ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শ্যালা নদী ও বেগম জিয়া

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ৮ জানুয়ারি ২০১৫

শ্যালা নদী ও বেগম জিয়া

চলতি সপ্তাহে সরকারের অনেক সিদ্ধান্তের ভেতর সব থেকে বেশি আলোচনায় এসেছে বেগম জিয়াকে ঘিরে নেয়া সিদ্ধান্ত। আর সব থেকে কম আলোচিত থেকেছে শ্যালা নদী দিয়ে পুনরায় যানবাহন চলাচলের সিদ্ধান্ত। দেশের স্বার্থ ও ভবিষ্যত বিচারে সরকারের সব থেকে ভুল সিদ্ধান্ত হয়েছে শ্যালা নদী দিয়ে পুনরায় যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেয়া। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য হলো সরকারের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিবাদ, প্রতিক্রিয়া বা আলোচনা কিছুই হচ্ছে না। এমনকি মধ্যরাতের অশ্বারোহীদের উচ্চকণ্ঠও এখানে নীরব। অথচ শ্যালা নদী দিয়ে একটি যানবাহন চলাচল করার অর্থই সুন্দরবনের জন্য কিছুটা ক্ষতি। দেশের দুর্ভাগ্য হলো সুন্দরবনের ক্ষতি থেকে খালেদার নাক জ্বালা করছে কিনাÑ তাই নিয়ে দেশের মিডিয়া, সুশীল সবাই উচ্চকণ্ঠ। তবে নির্মোহ সত্য উচ্চারণ করলে এটাই বলতে হয়, সুন্দরবন বাংলাদেশের সম্পদ আর খালেদা জিয়া বাংলাদেশের বোঝা। সুন্দরবন টিকে থাকা মানেই বাংলাদেশ সুন্দরভাবে টিকে থাকা। সুন্দরবনকে আমরা যত সুন্দরভাবে টিকিয়ে রাখতে পারব ততই আমরা সুন্দর বাংলাদেশে বাস করতে পারব। অন্যদিকে বেগম জিয়া যতদিন বাংলাদেশের রাজনীতিতে আছেন ততদিন বাংলাদেশের মানুষেরও শান্তি নেই, রাজনীতিতেও সুস্থিরতা আসবে না। অনেক আগেই এ কলামে লিখেছিলাম বাংলাদেশের সমস্যা বেগম জিয়া ও জামায়াতে ইসলামী। এক সুদর্শন সাংবাদিক বন্ধু এ নিয়ে ব্যক্তিগত আড্ডায় একটু ঠাট্টাও করেছিলেন। বলেছিলেন, তাহলে বাংলাদেশে আর কোন সমস্যা নেই- সমস্যা বেগম জিয়া ও জামায়াতে ইসলামী! আড্ডাটি পাঁচই জানুয়ারির নির্বাচনের কিছু আগে ছিল। যাক এখন সময় ভিন্ন তাই তাঁদের মতামতও বদলে গেছে। এটা সুলক্ষণ। এতদিনে ওইসব সাংবাদিক বন্ধুও অনেক বেশি উপলব্ধি করেছেন, আসলে বাংলাদেশের সমস্যা এখন এ দুটি। তবে যখন এ কলামে ‘বাংলাদেশের সমস্যা জামায়াতে ইসলামী ও খালেদা জিয়া’ শিরোনামে ওই লেখাটি লিখেছিলাম তার পরে ঘটনার কিছু পরিবর্তন হয়েছে। জামায়াতের শীর্ষ নেতারা এখন সবাই ফাঁসির রায়প্রাপ্ত আসামি। জেলা পর্যায়ের নেতারা অনেকে গা-ঢাকা দিয়েছে, অনেকে পাকিস্তান, ভারত, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ- আমেরিকায় চলে গেছে। এমনকি ব্যারিস্টার রেজ্জাকও দেশ ছেড়েছে। কিছু এলাকায় কিছু জামায়াত নেতাকর্মী স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ নেতাকে বিস্তর অর্থ নিয়ে তাদের শেল্টারে আছে। বাদবাকি জামায়াতের জঙ্গীরা এখন বেগম জিয়ার নেতৃত্বে