ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অবরোধের আরেক বলি!

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ১২ জানুয়ারি ২০১৫

অবরোধের আরেক বলি!

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ হরতাল ও অবরোধ চলার সময় যশোরের খাজুরা বাসস্ট্যান্ডে অগ্নিদগ্ধ সেই ট্রাকচালক মুরাদ হোসেন (৩০) পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে মারা গেছেন। রবিবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তিনি মারা যান। পার্কিংয়ে থাকা একটি বাসের হেলপারদের সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকাই নিরপরাধ ট্রাকচালক মুরাদের কাল হলো। নিহত মুরাদ হোসেন মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার কানুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ জানায়, ৭ জানুয়ারি ভোর রাতের দিকে বিশ্ব এজতেমায় যাওয়ার জন্য যশোর খাজুরা বাসস্ট্যান্ডের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্কিংয়ে থাকা একটি বাস এবং শিক্ষা বোর্ডের সামনে মার্কাস মসজিদ এলাকায় আরও একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। মুরাদ খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ট্রাক গ্যারেজে রেখে ময়মনসিংহ জ-১১-০০৪৬ নম্বরের বাসের হেলপারের সঙ্গে বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোর সাড়ে তিনটা থেকে চারটার দিকে হরতাল ও অবরোধকারীরা বাসে আগুন দিলে তিনি মারাত্মক দগ্ধ হন। বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা শ্রমিক সমিতির সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু জানান, মুরাদ দগ্ধ হলে তাকে প্রথমে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকালে মারা গেছেন। যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইনামুল হক জানান, বাসে আগুন ও ট্রাকচালক মুরাদ দগ্ধ করার ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেরুল হক সাবু, পৌর মেয়র মারুফুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমির আবদুর রশিদসহ ৪৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনের নামে মামলা করা হয়েছিল। মুরাদ মারা যাওয়ার পর এখন সেটা হত্যা মামলায় রূপান্তিত হবে। এদিকে, নিহত মুরাদের লাশ রবিবার বিকেলে তার গ্রামের বাড়ি মাগুরার মোহাম্মদপুরের কানুটিয়া গ্রামে এসে পৌঁছালে স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ। অপরদিকে, শ্রমিক মুরাদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে রবিবার দিনভর ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সাধারণ শ্রমিকদের দাবির মুখে তারা কর্মসূচী দিতে মিটিংয়ে বসবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা শ্রমিক সমিতির সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু।
×