ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পর্নোগ্রাফী প্রচারের মামলায় ইটিভি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৪:৫৮, ৭ জানুয়ারি ২০১৫

পর্নোগ্রাফী প্রচারের মামলায় ইটিভি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পর্নোগ্রাফী প্রচারের অভিযোগে এক নারীর দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন বেসরকারী একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম। আগামী ৮ জানুয়ারি তাঁর রিমান্ড ও জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছে ঢাকার সিএমএম আদালত। আসামিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত সোমবার গুলশানে নিজের কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের বলেন, সরকার একুশে টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। সোমবার থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় টেলিভিশন চ্যানেলটির সম্প্রচার দেখা যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান, সরকার টেলিভিশন চ্যানেলটির সম্প্রচার বন্ধের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি। পাড়া মহল্লায় টেলিভিশন চ্যানেলটি টিভিতে না দেখতে পাওয়ার পেছনেও সরকারের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। সার্বিক বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে একুশে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ তথ্য মন্ত্রণালয়ের কোন হস্তক্ষেপ কামনা করেনি। মঙ্গলবার ভোরে একুশে টেলিভিশন (ইটিভি) কার্যালয়ের নিচ থেকে চ্যানেলটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালামকে পর্নোগ্রাফীর একটি মামলায় গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। আমাদের কোর্ট রিপোর্টার জানান, মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস আব্দুস সালামকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করেন। আব্দুস সালামকে ৭ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আবেদন করেন। আব্দুস সালামের পক্ষের আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করেন। আইনজীবী ইউনুস আলী বিশ্বাস আব্দুস সালামের পক্ষে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক মেহের নিগার সুচনা আগামী ৮ জানুয়ারি রিমান্ড ও জামিনের শুনানির দিন ধার্য করেন। পরে আদালত আব্দুস সালামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। গত বছরের ১৭ নবেম্বর এক মহিলা ঢাকার সিএমএম আদালতে পর্নোগ্রাফী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। বিচারক মামলাটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় পাঠান। গত বছরের ২৬ নবেম্বর রাত সোয়া ৯টায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানা পর্নোগ্রাফী আইনে মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করে। মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা হচ্ছে, জহিরুল ইসলাম ইমরান, একুশে টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক মোঃ ইলিয়াস, শাহজালাল ও জাকির হোসেন। মামলার আর্জিতে বাদিনী বলেন, ১৯৯৯ সালের ২৯ নবেম্বর মামলার ৩ নম্বর আসামি শাহজালালের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই আসামি তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহারসহ নানা নির্যাতন শুরু করে। স্বামীর সূত্রধরে মামলার এক নম্বর আসামি জহিরুল হক ইমরানের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ইমরান তাঁকে ধর্ম বোন হিসেবে সম্মোধন করে। কিন্তু ইমরান অসৎ উদ্দেশে বিভিন্ন সময় তাঁর স্থির ও ভিডিও ছবি গোপন ক্যামেরায় ধারণ করে। এদিকে নেশাগ্রস্ত স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে পরবর্তীতে স্বামীকে ডিভোর্স দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা পরবর্তীতে অন্য মহিলার অশ্লীল ছবির সঙ্গে তার মুখম-ল সংযুক্ত করে তা ইন্টারনেট, ওয়েবসাইট, মোবাইল ফোন, ফেসবুক ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফী হিসেবে প্রচার করে। এখানেই শেষ নয়। তার মুখম-ল ব্যবহার করা অশ্লীল পর্নোগ্রাফী ছবিগুলো পরবর্তীতে তাঁর বাড়িতে, বাড়ির আশপাশে ও মানিকদি বাজারে পোস্টার আকারে ছাপিয়ে সেঁটে দেয় আসামিরা। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি আসামিরা। পরবর্তীতে আসামি ইমরান, তাঁর ডিভোর্স দেয়া স্বামী শাহজালাল ও জাকির হোসেন অপর আসামি একুশে টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোঃ ইলিয়াসের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফী ছবিগুলো গত বছরের ৬ নবেম্বর রাত সাড়ে ৯টায় একুশে টেলিভিশনের ‘একুশের চোখ’ নামক অনুষ্ঠানে সম্প্রচার করে।
×