বা তাঁর আঁচলে আছে। অন্যদিকে সুপ্রীম কোর্টে যুদ্ধাপরাধীদের আপীল নিষ্পত্তির গতি থেকে এটা অনুমান করা যায়- আগামী ’১৬ সালের মার্চের ভেতর সব আপীল নিষ্পত্তি ও তার রায় কার্যকর হবে। এর ভেতর ট্রাইব্যুনালে ‘সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর’ বিচারও আশা করা যায় শেষ হয়ে যাবে। তাই ’১৬ সালের মার্চের ভেতর সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় কার্যকর হলে এবং সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর বিচার শেষ হলে বাংলাদেশের রাজনীতি ভিন্ন চরিত্র নেবে। জামায়াতের চ্যাপ্টার শেষ না হলেও তার ধরন বদলে যাবে। জামায়াতে ইসলামীও এই সামান্য অংকটুকু ভালভাবে বুঝতে পেরেছে। এ অবস্থায় সকল জঙ্গী-জামায়াত বেগম জিয়ার আঁচলে। তাদের নেতা এখন বেগম জিয়া। এ কারণে এখন বাংলাদেশের সমস্যা একটিই, তা বেগম জিয়া। এমনকি তিনি এখন আর কোন রাজনৈতিক দলের নেতা নন, তিনি সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনতাবিরোধী ও জামায়াত জঙ্গীদের নেতা। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানকে তৎকালীন সামরিক গোয়েন্দা প্রধান মহব্বতজান বিএনপি নামক রাজনীতি দলটি গড়ে দিয়েছিলেন স্বাধীনতাবিরোধীদের পুনর্বাসনের বিষয়টি মাথায় রেখে। কিন্তু মহব্বতজান ও জিয়াউর রহমান মিলে বিএনপির একটি ওরস্যালাইন ক্যারেক্টার রেখেছিলেন। অর্থাৎ এক চিমটি মুক্তিযোদ্ধা, এক মুঠো অরাজনৈতিক লোকজন এবং এক গ্লাস স্বাধীনতাবিরোধী। এটা ভালভাবে ঘুঁটে বিএনপি তৈরি করা হয়েছিল। যে কারণে জিয়াউর রহমান রেখেছিলেন শাহ আজিজুর রহমানকে, আবার কফিল উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে বদরুদ্দোজা চৌধুরীকেও রেখেছিলেন, এমনকি ওবায়দুর রহমানও ছিলেন। কিন্তু এখন বিএনপির নেতৃত্বে কারা? মির্র্জা ফখরুলকে বিএনপির কোন কোন তরুণ কর্মী সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। কষ্ট লাগে ওইসব মেধাবী তরুণের জন্য। কারণ তারা জানে না মির্জা ফখরুল বিখ্যাত রাজাকার চখা মিয়ার সন্তান। অন্যদিকে একটি বামপন্থী লেবাস পরে প্রতিদিন দেশোদ্ধারে বাণী দেয় রুহুল কবীর রিজভী। আজও বৃহত্তর বগুড়া জেলার সেই সব মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে আছেন, তাঁদের কাছে শুনলে বর্তমান প্রজন্মের বিএনপির ওইসব তরুণ কর্মীরা জানতে পারবে রিজভীর বাবা কে? রিজভীর বাবা রাজাকার হিসেবে ১৯৭১ সালে জুলাই-আগস্ট মাসের দিকে পুলিশে চাকরি পায় এবং বগুড়ার একটি থানায় তার পোস্টিং হয়। ওই থানার পুলিশ (যার ভেতর রিজভীর বাবাও ছিল) ও রাজাকাররা মিলে সেখানকার একটি গ্রামে হামলা চালিয়ে অধিকাংশ পুরুষকে হত্যা করে, নারীদের শ্লীলতাহানি ঘটায় এবং তাদের সম্পদ লুট করে বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। ডিসেম্বরে