ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সবাই মিলে কাজ করলে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করা সম্ভব ॥ আয়েশা খানম

প্রকাশিত: ০৬:১১, ৮ জানুয়ারি ২০১৫

সবাই মিলে কাজ করলে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করা সম্ভব ॥ আয়েশা খানম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সহিংসতা শিকার যেসব নারী সংসার ও সমাজ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায় তাদের নিয়েই আমরা গড়ে তুলেছি এই রোকেয়া সদন। আমরা চাই সমাজ, রাষ্ট্র, সরকার সকলে মিলে নির্যাতিত নারীদের পাশে এগিয়ে আসুক। সবাই এক সঙ্গে কাজ করলে আমরা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করতে পারব বলে মনে করি। রোকেয়া সদনের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার বিকেলে সেগুনবাগিচায় মহিলা পরিষদের সুফিয়া কামাল ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সংগঠনের সভাপতি আয়েশা খানম। তিনি বলেন, নির্যাতিত-নিপীড়িত নারীদের পাশে আর কেউ না থাকলেও এই বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নামের সংগঠনটি সারাজীবন থাকবে। ৩৫ বছর ধরে তিলে তিলে আমরা এই প্রতিষ্ঠনটি গড়ে তুলেছি। আমাদের এখানে স্থান পেয়েছে নির্যাতিত অনেক নারী ও শিশু। তাদের পড়ালেখার পাশাপাশি অন্য বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তাদের মধ্যে বৃদ্ধি করা হয় কর্মদক্ষতা। এখান থেকে অনেকেই পড়ালেখা ও কাজ শিখে বাইরে গিয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলেছে। বর্তমানেও নারী নির্যাতনের চিত্র ভয়াবহ। বিভিন্ন সংগঠন নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করার জন্য কাজ করলেও আশঙ্কাজনকভাবে মাত্রা বাড়ছে। এ মাসে মহিলা পরিষদের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে প্রায় ৫ হাজার নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫০ নারী ধর্ষণের শিকার। বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে নারী ও শিশুরা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের এই হিসাবই বলে দেয় আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র এখনও সৃষ্টি হয়নি। আজকে আমাদের এই কাজের সঙ্গে সমাজ, রাষ্ট্র, সরকার সবাইকে নজর দিতে হবে। আমাদের আরও অনেক পথ এগিয়ে যেতে হবে। একসঙ্গে কাজ করলেই এই পথ চলা সুগম হবে বলে মনে করেন তিনি। এই সদনের জন্য যারা অর্থ দিয়ে সহায়তা করছেন তাদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন্স নেটওয়ার্কের সভাপতি মিলি বিশ্বাস বলেন, নির্যাতিত নারীদের নিয়ে পেশাগত কারণেই অনেক কাজ করেছি। আমরা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে বুকে ধারণ করি। যেসব নারীরা যুদ্ধে শহীদ হয়ে আমাদের দেশে স্বাধীনতা ফিরে এনেছে তাদের প্রতি নির্যাতন বন্ধ করা আমাদের দায়িত্ব। তিনি বলেন, কাজ করতে গেলে অনেক আঁকাবাঁকা পথ পার করতে হয়। তবে এক সঙ্গে সেই পথও আরও সহজ হয়ে যায়। রোকেয়া সদনে আশ্রয় পাওয়া নারীদের জন্য আমি কাজ করার সুযোগ পেলে নিজেকে ধন্য মনে করব। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, টাঙ্গাইল শাড়ি কুটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুনিরা এমদাদসহ আরও অনেকে। আলোচনা শেষে সদনের ছাত্রীদের মধ্যে সেলাই প্রশিক্ষণের সনদ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
×