ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ॥ পরীক্ষার মুখে জ্যোতিষীরা

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ৯ জানুয়ারি ২০১৫

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ॥ পরীক্ষার মুখে জ্যোতিষীরা

নিজেকে রাজ জ্যোতিষী বলে দাবি করা সুদর্শন ও টাক মাথার ব্যক্তিটি বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে যতটা আগ্রহ দেখাবে, খুব কম মানুষই তেমন আগ্রহ দেখাবে। সুমনদাসা অভয়গুণবর্ধন নামে ওই জ্যোতিষী কয়েক দশক ধরে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের পাশে আছেন আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং আজীবন গুরু হিসেবে। ১৯৮০ সাল থেকে রাজাপাকসের সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমান দিনগুলোতে অভয়গুণবর্ধনের প্রধান কাজ হলো প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক কর্মকা-ের শুভক্ষণ চিহ্নিত করা। তার সাম্প্রতিক এক পরামর্শ হলো, সকাল ১০টা ৪৮ মিনিট প্রেসিডেন্টের জন্য শুভক্ষণ। এ ছাড়া তিনি আরও কিছু বিষয় বিবেচনা করছেন যে, প্রেসিডেন্ট তার মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশনারের ডান পাশ থেকে নাকি বাঁ পাশ থেকে জমা দিয়েছেন কিনা এবং তিনি তার বাড়ির সুসজ্জিত মন্দিরে পুজো করেছিলেন কিনা। জনপ্রিয়তা কিছুটা কমলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ার মতো কোন উপযুক্ত প্রার্থী দিতে পারবে না বিরোধী দল, এই বিবেচনায় দুই বছর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের ডাক দেন রাজাপাকসে। কিন্তু মৈত্রীপালা সিরিসেনার উত্থানের কথা ঘুনাক্ষরেও কল্পনা করতে পারেননি তিনি। অক্টোবরেও রাজাপাকসের মন্ত্রিসভার সদস্য এবং প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন সিরিসেনা। ছিলেন ক্ষমতাসীন দল শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু দেশকে স্বৈরতন্ত্রের পথে চালিত করা ও পরিবারতন্ত্র কায়েমের অভিযোগ তুলে নবেম্বরে রাজাপাকসের পক্ষত্যাগ করেন তিনি। সিরিসেনার দলত্যাগে ক্ষমতাসীন দলে দলত্যাগের হিড়িক শুরু হয়। পরে ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট সিরিসেনাকে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে। এতে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেহারা আমূল পাল্টে যায়। রাজাপাকসের অনেক উপদেষ্টাই এই নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক উদ্বিগ্ন। কারণ এটি প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। অভয়গুণবর্ধন প্রকাশ্যে বলেছেন, নির্বাচনের দিন বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টের জন্য অখ- সাফল্য বয়ে আনবে। যদিও তিনি বলেছেন, নির্বাচসের তারিখ ঠিক করার পেছনে তার কোন ভূমিকা নেই। শুভক্ষণ চিহ্নিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি খুবই বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ এবং ভুল সিদ্ধান্তে তার মতো জ্যোতিষীরও কর্মজীবন শেষ হয়ে যেতে পারে। রাজাপাকসেই জ্যোতিষী নিয়োগ দেয়া শ্রীলঙ্কার প্রথম নেতা নন। তার বেশিরভাগ বিরোধী নেতাই জ্যোতিষীর ভবিষ্যদ্বাণী মেনে চলেন। এ ছাড়া দেশটির রাজধানী কলম্বোতে এ নিয়ে প্রচুর গল্প রয়েছে। সাবেক ইউনাইটেড ন্যাশনাল ফ্রন্ট সরকারের এক উচ্চ-পদস্থ মন্ত্রী কুনজর এড়াতে মসলার ব্যাগ নিয়ে চলাফেরা করতেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমাদাসা কিছু সময়ের জন্য দেশের নামের বানান পরিবর্তন করে শ্রীলঙ্কা করেছিলেন। কারণ তাকে বলা হয়েছিল এটি তার জন্য শুভ। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস
×