ওই থানা মুক্ত হওয়ার পর, মুক্তিযোদ্ধারা ওই থানার সকল কোলাবরেটর পুলিশকে ধরে জীবিত অবস্থায় বস্তায় ভর্তি করে পাথর বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়। প্রায় সব কোলাবরেটর পুলিশ বস্তাবন্দী অবস্থায় পানিতে ডুবে মারা যায়; কিন্তু রিজভীর বাবা যে কোনভাবে হোক ওই বস্তা ছিঁড়ে বের হয়ে বেঁচে যেতে সক্ষম হয়। এর পর সে পরিবার নিয়ে দিনাজপুরের দিকে কোথাও পালিয়ে যায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর রাজাকাররা আবার স্বস্থানে ফিরে আসে। কিন্তু জনরোষের কারণে বগুড়া এলাকায় আর ফিরতে পারেনি রিজভীর বাবা। রাজশাহীতে সেটেল করে। এহেন রাজাকারের সন্তান আজ বিএনপির মূল মুখপাত্র। এখন কেউ বলতে পারেন, বাপ রাজাকার ছিল সেজন্য কি সন্তান দায়ী হবে? দায়ী হওয়ার কথা ছিল না। এ দেশে যদি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট না হতো, দেশ যদি মুক্তিযুদ্ধের ধারায় প্রবাহিত হতো, তাহলে অধিকাংশ রাজাকারের সন্তান কিন্তু রাজাকারের চিন্তাধারায় বড় হতো না। যেমন ইউরোপে যুদ্ধাপরাধীর সন্তান যুদ্ধাপরাধী হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য হলো রাজাকারের সন্তান রাজাকারই হয়েছে। তারা যাতে রাজাকারের চেতনায় বড় হয়, রাষ্ট্র তাদের সেই পরিবেশই দিয়েছে দীর্ঘকাল। একাত্তরের অবশিষ্ট রাজাকার, রাজাকারের সন্তান ও জামায়াত, বিএনপি ও এরশাদ মিলে পাকিস্তান সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় গত ৩৯ বছরের বেশি সময় ধরে গড়ে তোলা জঙ্গীরা এখন বেগম জিয়ার আঁচলে। বেগম জিয়া তাদেরই নেতা। যে কারণে দেখা যাচ্ছে, মির্জা ফখরুলকে যারা প্রেসক্লাবে আশ্রয় দেয় এরা কিন্তু সবাই গোলাম আযমের জানাজায় গিয়েছিল। এর থেকে স্পষ্ট হয় এদের মূল চরিত্রটি। অন্যদিকে এই গোষ্ঠীটি এ সত্য বুঝতে পারছে বাংলাদেশে তাদের পৃথিবী ছোট হয়ে আসছে। গণজাগরণ মঞ্চের পর থেকে বাংলাদেশের কোন তরুণ নতুন করে আর ছাত্রশিবিরে যোগ দিচ্ছে না। তরুণ সমাজের ভেতর মুক্তিযুদ্ধের গর্বটি ফিরে এসেছে এবং রাজাকারের প্রতি ঘৃণাটি জাগ্রত হয়েছে। যে ঘৃণা ১৯৭৫ সালের পর সমাজ থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা চলে রাষ্ট্রীয়ভাবে। এখনও মিডিয়ার বড় অংশ নিরপেক্ষতার নামে এই ঘৃণাকে জাগ্রত করার কাজে চরমভাবে বাধা দিয়ে চলেছে। অথচ একটি সমাজকে প্রগতির দিকে এগিয়ে যেতে হলে তাকে অবশ্যই খারাপের প্রতি ঘৃণা করতে শিখতে হবে। মওলানা ভাসানী বলতেন, ঘৃণাকে জাগ্রত কর। ঘৃণাকে জাগ্রত না করলে একটি মানুষ ভাল কাজ করবে কিভাবে? তার কাছে যদি মন্দের প্রতি ঘৃণা না থাকে তাহলে সে ভালকে ভাল হিসেবে চিনবে কিভাবে? ’৭১-এর গণহত্যার মূল কসাই ইয়াহিয়ার মন্ত্রী জে ডব্লিউ চৌধুরীর স্ত্রী