ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপ- প্রস্তুত হচ্ছে টাইগাররা

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ৯ জানুয়ারি ২০১৫

বিশ্বকাপ- প্রস্তুত হচ্ছে টাইগাররা

মিথুন আশরাফ ॥ শেষ হয়ে গেছে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগ। শেষ হয়ে গেছে বিশ্বকাপের জন্য চূড়ান্ত দলও ঘোষণা করা। এখন আর কোন ভাবনাই নেই। শুধুই ভাবনায় বিশ্বকাপ। এ ভাবনায় সোমবার থেকে বিশ্বকাপের মিশনও শুরু করে দিচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। এদিন বিশ্বকাপের উদ্দেশে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলন শুরু করে দেবেন ক্রিকেটাররা। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য এবার দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলা। কোচ চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে নিজেই এমনটি জানিয়েছেন। এ জন্য বাংলাদেশকে কম করে হলেও তিনটি ম্যাচ জিততে হবে। বাংলাদেশের গ্রুপে রয়েছে আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, স্কটল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপ শুরু হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১৮ ফেব্রুয়ারি। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের খেলা স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এরপর এক এক করে ২৬ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কা, ৫ মার্চ স্কটল্যান্ড, ৯ মার্চ ইংল্যান্ড ও ১৩ মার্চ বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই করতে হবে বাংলাদেশকে। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী গ্রুপ পর্বে এক গ্রুপে ৭ দল থাকবে। গ্রুপ থেকে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ চারদল দ্বিতীয় রাউন্ডে অর্থাৎ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা করে নেবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে হলে কম করে হলেও ৩টি ম্যাচ জিততে হবে। আর ৪ ম্যাচ জিতলে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা নিশ্চিত হয়ে যাবে। বাংলাদেশের গ্রুপে দুটি দল পড়েছে অপেক্ষাকৃত দুর্বল। একটি দল আফগানিস্তান, আরেকটি স্কটল্যান্ড। এছাড়া দুই স্বাগতিক দল অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা শক্তিশালী দল। বাংলাদেশ আছে মাঝামাঝি পর্যায়ে। যে দলটি দুর্বলও নয়, আবার অধিক শক্তিশালীও নয়। তাই বাংলাদেশকে নিয়েই সবার ভাবনা থাকবে। এ সুযোগে যদি বাংলাদেশ কিছু একটা করে দেখাতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই এই গ্রুপ থেকে যে চারটি দল কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে পারে সেই দলগুলো সবারই বোধগম্যের মধ্যেই আছে। দল চারটিকে ধরা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ডকে শুরুতেই বাদের তালিকায় রাখা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ? এ দলটিকে নিয়ে যে সবারই ভাবনা থাকবে তা বোঝার জন্য খুব জ্ঞানী হতে হবে না। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী দলের এ চাপই বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হয়ে ধরা দিতে পারে। ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছে। সেবারও এক শ্রীলঙ্কায় জন্ম নেয়া ক্রিকেটারই বাংলাদেশের কোচ ছিলেন। তিনি ডেভ হোয়াটমোর। এবারও যখন বাংলাদেশ দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার স্বপ্ন দেখছে তখনও শ্রীলঙ্কায় জন্ম নেয়া এক কোচই বাংলাদেশের তত্ত্বাবধানে আছেন। তিনি চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে। যিনি কিনা আবার গত চার বছর অস্ট্রেলিয়াতেই ঘরোয়া দলগুলোর কোচের দায়িত্বে ছিলেন। তাই এ কোচ জানেন কিভাবে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে খেলতে হবে। এ বিষয়টিও বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচকই হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যদি আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ডকে হারানোর পর শক্তিশালী একটি দলকে হারাতে পারে বাংলাদেশ, তাহলে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা থাকবে। আর যদি কোনভাবে আরেকটি শক্তিশালী দলকে হারানো যায়, তাহলে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন সত্যিই হয়ে যাবে। পারবে বাংলাদেশ তা করে দেখাতে? বাংলাদেশ কোচ চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে আশাবাদি, ‘বিশ্বকাপে প্রতিটি দলই সমান গুরুত্বের অধিকারী। কাউকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। তাই এখানে প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। দল অনেক দূর যেতে পারে। তবে আমাদের আগে দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য চিন্তা করতে হবে। সেই পথেই আমরা এগোব।’ এ ভাবনার শুরু হয়ে যাচ্ছে সোমবারই। ২৪ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা দেশে পুরোদমে প্রস্তুত হয়ে নেবে। এরপর অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়া একাদশ নামে একটি দলের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। এ দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে সিডনিতে পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। নিজেদের অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের সঙ্গেও মানিয়ে নেবে। এরপর শুরু হয়ে যাবে দ্বিতীয় রাউন্ডে অর্থাৎ কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াই।
×