রাজীব হাসান কচি, চুয়াডাঙ্গা ॥ খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গার একমাত্র ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল প্রজনন কেন্দ্রটি চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ছাগল না থাকায় ও লোকবল সঙ্কটে খামারটি তার উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারছে না। ফলে বৃহত্তর কুষ্টিয়া-যশোর অঞ্চলের বিখ্যাত ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল প্রজনন, সংরক্ষন সম্প্রসারণের উদ্যোগ তেমন কাজে আসছে না। শুরুতে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের জন্য হতদরিদ্র, বিধবা নারী ও ভূমিহীন জনগণের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের লক্ষ্য নিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও বর্তমানে সে অবস্থা নেই। এখন প্রজননের জন্য প্রতিটি পাঁঠা এক হাজার ২শ’ ও ছাগী এক হাজার ৮শ’ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
সারাদেশের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, যশোর ও ঝিনাইদহ জেলার মানুষ ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল বেশি পালন করে থাকে। এ জাতের ছাগলের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু ও এর চামড়ার কদর রয়েছে বিশ্বজুড়ে। সেই লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে সরকার খুলনা বিভাগীয় ছাগল উন্নয়ন খামারটি চুয়াডাঙ্গায় প্রতিষ্ঠিত করে। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় ১০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় খামারটি। খামারটিতে ৮টি শেডে এক হাজার ৫০টি ছাগলের ধারণক্ষমতা রয়েছে। তবে বর্তমানে পাঁঠা, ছাগী ও বাড়ন্ত ছাগল মিলিয়ে রয়েছে ৬শ’ ৭১টি। এ ছাগল উন্নয়ন খামারে প্রতিদিন ১০ টাকা সরকারী ফি দিয়ে ছাগল পালনকারীরা ছাগীকে প্রজননের জন্য নিয়ে আসে।
সম্ভাবনাময় এ ছাগল খামারটি জনবলের অভাবে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছে না। গেট এ্যাটেনডেন্ট ৮ জনের বিপরীতে তিনজনকে দিয়ে চলছে খামারটি। হতদরিদ্র, বিধবা নারী ও ভূমিহীন জনগনের মধ্যে বিনামুল্যে একটি ছাগীর বিনিময়ে দুই বছরে দুটি ছাগীর বাচ্চা খামারকে ফেরত দেবে। এ লক্ষ্য নিয়ে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল সম্প্রসারণ ও প্রজনন কার্যক্রম শুরু করার কথা থাকলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমানে সরকারী নীতি অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ প্রতিটি পাঁঠা এক হাজার ২শ’ ও ছাগী এক হাজার ৮শ’ টাকা মূল্যে ক্রয় করছেন। হতদরিদ্র মানুষ নগদ অর্থের বিনিময়ে ছাগল কিনতে না পারায় কমে আসছে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল পালন। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ভর্তুকি দিয়ে ছাগলের খামারটি পরিচালনা করে আসছে। সরকারী নজরদারি এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা গেলে এ জাতের ছাগল উৎপাদন সম্প্রসারণ করা সম্ভব হবে।
চুয়াডাঙ্গা সরকারী ছাগল উন্নয়ন খামারের ব্যবস্থাপক আরমান আলী বলেন, ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের সুস্বাদুু মাংস ও চামড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ জাতের ছাগল সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও প্রজনন করা গেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।