দিলারা চৌধুরীকে যখন পত্রিকার পাতায়, টেলিভিশনের পর্দায় বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে, গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়, তখন কি মূলত মিডিয়ার এ অংশগুলো রাজাকারের প্রতি সমাজ থেকে ঘৃণা মুছিয়ে দেয়ার কাজ করে না? ইউরোপে কোথাও কি হিটলারের বা মুসোলীনের মন্ত্রিসভার কোন সদস্যের স্ত্রী ফ্যাসিস্টদের সপক্ষে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিল বা পায়? তাহলে বাংলাদেশের গণহত্যার মূল কসাই ইয়াহিয়ার মন্ত্রীর স্ত্রী কেন মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ পাবে? যারা এ সুযোগ দিচ্ছে তারাও কি অপরাধী নয়? সমাজের এই রাজাকার, জঙ্গী ও মিডিয়ার ওই অংশটি চলতি সপ্তাহ ব্যস্ত আছেÑ খালেদা জিয়াকে কেন ঢাকায় জনসভা করতে দেয়া হয়নি? অথচ এই লোকগুলো একবারের জন্যও প্রশ্ন তোলে না- ২০১৩ সালে খালেদা জিয়ার সুপ্রীম কমান্ডে যেভাবে পুড়িয়ে, বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে তারপরও তিনি জেলের বাইরে কেন? এমনকি সরকারেরও এ নিয়ে খুব বেশি দায়বোধ আছে বলে মনে হয় না। কারণ ২০০১ সালে খালেদা ও জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর যেভাবে সংখ্যালঘুদের হত্যা করা হয়েছিল, তা নিয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি ও তার রিপোর্ট- এখানেই যেন সব শেষ হয়ে গেল। আজ অবধি ওই কাজে সুপ্রীম কমান্ডের দায়ে খালেদার বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। আর ২০১৩ সালে এই গণহত্যার পর কিভাবে এই গণহত্যার হুকুমদাতা জেলের বাইরে থাকে- এটাই বড় প্রশ্ন। যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফকে নিয়ে আওয়ামী লীগের ভেতর ও বাইরে অনেক সমালোচনা। এই সমালোচনার কারণও সহজে বোঝা যায়। কারণ সৈয়দ আশরাফের তিনটি বড় দোষ- এক. তিনি সৎ; দুই. তিনি যোগ্য ও সত্য কথা বলেন; তিন. তিনি শেখ হাসিনার প্রতি নিবেদিত। যা হোক, এ প্রসঙ্গ এখানে নয়। তবে সৈয়দ আশরাফ লন্ডনে বসে একটি সত্য কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, বেগম জিয়া ‘গণতন্ত্রের মহারানী’। আসলে ‘গণতন্ত্রের মহারানী’ না হলে ৫ মে ২০১৩ হেফাজতের সারাদিনের তা-বের পর সন্ধ্যায় গোটা ঢাকা শহরের লোকদের হেফাজতের পাশে এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তাঁর কর্মীদের ওই তা-বে যোগ দিতে বলেন। তাঁকে ঢাকা শহরে আবার জনসভা করতে দেয়া হবে- এটা কোন্ গণতন্ত্রের ভেতর পড়ে? আমেরিকা বা গণতন্ত্রের পিতৃভূমি ইংল্যান্ডের কোন জঙ্গীরা সমাবেশ করে যদি হেফাজতের মতো ধ্বংসাত্মক কাজ করত আর তাদেরকে যদি কোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল সমর্থন করত, ওই নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কি