ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাতক্ষীরায় জামায়াত নেতা পুলিশের তালিকায় পলাতক

হত্যা মামলার আসামি নিয়মিত তুলছেন বেতন

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ৮ জানুয়ারি ২০১৫

হত্যা মামলার আসামি নিয়মিত তুলছেন বেতন

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, সহিংসতাসহ একাধিক মামলার আসামি জামায়াত নেতা শাহাদাত হোসেন মাদ্রাসায় না যেয়েও গত এক বছর ধরে নিয়মিত সরকারী বেতন ভাতা তুলছেন। তার বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি প্রভাষক এবি মামুন হোসেন হত্যা মামলাসহ সাতক্ষীরা থানার নাশকতা, পুলিশের ওপর হামলা, গাছকাটাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৬টি মামলা রয়েছে। সাতক্ষীরা সদর থানা জামায়াতের সেক্রেটারি শাহাদাত হোসেন শহরের অদূরে বকচরা আহমাদিয়া দাখিল মাদ্রাসার মাওলানা শিক্ষক। পুলিশের দাবি তালিকাভুক্ত ওই আসামি শাহাদাত হোসেনকে খুঁজে পাচ্ছে না তারা। অথচ মাদ্রাসার হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করছেন এই জামায়াত নেতা। আর সরকারী ভাতাসহ বেতন তুলছেন বহাল তবিয়তে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা গদাঘাটা গ্রামের রহিম বক্স-এর ছেলে মাওলানা শাহাদাত হোসেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি। বকচরা মাদ্রাসার ওই শিক্ষক শাহাদাত হোসেন হত্যা, নাশকতা, সহিংসতাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার আসামি হলেও সে রয়েছে পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। গত এক বছর সে নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মাদ্রাসার শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন এমন দাবি প্রতিষ্ঠান প্রধানের। অথচ পুলিশের তালিকায় সে একজন পলাতক আসামি। সদর থানার ওসি গোলাম রহমানের দাবি, তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জামায়াত নেতা শাহাদাত হোসেন ছাত্রলীগ নেতা মামুন হত্যাসহ তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হওয়ায় গ্রেফতার এড়িয়ে মাদ্রাসায় আসা বন্ধ করে দেয়। এর মধ্যে হঠাৎ একদিন তিনি মাদ্রাসায় এসে অনুপস্থিত থাকা দিনগুলির হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে মাদ্রাসা ত্যাগ করেন। তার এ ধরনের অনিয়মের সহযোগিতা করেন জামায়াত কর্মী মাদ্রাসা শিক্ষক দাউদ আলী। পলাতক ওই মাদ্রাসা শিক্ষক শাহাদাতসহ সকল শিক্ষকদের বেতন ভাতায় স্বাক্ষর করেছেন মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি। বকচরা মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়কসম্পাদক এ্যাডভোকেট এসএম হাসানউল্লাহ। প্রতিমাসের বেতন ভাতার বিলে ওই আওয়ামী লীগ নেতা স্বাক্ষর করেন। মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি এ্যাডভোকেট এসএম হাসানউল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষক মাওলানা শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার বিষয়টি তিনি জানলেও পুলিশ কখনও তাকে ধরতে যায়নি বলে তিনি নিয়মিত বেতন বিলে স্বাক্ষর করেন। তবে ওই শিক্ষক শাহাদাত হোসেন মাদ্রাসায় নিয়মিত হাজির হন কিনা সে বিষয়ে মাদ্রাসা সুপারকে নিশ্চিত করতে বলেছেন। মাদ্রাসার সুপার মাওলানা দাউদ আলী সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষক শাহাদাত হোসেন নিয়মিত মাদ্রাসায় আসেন। তার বিরুদ্ধে মামলা আছে কিনা সেটা জানা প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাজ নয় বলে তিনি দাবি করেন।
×