ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হলমার্কের ৩৭০ কোটি টাকা জরিমানা

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ২ জানুয়ারি ২০১৫

হলমার্কের ৩৭০ কোটি টাকা জরিমানা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শুল্ক সুবিধায় আমদানি করা সুতা ও কাপড় খোলাবাজারে বিক্রি করে এবার অন্যভাবে ফেঁসে গেছে আলোচিত হলমার্ক গ্রুপ। শুল্ক সুবিধায় আমদানি করা সুতা ও কাপড় খোলাবাজারে বিক্রি করায় গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মেসার্স হলমার্ক ডিজাইন ওয়্যার লিমিটেডকে ৩৭০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একইভাবে এ অর্থদ-ের পাশাপাশি শুল্ক ও করাদি বাবদ ১১৬ কোটি ৩৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকাও শিল্প প্রতিষ্ঠানটিকে এখন পরিশোধ করতে হবে। আরোপিত দ- ও শুল্ক করবাবদ উপরোক্ত টাকা মিলে সর্বমোট ৪৮৬ কোটি ৩৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা আগামী ২১ দিনের মধ্যে সরকারী কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার ড. সহিদুল ইসলাম এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছেন। জানা যায়, মেসার্স হলমার্ক ডিজাইন ওয়্যার লিমিটেডের (নন্দখালী, তেঁতুলঝোড়া, হেমায়েতপুর) বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কাস্টমস আইন ১৯৬৯-এর সেকশন ১৫৬(১) টেবিলের দফা ১, ১২, ও ৯০ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে এ অর্থদ- করা হয়েছে। একইভাবে একই আইনের সেকশন ৩-এর ক্ষমতাবলে ২০১১ সালের ৭ মার্চ থেকে ২০১৪ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩৪৯টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে আমদানিকৃত কাঁচামাল দ্বারা উৎপাদিত পণ্য রফতানি না করায় শুল্ক ও করাদি বাবদ আরেকটি জরিমানা করা হয়েছে। সর্বমোট ৪৮৬ কোটি ৩৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা আগামী ২১ দিনের মধ্যে সরকারী কোষাগারে জমা দিয়ে ট্রেজারি চালানের মূল কপি কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট, ৩৪২/১, সেগুনবাগিচা, ঢাকার দফতরে জমা দেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কমিশনার ড. সহিদুল ইসলাম বলেন, জরিমানার দিক থেকে একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটি একটি রেকর্ড। এর আগে এত বড় অঙ্কের জরিমানা হয়নি। আমরা ২১ দিনের মধ্যে পুরো টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দিতে বলেছি। এর বাইরে প্রতিষ্ঠানটি আপিলের জন্য ৯০ দিন সময় পাবে। আদালত থেকে তেমন কোন নির্দেশনা না আসলে আমরা ২০২ ধারারে ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। জানা যায়, ৩৪৯টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে আমদানি করা কাঁচামাল দিয়ে পোশাক তৈরি করে রফতানি করার কথা থাকলেও তারা তা করেনি। বরং তারা খোলাবাজারে কাঁচামাল বিক্রি করেছে। ওই পণ্য বিক্রি করার দায়ে তাদের কাছে ১১৬ কোটি টাকার শুল্ক চেয়ে দাবিনামা পাঠানো হয়। এ পর্যায়ে তারা ওই কাঁচামালে তৈরি পণ্য রফতানি করা হয়েছে বলে দাবি করলে তাদের কাছে এ সংক্রান্ত কাগজপত্র চায় কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট। তারা তা দিতে ব্যর্থ হয়। এ দাবিনামা নিষ্পত্তির জন্য হলমার্ক গ্রুপের প্রতিনিধিদের শুনানিও নেয়া হয়। এতেও তারা শক্ত জবাব দিতে পারেনি। সোনালী ব্যাংকের ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা লোপাটের ঘটনায় হলমার্ক গ্রুপের এমডি তানভীর মাহমুদসহ ৬ জন বর্তমানে জেলে আছেন। আত্মসাত করা ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকার মধ্যে একশ’ কোটি টাকা পরিশোধ করার শর্তে গত বছরের ৫ আগস্ট আদালতের আদেশে জামিনে মুক্তি পান তানভীর মাহমুদের স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম।
×