সে দেশে রাজনীতি করতে পারত? তাছাড়া তাদের ৫ জানুয়ারির পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই দেশের ও বিদেশের পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়ে গেছে। তারা যে ঢাকা শহরে সংঘবদ্ধ হয়ে আরবান গেরিলা ওয়ার শুরু করার সুযোগ তৈরি করতে চেয়েছিল, তা তো তারেকের বক্তব্যেই প্রমাণ করে। তারেক ঢাকা শহরকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য লন্ডন থেকে লাদেনের কায়দায় ভিডিও বার্তা পাঠায়। রাজধানীকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার এ নির্দেশ কি আরবান গেরিলা ওয়ারের নির্দেশ নয়? আর এই যুদ্ধ কি আমরা পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও মিডল ইস্টে দেখছি না? এর পর বেগম জিয়াকে সেই কাজ শুরু করার সুযোগ দেয়া কোন্্ গণতন্ত্রের ভেতর পড়ে। গণতন্ত্রে কোথাও নেই যে, দেশে জঙ্গীদের গেরিলা যুদ্ধ করে ক্ষমতা দখল করার সুযোগ করে দিতে হবে। বরং গণতন্ত্র দেশের মানুষের নিরাপত্তা ও সম্পদ রক্ষার যতটা অধিকার সাংবিধানিকভাবে সরকারকে দেয় অন্য কোন পথে সরকার সে অধিকার পায় না। তাই এখনও দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেয়ার জন্য বেগম জিয়াকে সরকার যে সুযোগ দিচ্ছে, এটা সরকার ঠিক করছে না। যাঁরা রাষ্ট্র চালান তাঁরা আমাদের থেকে অনেক ভাল বুঝবেন। তবে গ্রামবাংলার প্রবাদগুলো অনেক অভিজ্ঞতার ফসল। এগুলো না ভোলাই উচিত। বিড়াল প্রথম রাতেই মারতে হয়। সরকার কিন্তু বিড়াল মারতে দেরি করছে। সরকারের তথ্যমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন খালেদাকে হত্যা মামলায় জেলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে। এটা লাঠি খুঁজে বেড়ানোর মতো। এখনও প্রথম রাত আছে। তাই লাঠি না খুঁজে বিড়ালটি মেরে ফেলাই ভাল। অবশ্য গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে একদল লোক বলছেন, বেগম জিয়ার জনসভায় লোক সমাগম দেখে সরকার ভীত। এখন ষোলো কোটি লোক দেশে। যখন সাড়ে সাত কোটি ছিল তখনও জনসভায় ওই লোক সমাগম এদেশের মানুষ দেখেছে। হাসানুল হক ইনুকে জিজ্ঞেস করলে তিনিই ভাল বলতে পারবেন। ১৯৭২-৭৩ সালে জাসদের জনসভায়ও এমন লোক হতো। কোথায় গেল সেই লোক? ওই রাজাকার, জামায়াত, জঙ্গী তখন জাসদের পতাকাতলে গিয়েছিল, এখন খালেদার আঁচলে। আর জামায়াত-জঙ্গীর জনসভা মানেই তো কুমিরের ছানা। একই ছানা বার বার দেখানো হয়। যারা চট্টগ্রামের জনসভায় যোগ দেয় ওরাই রাজশাহীর জনসভায় আসে। আর ঢাকায় ঢুকতে পারেনি বলেই কিন্তু খালেদার অফিসের দিকে, বেগম জিয়ার হাতে সর্বোচ্চ অপমানিত হওয়া বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও গোলাম আযমের জানাজায় যোগদানকারীরা ছাড়া কেউ যায়নি। [email protected]
×