ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বাগতিক হিসেবে চমক দেখাতে চায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২ জানুয়ারি ২০১৫

স্বাগতিক হিসেবে চমক দেখাতে চায় বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘শুরু হওয়া ২০১৫ যেন ২০১৪ সালের চেয়ে ভাল হয়। গত বছর আমরা বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ও প্রীতি ম্যাচ খেলেছি। ওই ম্যাচগুলোর আলোকে বলতে পারি আমাদের দলের শক্তিমত্তা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। বেড়েছে আত্মবিশ্বাস। এর সুফলই হয়ত বা আমরা পেতে পারি আসন্ন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে।’ কথাগুলো সাইফুল বারী টিটুর, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের বর্তমান কোচ। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ সামনে রেখে ঘোষণা করা হয়েছে বাংলাদেশ দলের প্রাথমিক স্কোয়াড। এতে ডাক পেয়েছেন ২৬ ফুটবলার। তাদের অনুশীলন ক্যাম্প শুরু হয়েছে সাভার বিকেএসপিতে। সেখানে যাওয়ার আগে বৃহস্পতিবার মতিঝিলের বাফুফে ভবনে দুপুরে প্রয়োজনীয় ক্রীড়া সরঞ্জামাদিসহ কোচ টিটুর কাছে রিপোর্ট করেন ফুটবলাররা। অবশ্য তাদের সবাই আসতে পারেননি। ১৯ জন রিপোর্ট করেন। দলের নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম জ্বরের কারণে এবং জাহিদ হোসেনসহ বাকি ঢাকার বাইরে অবস্থান করায় এবং হরতালের কারণে সময় মতো হাজির হতে পারেননি। টিটু জানান, বাকিরা পরে মূল দলের সঙ্গে বৃহস্পতিবারই বিকেএসপিতে যোগ দেবেন। সামনে যদিও বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ, তবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের মূল টার্গেট হওয়া উচিত ২০১৫ সালের শেষদিকে ভারতে অনুষ্ঠিতব্য সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ- অভিমত ব্যক্ত করেন টিটু। ‘এরপর আমরা চেষ্টা করতে হবে এশিয়ান লেভেলে সে ধরনের পারফর্মেন্স করা।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘জাপান অনুর্ধ-২১ জাতীয় দল এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান আই পার্কের সঙ্গে কদিন আগে যে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলা হয়েছে, তাতে যেসব বাংলাদেশী প্লেয়ার খেলেন, তাদের প্রায় সবাই আছেন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের জন্য ঘোষিত দলে। তারা সবাই ফিট আছে। তবে বঙ্গবন্ধু কাপে আসিয়ান অঞ্চলের দলগুলো সম্প্রতি সুজুকি কাপ খেলেছে। সেই প্লেয়ারগুলোই যদি এখানে খেলতে আসে, তাহলে আমাদের জন্য তারা অনেক কঠিন প্রতিপক্ষই হবে।’ বাংলাদেশ দলের কোন দিকটি নিয়ে বেশি কাজ করছেন? টিটুর জবাব, ‘আমি চেষ্টা করছি স্কোরিংয়ের ক্ষেত্রে যেন মিডফিল্ডাররা যেন বেশি কার্যকর হয়, এটা নিয়ে কাজ করতে।’ জানা গেছে, বাহরাইন বাদে আমন্ত্রিত দলগুলো হবে জাতীয় বা অলিম্পিক দল। এ প্রসঙ্গে টিটু বলেন, ‘স্বাগতিক দেশ হিসেবে আমাদের ফাইনালে খেলা উচিত। তবে আগে দেখতে হবে প্রতিপক্ষ দলগুলো কতটা শক্তিধর। সে অনুযায়ী লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।’ যদিও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বলেন, ‘স্বাগতিক হিসেবে বাংলাদেশের টার্গেট থাকবে এই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলা।’ দলের টিম লিডার ইকবাল হোসেন বলেন, ‘২০১৪ সালে জাতীয় দল বলতে গেলে খেলার মধ্যেই ছিল। নিজের চেনা মাঠে ও পরিবেশে খেলা হবে বিধায় বাংলাদেশ দল ভাল খেলবে, এটা আমরা আশা করতেই পারি। তবে এর জন্য দরকার সবকিছুর সমন্বয়।’ আসর শুরুর আগে একজন বিদেশী কোচ আনা হতে পারে। এ প্রসঙ্গে ইকবাল বলেন, ‘দল এখন একজন কোচের অধীনে অনুশীলন করছে। তবে কদিন পর অন্য কেউ আসলে সেটা দলের জন্য একটু সমস্যাই হবে। এক্ষেত্রে পুরনো কোচ ক্রুইফ আসলে ভালই হবে। কেননা, তিনি এই দল নিয়ে এর আগে কাজ করেছেন। ফলে তার জন্য কাজ করতে সুবিধে হবে।’ দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘সামনের দিনগুলো যেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের জন্য ভাল হয়, সে প্রত্যাশাই করছি। ডে বাই ডে আমরা যত খেলব, ততই আমাদের খেলার মানের উন্নতি হবে। আশা করি বঙ্গবন্ধু কাপে আমরা ভালই খেলব। দেশের মানুষকে ভাল কিছু উপহার দিতে আমরা নিজেদের উজাড় করেই খেলব।’ দলের তরুণ মিডফিল্ডার হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস বলেন, ‘জাতির জনকের নামে টুর্নামেন্ট হবে। এটা আমাদের দারুণ উজ্জীবিত করবে। ফাইনালে যাওয়ার জন্য আমরা নিজেদের সামর্থ্যরে শেষবিন্দু নিংড়ে দিতে সচেষ্ট থাকব। যতই জিতব, ততই আমাদের ফুটবলের জাগরণ হবে। মাঠ, আবহাওয়া, দর্শক- এ সবই আমাদের পক্ষে। দলের আরেক তরুণ ডিফেন্ডার রায়হান হাসান বলেন, ‘জাপান ও কোরিয়ান বুসান টিমসহ গত বছর বাংলাদেশ দলের হয়ে সবই আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো খেলেছি। আমাদের দলের কম্বিনেশন অনেক ভাল। আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে ভাল কিছু করার।’ দলের নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার মিঠুন চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কাপে কে আমাদের কোচিং করাবেন, এ নিয়ে কোন দুশ্চিন্তা নেই। ক্রুইফ এলে তার এবং আমাদের জন্য ভাল হবে। না এলেও সমস্যা নেই। আমরা মানিয়ে নিতে চেষ্টা করব।’ বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে আছেন শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডের- মাজহারুল ইসলাম, রায়হান হাসান, মোহাম্মদ লিংকন, নাসির উদ্দিন চৌধুরী, ইয়াসিন খান, ইয়ামিন আহমেদ চৌধুরী মুন্না, মোনায়েম খান রাজু, মামুনুল ইসলাম, সোহেল রানা, তকলিস আহমেদ, শাখাওয়াত হোসেন রনি, জামাল ভূইয়া, শহিদুল আলম ও রুবেল মিয়া; আবাহনী লিমিটেডেরÑ- আতিকুর রহমান মিশু, নাসিরুল ইসলাম; মোহামেডানেরÑ জাহিদ হোসেন, তপু বর্মণ, ওয়াহেদ আহমেদ, আরিফুল ইসলাম, জাহিদ হাসান এমিলি ও হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস; মুক্তিযোদ্ধা সংসদেরÑ রাসেল মাহমুদ লিটন; শেখ রাসেলেরÑ মিঠুন চৌধুরী; চট্টগ্রাম আবাহনীর আতিকুর রহমান ফাহাদ ও টিম বিজেএমসির আমিনুল ইসলাম সজীব।
×