ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুনর্অর্থায়ন তহবিলের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ে আইসিবির অনুরোধ

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ৭ জানুয়ারি ২০১৫

পুনর্অর্থায়ন তহবিলের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ে আইসিবির অনুরোধ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে দিতে গঠিত বিশেষ পুনর্অর্থায়ন সহায়তা তহবিলের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করেছে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। তহবিল ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সুপারিশের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ৩শ’ কোটি টাকা চেয়েছে সরকারের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানটি, যা ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে বিতরণ করা হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এসএম মনিরুজ্জামানকে আইসিবির দেয়া এক চিঠি অনুসারে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এরই মধ্যে ‘শেয়ারবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল’-এর অনুকূলে দ্বিতীয় কিস্তির ৩শ’ কোটি টাকা ছাড়ের সরকারী আদেশ জারি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও গত ২৪ ডিসেম্বরের এক চিঠিতে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের আবেদন করার জন্য পরামর্শ দেয় আইসিবিকে। এর প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ এককালীন ৩শ’ কোটি টাকা ছাড়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এসএম মনিরুজ্জামানকে অনুরোধ করে পত্র দিয়েছে আইসিবি। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফায়েকুজ্জামান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, তহবিলের প্রথম কিস্তির ৩শ’ কোটি টাকার মধ্যে ২০১৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ১৫টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে মোট ২৯৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। জানা যায়, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চাহিদা থাকলেও সহায়তা তহবিলের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ে বিলম্ব হচ্ছিল। ঋণ সুবিধা পেতে আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে গত ২৬ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও তহবিল তদারকি কমিটি অর্থ ছাড়ের অনুরোধ জানালেও অর্থ মন্ত্রণালয়ে তা আটকে যায়। আইসিবি জানিয়েছে, বর্তমানে এ তহবিল থেকে ঋণ সহায়তা পেতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে আরও ১৭২ কোটি টাকার আবেদন জমা রয়েছে। এখন পর্যন্ত পুনর্অর্থায়ন সহায়তা তহবিলের সুফল ভোগ করছেন ১০ হাজার ৫৬৮ জন বিনিয়োগকারী। মাত্র ৯ শতাংশ সুদে বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের অনুকূলে ২৯৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার ঋণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা আরও সিকিউরিটিজ কিনতে কাজে লাগিয়েছেন তারা। এতে বিনিয়োগকারীদের সামর্থ্য যেমন বেড়েছে, তেমনি বাজারে তারল্য ও চাহিদা বেড়েছে। আইসিবি জানিয়েছে, গত ১২ জুন পর্যন্ত মোট ৪২টি প্রতিষ্ঠান পুনর্অর্থায়ন তহবিল থেকে মোট ৪৭৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা বরাদ্দের আবেদন জানায়। এরমধ্যে ২০টি মার্চেন্ট ব্যাংক ও ২২টি ব্রোকারেজ হাউস রয়েছে, যাদের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৩২২। ওই সময় পর্যন্ত মোট ৩২টি প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ৩৫৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকার ঋণ আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে, যার সিংহভাগই পুনর্অর্থায়ন তহবিলের প্রথম কিস্তি থেকে দেয়া হয়। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ঋণ সুবিধা পাওয়া ১৩টি প্রতিষ্ঠানে মোট নয় হাজার ছয়জন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন, যারা ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ টাকার ঋণ সুবিধা পেয়েছেন। এরমধ্যে নয়টি মার্চেন্ট ব্যাংকের ছয় হাজার ৭২৫ জন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী পেয়েছেন ১৮৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আর চারটি ব্রোকারেজ হাউসের দুই হাজার ২৮১ জন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী পেয়েছেন ৫৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। পুনর্অর্থায়ন তহবিল থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ ছাড় করা হয়েছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের অনুকূলে। আইসিবির সহযোগী এ প্রতিষ্ঠান ৩শ’ কোটি টাকার তহবিল থেকে ৮৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা পুনর্অর্থায়ন সহায়তা পেয়েছে। তাদের মোট চার হাজার ৩৬২ জন গ্রাহক এ সহায়তা পেয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত আরেক প্রতিষ্ঠান জনতা ক্যাপিটাল এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে ৭৯৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর জন্য ৪০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে।
×