাকার দায়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আটক হয়েছে অর্ধ শতাধিক। হরতালে নাশকতা রোধে প্রথমবারের মতো খুদে ক্যামেরায় রাজপথে নেমেছিল পুলিশ।
মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালে আজহারের যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ে ফাঁসির আদেশ আসার পরপরই জামায়াত হরতালের ঘোষণা দেয়। হরতালের শুরুতেই বুধবার ভোর পৌনে ছয়টার দিকে হরতালের সমর্থনে যাত্রাবাড়ী ও গে-ারিয়া থানার মাঝামাঝি ঘুণ্টিঘর এলাকা জামায়াত-শিবিরের ৪০ থেকে ৫০ জন নেতাকর্মী ঝটিকা মিছিল বের করে। তারা রাস্তা অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে ওই এলাকার সব দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মিছিলকারীরা একটি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক ভাংচুর করে। পরে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। যদিও ফায়ার সার্ভিস গাড়িতে পুরোপুরি আগুন ধরার আগেই নিভিয়ে ফেলে। ফলে তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পুলিশের ধাওয়ার মুখে হামলাকারীরা বিভিন্ন গলিতে ঢুকে পালিয়ে যায়। অন্যদিকে সকাল আটটার দিকে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় ঝটিকা মিছিল শেষে ৩/৪টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবনী শংকর কর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জনকণ্ঠকে জানান, এ বিষয়ে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সন্ধ্যা সাতটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। এদিকে বেলা এগারোটার দিকে রাজধানীর মিরপুর-পল্লবী এলাকায় জামায়াত-শিবির ঝটিকা মিছিল বের করার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় মিছিলকারীরা পালিয়ে যায় বলে জানান পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ জিয়াউজ্জামান। এদিকে রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরের যান চলাচলও ছিল স্বাভাবিক। রাজপথে পরিবহন এমনকি স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করেছে প্রাইভেটকার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অধিকাংশতে এমনিতেই চলছে ছুটি। এ কারণে শিক্ষাঙ্গনে প্রভাব ফেলতে পারেনি হরতাল। খোলা ছিল অনেক মার্কেট। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের কর্মসূচী প্রত্যাখ্যান করে হরতালবিরোধী মিছিল সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলো। হরতাল ডেকে জামায়াত-শিবির কর্মীরা মাঠে নামতে না পাড়ায় জনজীবন স্বাভাবিক ছিল বলে মনে করছেন অনেক সাধারণ মানুষ। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতারও প্রশংসা করেছেন তাঁরা। এ কারণে সকালেই প্রচুর যানবাহন চলাচল শুরু হয়।